Information & Comm Technology. Part-2

( Module: B; E & F )
ডেটা শ্রেণীবিন্যাসের প্রয়োজনীয়তা (Data classification)
ডেটার বিভিন্ন শ্রেণীবিন্যাস (Common forms of data)
ডাটা সেন্টার ও Tier-4 ডাটা সেন্টারের আবশ্যকীয় বিষয়সমূহ (Basic requirements of a Tier-4 Data Center)
স্যান বা স্টোরেজ এরিয়া নেটওয়ার্ক ও এর সুবিধা (Benefits of SAN Storage):
Raid ও RAID এর সুবিধা
ব্যাংকিং সিস্টেমের ডাটাবেজ ব্যাকআপ এর প্রয়োজনীয়তা
LAN ও WAN এর মধ্যে পার্থক্য
কম্পিউটার ক্লাস্টারিং; ব্যাংকের কম্পিউটার সিস্টেমে ক্লাস্টারিং ব্যবহারের কারণ
বিকল্প ডেলিভারি চ্যানেল; কয়েকটি উদাহরণ
স্ট্যান্ডঅলোন সিস্টেম ও ব্যাংক অটোমেশনে এর অসুবিধা:
মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেম বনাম কোর ব্যাংকিং সিস্টেম :
এজেন্ট ব্যাংকিং বনাম কোর ব্যাংকিং ব্যবস্থা
এজেন্ট ব্যাংকের সেবাসমূহ
ডেটা ব্যাকআপের সুবিধা
ইনক্রিমেন্টাল ব্যাকআপ ও ডিফারেনশিয়াল ব্যাকআপ এর পার্থক্য
আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির জন্য NDC’র গুরুত্ব
LAN-এ LAN কার্ডের প্রয়োজনীয়তা ও কার্যাবলী
রাউটিং নাম্বার ও এর তাৎপর্য
চেক প্রসেসিং সিস্টেম ও উচ্চ মূল্যের চেক নিষ্পত্তি
উচ্চ মূল্যের চেক নিষ্পত্তি ও সাধারণ চেক চেক নিষ্পত্তির মূল পার্থক্য
MICR এবং বারকোড এর মধ্যে পার্থক্য
নির্ভুল চেক প্রক্রিয়াকরণে MICR এনকোডিং-এর সুবিধা
বাংলাদেশে স্বয়ংক্রিয় ক্লিয়ারিং সিস্টেম তহবিল স্থানান্তর ত্বরান্বিতকরণ পদ্ধতি
চেক ট্রাঙ্কেশন সিস্টেম ও সনাতন চেক ক্লিয়ারিং সিস্টেমের তুলনায় চেক ট্রাঙ্কেশন সিস্টেমের সুবিধা
চেক জালিয়াতি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং এম আই সিআর ও অটোমেটেড ক্লিয়ারিং সিস্টেমের ভূমিকা
RTGS এবং BEFTN-এর মৌলিক পার্থক্য
ক্লাউড ব্যাংকিংয়ের সুবিধা এবং চ্যালেঞ্জ (advantage and challenges of cloud banking)
ব্যবসায়িক ধারাবাহিকতা (BCP) ও এর পদক্ষেপ
ব্যাঙ্কিং অটোমেশন ও সাইবার ঝুঁকি কমানোর উপায়
ক্রিপ্টোকারেন্সি ও ক্রিপ্টোকারেন্সি কিভাবে কাজ করে?
ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ন্ত্রণ অসম্ভব হওয়ার কারণ
জাতীয় ডিজিটাল মুদ্রার স্বকীয়তা
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ও ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান এ AI এর প্রভাব:
কিউ আর ভিত্তিক পেমেন্ট এর সুবিধা
ব্যাংকিং খাতে ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রসমূহ
ব্যাংকগুলিতে ERP (এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্ল্যানিং) সফটওয়্যার এর ভুমিকা
অনলাইন ওয়ালেট প্রোভাইডার ও এদের কার্যক্রমসমূহ
ফিশিং হামলা থেকে সুরক্ষিত থাকার উপায়
ম্যালওয়্যার ও ম্যালওয়ার প্রতিরোধকারী সফটওয়ার
এটিএম জ্যাকপটিং:
সাইবার হুমকিসমূহ কী কী
পেমেন্ট গেটওয়ে সফ্টওয়্যার ও এর কাজ



টীকাসমূহ:
নেটওয়ার্কিং- এ DMZ;      বাংলা কিউ আর;      সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং;      IVR ;      DNS ;
এটিএম জ্যাকপট;      API;      eKYC;      DOS এবং DDOS
BYOD;      ISO-27001 সার্টিফিকেশন;      PCI-DSS ;      ISMS ;
ফিনটেক ও টেকফিন;      RegTech      ডেটা ওয়্যারহাউজ      সুইফট
ডাটা রেপ্লিকেশন     




‘‘ আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ICT ’’ বাংলা ভাষায় সংক্ষিপ্ত প্রস্তুতি

 Module: B, E & F

ডেটা শ্রেণীবিন্যাসের প্রয়োজনীয়তা (Data classification):

ডেটা শ্রেণীবিন্যাস হল ডেটার প্রাসঙ্গিক ধরণ অনুযায়ী বিস্তৃতভাবে ডেটা সংগঠিত করার প্রক্রিয়া যাতে এটি আরও দক্ষতার সাথে ব্যবহার এবং সুরক্ষিত রাখা যায়

ডেটা সুরক্ষা: ডেটা শ্রেণীবিভাগ ডেটা সুরক্ষার অন্যতম প্রধান শর্ত কারণ, শুধুমাত্র ডেটার নিরাপত্তাকে কার্যকরভাবে অগ্রাধিকার প্রদান তখনই সম্ভব যখন কোন ডেটার গোপনীয়তা এবং ব্যবসার প্রতিযোগিতামূলক

info and Communication Tech. part-1
 Info & Comm. Techno- আরো পড়ুন

সুবিধার আপেক্ষিক গুরুত্বের উপর ভিত্তি করে ডেটা সনাক্ত সংগঠিত করা যায়

তথ্যের প্রকৃতি অনুধাবন: ডেটা শ্রেণীবিন্যাস গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি সংস্থাকে তারা কী ধরনের তথ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং সংরক্ষণ করছে তা বুঝতে সক্ষম করে ডেটা শ্রেণীবিন্যাসের মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞান একটি কোম্পানির ডেটার গুরুত্ব বা সংবেদনশীলতার উপর ভিত্তি করে তা সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া যায়

বিধিবদ্ধ নিয়ম পরিপালন: ডেটা শ্রেণীবিন্যাস নিয়ন্ত্রক সংস্থার নীতিমালা পরিপালন সহজতর করে এবং সমস্ত তথ্যের জন্য যথাযথ স্তরের নিরাপত্তা প্রয়োগ করা যায় তথ্যটি আর্থিক নাকি জনস্বাস্থ্য সম্পর্কিত সংশ্লিষ্ট সেক্টর অনুযায়ী নীতিমালা পরিপালন সহজতর হয় আইনি প্রয়োজনীয়তা পূরণ করা যায়, অডিটের সময় বা কোনো নীতি লঙ্ঘনের পরে হিমশিম খাওয়ার প্রয়োজন না হয়।

পরিচালনগত দক্ষতা বৃদ্ধি: খরচ সাশ্রয় করতে পারে ডেটা শ্রেণীবদ্ধ করার মাধ্যমে, একটি কোম্পানি ডেটা এনক্রিপশন এবং উচ্চতর নিরাপত্তার সাথে তার মূল্যবান তথ্য রক্ষায় সম্পদকে ব্যবহার করতে পারে কম-ঝুঁকির ডেটা কম ব্যয়বহুল পদ্ধতি ব্যবহার করে পরিচালনা করা যেতে পারে

সিদ্ধান্ত গ্রহণ: ডেটা শ্রেণীবিভাগ উত্তম সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করে। শ্রেণীবিভক্ত ডেটা কোনটি উচ্চ-অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বা সময়-সংবেদনশীল তার প্রেক্ষাপট জানতে সাহায্য করে। এর মাধ্যমে নির্বাহীগন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মনোযোগ দিতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, একটি সংকটকালীন সময়ে  "জরুরি প্রোটোকল" গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে রাখা হয়,  সাধারণ ফাইলের স্তূপে যাতে হারিয়ে না যা

ডেটার শ্রেণীবিন্যাস (Common forms of data):

পাবলিক ডেটা: এটি পাবলিক ডোমেনের তথ্য কোন আইনি সীমাবদ্ধতা ছাড়াই জনসাধারণের তথ্য অবাধে ব্যবহার এবং বিতরণ করা যায় এর প্রধান উদাহরণ হল সর্বজনীনভাবে প্রকাশিত তথ্য সংস্থাগুলি বাজার গবেষণার জন্য ব্যবহার করতে পারে যেমন- কোম্পানির URL এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল, সোশ্যাল মিডিয়া বিজ্ঞাপন, কোম্পানির ফ্লায়ার এবং ব্রোশার৷, প্রথম এবং শেষ নাম, কোম্পানির নাম এবং প্রতিষ্ঠাতা বা নির্বাহী তথ্য, জন্ম তারিখ বা অন্তর্ভুক্তির তারিখ, ঠিকানা, ফোন নম্বর এবং ইমেল ঠিকানা, কাজের বিবরণ এবং অবস্থান পোস্টিং, প্রেস রিলিজ, সাংগঠনিক চার্ট, লাইসেন্স প্লেট নম্বর ইত্যাদি

অভ্যন্তরীণ ডেটা: অভ্যন্তরীণ ডেটা হল এমন তথ্য যা কোনও সংস্থার কর্মচারী, ঠিকাদার, যোগাযোগ এবং কার্যকলাপ সংক্রান্ত অভ্যন্তরীণ তথ্য যেমন- মেমো, ইমেল বার্তা এবং কর্পোরেট নির্দেশিকা ধরণের তথ্য অনুমোদন ছাড়াই প্রকাশ করা হলে, এটি কোম্পানির সামান্যতম ক্ষতির কারণ হতে পারে ফলে, আভ্যন্তরীণ তথ্যের কম নিরাপত্তার প্রয়োজন যেমন- কর্মচারীদের ফোন নম্বর, অফিস মেমো অভ্যন্তরীণ ডেটা কারণ এগুলি শুধুমাত্র কোম্পানির কর্মচারীরা দেখতে পারে ব্যবসায়িক পরিকল্পনা এবং কৌশল, অভ্যন্তরীণ ইমেল বা মেমো, কোম্পানির ইন্ট্রানেট প্ল্যাটফর্ম, বাজেট স্প্রেডশীট এবং রাজস্ব অনুমান, সংরক্ষণাগারভুক্ত ফাইল, ইন্টারনেট প্রোটোকল (আইপি) ঠিকানা

সংরক্ষিত ডেটা (Restricted): এটি সরকারী-তালিকাভুক্ত ডেটা বা রোগীর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্যের মতো সংবেদনশীল তথ্য যার জন্য আইনি বিধিনিষেধ থাকে এই ডেটা শুধুমাত্র সংস্থার অনুমোদিত কর্মকর্তাদের কাছে উপলব্ধ এবং এই তথ্য সর্বোচ্চ যত্ন সহকারে পরিচালনা করা প্রয়োজন কারণ এই তথ্যের সাথে ভাবমুর্তি জড়িত, এমনকি যদি এটি ভুল হাতে পড়ে তাহলে জাতীয় নিরাপত্তার উপর প্রভাবও পড়ে যেমন-        

আর্থিক রেকর্ড: একটি কোম্পানির সমস্ত বাস্তব এবং অস্পর্শর্নীয় সম্পদ সম্পর্কে তথ্য সংরক্ষিত, কঠোর গোপনীয় চুক্তি দ্বারা সুরক্ষিত ডেটা, সরকারি ট্যাক্স সংক্রান্ত তথ্য

সংবেদনশীল ডেটা (Sensitive): এগুলি একটি সংস্থার জন্য অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয় এবং এতে সুরক্ষিত স্বাস্থ্য তথ্য (PHI) এবং মেধা সম্পত্তি অন্তর্ভুক্ত

গোপনীয় ডেটা (Confidential): ডেটা বিভাগটি সংবেদনশীল থেকে কিছুটা কম, যদিও এখনও গোপনীয় কারণ এতে কোম্পানির অভ্যন্তরীণ কাজকর্ম যেমন- কর্মচারী পর্যালোচনা এবং সরবরাহ চেইন এর তথ্য যেমন- বিক্রেতা চুক্তি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যেমন- কর্মচারী রেকর্ড, রাষ্ট্র দ্বারা ইস্যু করা শনাক্তকরণ কার্ড নম্বর বা চালকের লাইসেন্স নম্বর, যানবাহন শনাক্তকরণ নম্বর, চিকিৎসা এবং স্বাস্থ্য রেকর্ড, বীমা প্রদানকারীর তথ্য, ক্রেডিট কার্ড নম্বর, পিন নম্বর এবং মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ, কার্ডধারীর অ্যাকাউন্ট এবং লেনদেনের তথ্য, ক্রেডিট কার্ডের ম্যাগনেটিক স্ট্রিপের উপাদান, আর্থিক রেকর্ড, বায়োমেট্রিক শনাক্তকারী, যেমন আঙ্গুলের ছাপ

ব্যক্তিগত ডেটা (Private): এটি মূলত ব্যক্তিগত তথ্য যা আইন দ্বারা সুরক্ষিত হতে পারে বা নাও হতে পারে, যেমন সংবেদনশীল বা -সংবেদনশীল ব্যক্তিগতভাবে সনাক্তযোগ্য তথ্য (PII) যেমন- ব্যক্তিগত যোগাযোগের তথ্য, যেমন ইমেল ঠিকানা এবং ফোন নম্বর, গবেষণা তথ্য বা অনলাইন ব্রাউজিং ইতিহাস, ইমেল ইনবক্স বা সেলফোন বিষয়বস্তু, কর্মচারী বা ছাত্রর পরিচয়পত্রের নম্বর

মালিকানা (proprietary): এগুলি হল ব্যবসার গোপনীয়তা, সাংগঠনিক প্রক্রিয়া এবং কোম্পানির মালিকানা সংক্রান্ত তথ্য যা একটি ব্যবসাকে একটি প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা দেয়

https://www.indeed.com/career-advice/career-development/data-classification-types

 

ডাটা সেন্টার (Data Center):

একটি নির্দিষ্ট জায়গায় অনেকগুলো ডাটা জমা হওয়ার যে প্রক্রিয়া তাকে সাধারণ অর্থে ডাটা সেন্টার বলেতবে ইন্টারনেট দুনিয়ায় ডাটা সেন্টার অর্থ আরও বেশি তাৎপর্যপূর্ণ। 

ডাটা সেন্টার হলো একটি নির্দিষ্ট বিল্ডিং বা কক্ষ যেখানে সার্ভার ও ইন্টারনেট কানেকশনের মাধ্যমে ডাটা সংরক্ষণ ও পরিচালনা করা হয়। একটি ডাটা সেন্টারে অনেক গুলো সার্ভার থাকে যারা নিজেদের মধ্যে নেটওয়ার্ক দ্বারা সংযুক্ত থাকে। আমরা যখন ব্রাউজারে কোন URL প্রবেশ করি তখন তা ইন্টারনেটের মাধ্যমে ডাটা সেন্টারে প্রবেশ করে এবং সেখানে প্রসেস হয়ে আবার আমাদের কাছে চলে আসে। 

ইন্টারনেটে আমরা যে সার্ভিসই ব্যবহার করিনা কেন, তা সাধারনত পরিচালিত হয় একটি কেন্দ্রীয় অবস্থান থেকে, আর এই কেন্দ্রীয় অবস্থানটির নাম ডাটা সেন্টার ডাটা সেন্টার হল ইন্টানেটের একটি নির্দিষ্ট স্টেশন। যেসব স্টেশন থেকে আমাদের কাছে ডাটা সার্ভ করা হয়। এখানে একেকটি ডাটাকে বিভিন্ন রূপে প্রদান করা হয়, ডাটাকে প্রোসেস করা হয়, কন্ট্রোল করা হয়, একটা নেটওয়ার্কেরর ভেতর দিয়ে নানা জায়গায় পরিবহন করানো হয়। একটি ডাটা সেন্টারের সবগুলো কম্পিউটার আবার যুক্ত থাকে একটি প্রধান কম্পিউটার এর সাথে।

 

ডাটা সেন্টারের আবশ্যকীয় বিষয়সমূহ (Basic requirements of a Tier-3 & 4 Data Center):

ডেটা সেন্টারের স্তর (tiers) হল সার্ভারসমূহের তথ্য এবং উপাত্তর ধারণ ও কার্যক্ষমতার জন্য প্রতিষ্ঠিত র‌্যাংকিংএকটি ব্যবহারকৃত ডেটা সেন্টারের  স্তর দিয়ে এর নিরাপত্তার মাত্রা এবং এক বছরের মধ্যে কতটা সম্ভাব্য ডাউনটাইম পাওয়া যায় তা নির্দেশ করে। ডাটা সেন্টার 4 ধরণের হয়: তা হল স্তর-১ থেকে স্তর-৪ পর্যন্ত।

স্তর-৩ এর প্রয়োজনীয়তা (Requirements of Tier-3):

সকল টিয়ার 1 এবং টিয়ার 2 এর প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে (অতিরিক্ত বা Redundant সাইট অবকাঠামোর সক্ষমতা সরঞ্জাম যা কর্মীদের অফলাইনে না নিয়ে বিদ্যমান সেটআপে কাজ করতে সহায়ক

আইটি সরঞ্জামসমূহ সার্ভ করার জন্য  একাধিক স্বাধীন বন্টন পথ থাকবে

সমস্ত আইটি সরঞ্জাম অবশ্যই দ্বৈত পাওয়ার-চালিত এবং সাইটের আর্কিটেকচারের টপোলজির সাথে সম্পূর্ণ সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে

সমসাময়িকভাবে রক্ষণাবেক্ষণযোগ্য সাইট অবকাঠামো ৯৯.৯৮২%  আপটাইমের নিশ্চয়তা দেয়

 

স্তর-:

Tier-৪ ডেটা সেন্টার হলো Uptime Institute দ্বারা সংজ্ঞায়িত ডেটা সেন্টার শ্রেণীবিভাগের সর্বোচ্চ স্তর। এটি সর্বোচ্চ স্তরের ফল্ট টলারেন্স (ফল্ট সহনশীলতা) এবং রিডানডেন্সি (অতিরিক্ত ব্যাকআপ সিস্টেম) প্রদান করে, যাতে সর্বোচ্চ আপটাইম এবং নির্ভরযোগ্যতা নিশ্চিত করা যায়। নিচে একটি Tier-৪ ডেটা সেন্টারের মৌলিক আবশ্যকীয় বিষয়সমূহ উল্লেখ করা হলো:

১. নিরবিচ্ছিন্ন সেবা (Fault Tolerance):

 - রিডানডেন্সি: সমস্ত কম্পোনেন্ট (পাওয়ার, কুলিং, নেটওয়ার্ক ইত্যাদি) সম্পূর্ণ রিডানডেন্ট হতে হবে, যেমন N+১ বা ২N+১ কনফিগারেশন।

  -আইসোলেশন: একটি সিস্টেমে সমস্যা হলে তা অন্য সিস্টেমকে প্রভাবিত করবে না। এর জন্য রিডানডেন্ট সিস্টেমগুলোর মধ্যে বাহ্যিকভাবে পৃথকীকরণ থাকতে হবে।

 ২. বৈদ্যুতিক অবকাঠামো

   - ডুয়াল পাওয়ার ফিড: দুটি স্বাধীন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন পথ থাকতে হবে। রিডানডেন্ট UPS সিস্টেম থাকতে হবে যাতে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হলে নিরবিচ্ছিন্ন পাওয়ার সরবরাহ নিশ্চিত হয়।

   - ব্যাকআপ জেনারেটর: বৈদ্যুতিক শক্তি সংরক্ষণ এবং বিতরণ সুবিধার জন্য পর্যাপ্ত জ্বালানি সহ অন-সাইট জেনারেটর থাকতে হবে, যা দীর্ঘ সময় ধরে চলতে পারে।

 ৩. কুলিং সিস্টেম: একাধিক স্বাধীন কুলিং সিস্টেম থাকতে হবে যাতে সর্বোত্তম তাপমাত্রা বজায় থাকে। রক্ষণাবেক্ষণ বা ব্যর্থতার সময়েও কুলিং সিস্টেম চালু থাকতে হবে।

 ৪. নেটওয়ার্ক কানেক্টিভিটি

   - বিভিন্ন ফাইবার পাথ: ভৌগোলিকভাবে পৃথক, একাধিক নেটওয়ার্ক সংযোগ থাকতে হবে।

   - রিডানডেন্ট নেটওয়ার্ক সরঞ্জাম: সুইচ, রাউটার এবং অন্যান্য নেটওয়ার্ক ডিভাইস সম্পূর্ণ রিডানডেন্ট হতে হবে।
৫. বাহ্যিক নিরাপত্তা:  কঠোর অ্যাক্সেস নিয়ন্ত্রণ, যেমন বায়োমেট্রিক অথেনটিকেশন এবং ২৪/৭ নজরদারি ব্যবস্থা (অ্যাক্সেস কন্ট্রোল) পরিবেশগত নিয়ন্ত্রণের জন্য অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা, পানি রোধি এবং ভূমিকম্প থেকে সুরক্ষা ব্যবস্থা

 ৬. ৯৯.৯৯৫% আপটাইম গ্যারান্টি: Tier-৪ ডেটা সেন্টার বছরে সর্বোচ্চ ২৬.৩ মিনিট এর বেশি ডাউনটাইম নয় যা ৯৯.৯৯৫% সমমানের আপটাইম প্রাপ্যতার নিশ্চয়তা দেয়

 ৭. রক্ষণাবেক্ষণ: রক্ষণাবেক্ষণ বা মেরামতের সময়ও অপারেশন বিঘ্নিত হবে না। প্রতিটি কম্পোনেন্টের ব্যাকআপ থাকতে হবে যাতে রক্ষণাবেক্ষণের সময়ও অপারেশন চলতে পারে।

 ৮. কমপ্লায়েন্স এবং সার্টিফিকেশন: Uptime Institute-এর Tier-মানদন্ড পূরণ করতে হবে। এবং ISO ২৭00, SOC , PCI DSS এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক মান পূরণ করতে হবে।

 ৯. ডিজাস্টার রিকভারি: ব্যবসায়ের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করতে ভিন্ন ভৌগোলিক অবস্থানে সেকেন্ডারি ডেটা সেন্টার থাকতে হবে। নিয়মিত ব্যাকআপ এবং অফ-সাইট লোকেশনে ডেটা রেপ্লিকেশন।

 ১০. প্রসারণনযোগ্যতা বা স্কেলেবিলিটি: অবকাঠামো অবশ্যই ভবিষ্যতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটানোর জন্য সক্ষম হতে হবে, যাতে পারফরম্যান্স বা নির্ভরযোগ্যতা বিঘ্নিত না হয়।

 

এই প্রয়োজনীয়তাগুলো পূরণ করে একটি Tier- ডেটা সেন্টার সর্বোচ্চ নির্ভরযোগ্যতা নিশ্চিত করে, যা মিশন-ক্রিটিকাল অ্যাপ্লিকেশন এবং যেসব প্রতিষ্ঠান ডাউনটাইম承受 করতে পারে না তাদের জন্য উপযুক্ত। সমস্ত শীতলীকরণ সরঞ্জাম স্বাধীনভাবে দ্বৈত পাওয়ার-চালিত, চিলার সহ গরম, বায়ুচলাচল এবং এয়ার   কন্ডিশনার (HVAC) সিস্টেম

 

issues needs trade-off while designing Data Center and DRS:

ডেটা সেন্টার এবং ডিআরএসের মধ্যে দূরত্বের জন্য নিম্নলিখিত দুটি সমস্যা বিবেচনা করা প্রয়োজন :

i)       যদি দীর্ঘ দূরত্ব বেছে নেওয়া হয়, তাহলে DRS-এর ব্যবস্থাপনা, ডার্ক ফাইবারের প্রাপ্যতা এবং প্রয়োজনীয় লেটেন্সির প্রাপ্যতা সম্পর্কিত সমস্যা হতে পারেএছাড়াও সিঙ্ক রেপ্লিকেশন সম্ভব নাও হতে পারে

ii)       যদি স্বল্প দূরত্ব (অন্তত 0 কিমি) বেছে নেওয়া হয় এবং যদি একই সিসমিক অঞ্চলের মধ্যে পড়ে তবে ভূমিকম্প, হারিকেনের মতো বিপর্যয় উভয় স্থানকে ধ্বংস করতে পারে।

 

 

ব্যাংকিং সিস্টেমের ডাটাবেজ ব্যাকআপ এর প্রয়োজনীয়তা:

ব্যাকআপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি আর্থিক কার্যক্রমের নিরাপত্তা, নির্ভরযোগ্যতা এবং ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করে। ব্যাংকগুলো বিপুল পরিমাণ সংবেদনশীল তথ্য পরিচালনা করে, যেমন গ্রাহকের অ্যাকাউন্টের বিবরণ, লেনদেনের রেকর্ড, ঋণের তথ্য এবং নিয়ন্ত্রক নথিপত্র। ব্যাকআপ কেন জরুরি তা এখানে ব্যাখ্যা করা হলো:

 

. তথ্য হারানো রোধ: হার্ডওয়্যার ব্যর্থতা, সফটওয়্যার ত্রুটি, মানুষের ভুল বা র‍্যানসমওয়্যারের মতো সাইবার আক্রমণের কারণে ব্যাংকের তথ্য হারিয়ে যেতে পারে। নিয়মিত ব্যাকআপ নিশ্চিত করে যে হারানো তথ্য দ্রুত পুনরুদ্ধার করা যায়, যাতে উত্তোলন, জমা বা অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মতো পরিষেবাগুলোতে ব্যাঘাত কম হয়।

 

. ব্যবসার ধারাবাহিকতা: ব্যাংকিং কার্যক্রম রিয়েল-টাইম তথ্যের উপর নির্ভর করে। একটি শক্তিশালী ব্যাকআপ সিস্টেম ব্যাংককে প্রাকৃতিক বা প্রযুক্তিগত বিপর্যয় থেকে দ্রুত পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করে, যাতে গ্রাহক পরিষেবা অবিচ্ছিন্ন থাকে এবং আস্থা বজায় থাকে।

 

. বিধিমালা পরিপালন: ব্যাংকিং একটি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত শিল্প, যেখানে সারবেইনস-অক্সলি আইন, জিডিপিআর বা স্থানীয় আর্থিক নিয়মের মতো আইন প্রতিষ্ঠানগুলোকে অডিট এবং রিপোর্টিংয়ের জন্য তথ্য সুরক্ষিত ও সংরক্ষণ করতে বাধ্য করে। ব্যাকআপ নিশ্চিত করে যে ঐতিহাসিক রেকর্ড সংরক্ষিত থাকে এবং প্রয়োজনে পাওয়া যায়।

 

. সাইবার হুমকি থেকে সুরক্ষা: আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে লক্ষ্য করে সাইবার আক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যাকআপ একটি নিরাপত্তা জাল হিসেবে কাজ করে। যদি ম্যালওয়্যার দ্বারা তথ্য এনক্রিপ্ট বা নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে একটি নিরাপদ, আপডেটেড ব্যাকআপ ব্যাংককে মুক্তিপণ না দিয়ে বা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য না হারিয়ে সিস্টেম পুনরুদ্ধার করতে দেয়।

 

. গ্রাহকের আস্থা ও সুনাম: গ্রাহকের তথ্য হারানো বা রেকর্ড না থাকার কারণে লেনদেন প্রক্রিয়া করতে না পারলে ব্যাংকের সুনাম ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। নির্ভরযোগ্য ব্যাকআপ নিরাপত্তা ও নির্ভরযোগ্যতার প্রতি প্রতিশ্রুতি দেখায়, যা গ্রাহকদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়ায়।

 

. জালিয়াতি সনাক্তকরণ ও পুনরুদ্ধার: ব্যাকআপে সংরক্ষিত লেনদেনের লগ এবং অ্যাকাউন্ট তথ্য জালিয়াতির তদন্ত ও সমাধানে সাহায্য করতে পারে। তথ্যের সাথে কাটাছেঁড়া করা হলে, ব্যাকআপ একটি পরিচ্ছন্ন রেফারেন্স পয়েন্ট প্রদান করে যা অসঙ্গতি চিহ্নিত করতে সহায়ক।

 

. ডাটা আপগ্রেডিং: ডেটা আপগ্রেডিংয়ের জন্য ডেটা ব্যাকআপ খুব কাজে লাগে। আপগ্রেড করার সময় সিস্টেমে ত্রুটি, ডেটা হারানো বা অসঙ্গতি হতে পারে। ব্যাকআপ থাকলে পুরনো ডেটা দ্রুত পুনরুদ্ধার করা যায়, যাতে আপগ্রেড ব্যর্থ হলেও কোনো ক্ষতি না হয় এবং কার্যক্রম চলমান থাকে।

 

. প্রাকৃতিক দুর্যোগ: প্রাকৃতিক দুর্যোগে ডেটা ব্যাকআপ খুব কাজে লাগে। ভূমিকম্প, বন্যা বা ঝড়ের মতো দুর্যোগে সার্ভার বা হার্ডওয়্যার নষ্ট হতে পারে। ব্যাকআপ থাকলে হারানো ডেটা পুনরুদ্ধার করা যায়, যাতে ব্যবসা বা পরিষেবা দ্রুত পুনরায় চালু করা সম্ভব হয়।

সংক্ষেপে, ব্যাংকিংয়ে ডাটাবেস ব্যাকআপ একটি অত্যাবশ্যক নিরাপত্তা জাল, যা কার্যক্রমের ঝুঁকি থেকে সুরক্ষা দেয়, আইনি সম্মতি নিশ্চিত করে এবং প্রতিষ্ঠান ও তার গ্রাহকদের তথ্য হারানোর পরিণতি থেকে রক্ষা করে।

 

স্যান বা স্টোরেজ এরিয়া নেটওয়ার্ক ও এর সুবিধা (Benefits of SAN Storage):

(SAN- Storage Area Network) হচ্ছে এক ধরনের ডেডিকেটেড নেটওয়ার্ক, যা ল্যান (লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক) এবং ওয়ান (ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক) থেকে আলাদা। এটি বিভিন্ন সার্ভারের সাথে সংযুক্ত ডাটা স্টোরেজ রিসোর্সকে যুক্ত করে শুধু স্টোরেজ ডিভাইসের একটি পৃথক নেটওয়ার্ক তৈরি করে। স্যানের জন্য বিশেষ ধরনের হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার ব্যবহৃত হয়। স্যান হার্ডওয়্যার এমনভাবে তৈরি, যা বিভিন্ন স্টোরেজ মিডিয়ার মধ্যে দ্রুতগতিতে ডাটা ট্রান্সফার করতে পারে। আর স্যান সফটওয়্যারের কাজ হচ্ছে স্যান কনফিগারেশন, ব্যবস্থাপনা এবং পর্যবেক্ষণ করা। অপর কথায় স্যান হচ্ছে একটি উচ্চগতির সাব-নেটওয়ার্ক, যা ব্লক লেভেলের মাধ্যমে বিভিন্ন স্টোরেজ ডিভাইসকে যুক্ত করে। স্টোরেজ ডিভাইস হচ্ছে একটি যন্ত্র, যা ডাটা স্টোর করে। এটি এক বা একাধিক ডিস্ক নিয়ে গঠিত হতে পারে।

স্যানের সুবিধাবলি :

স্যানের প্রধান সুবিধাবলির মধ্যে রয়েছে এটি সার্ভারের ন্যূনতম ক্যাপাসিটি ব্যবহার করে অভীষ্ট লক্ষ্যে দ্রুততার সাথে ডাটা পৌঁছে দেয়, স্টোরেজ ডিভাইসে একাধিক হোস্ট বা কমপিউটারের এক্সেস সুবিধা প্রদান করে, ডাটা স্টোরেজ গতি বৃদ্ধির জন্য স্বতন্ত্র অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারের সুযোগ দেয়, স্টোরেজ ডিভাইসের অ্যাক্সেস সুবিধা আরও সম্প্রসারিত হয়, ডাটা ব্যবস্থাপনা সহজ হয়, কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণের কারণে সার্ভারে প্রয়োজনমতো স্টোরেজ ডিভাইস যুক্ত করা যায়। স্যানের প্রাথমিক সুবিধাগুলো নিম্নরূপ:

প্রাপ্যতা :

কোনো একটি ফাইল বা ডাটার কপি সার্ভারে থাকলে তা একটি হোস্ট বা কমপিউটার বিভিন্ন রুট বা পথে অ্যাক্সেস করতে পারে।

বিশ্বস্ততা :

নির্ভরযোগ্য ডাটা পরিবহনের কারণে ডাটার ত্রুটি রেট কমে আসে এবং কোনো কারণে ডাটায় সমস্যা  দেখা দিলে তা নিজ থেকে পুনরুদ্ধার হয়।

প্রসারণযোগ্যতা (Scalibility) 

নেটওয়ার্কে চাহিদা অনুযায়ী একের পর এক সার্ভার ও স্টোরেজ ডিভাইস যোগ করা যায়। এতে এক ডিভাইস অন্যের ওপর নির্ভর করে না

দক্ষতা :

স্যানে ব্যবহৃত প্রটোকল ফাইবার চ্যানেলের ব্যান্ডউইডথ হচ্ছে ১০০ MBPS এবং এর ওভারহেড ব্যয়ও কম। এটি স্টোরেজ মিডিয়াকে নেটওয়ার্ক ইনপুট/আউটপুট (I/O) থেকে পৃথক রাখে।

কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনা :

এটি কেন্দ্রীয়ভাবে ব্যবস্থাপনা করা হয় বিধায় এ সিস্টেমে কোনো ত্রুটি সহজেই শনাক্ত হয় এবং তা তাৎক্ষণিকভাবে সংশোধন করা যায়।

ব্যয় সাশ্রয়ী:

যেহেতু স্যানে প্রয়োজনমাফিক স্টোরেজ ডিভাইস যোগ করা যায় এবং কেন্দ্রীয়ভাবে ব্যবস্থাপনা করা হয়, এ কারণে প্রতি গিগাবাইট ডাটা স্টোরেজ খরচ অনেকখানি কমে আসে।

 

Raid:

RAID এর পূর্ণ রূপ Redundant Array of Independent (or inexpensive) Disks.  Raid হল ডেটা সুরক্ষা করার জন্য একাধিক হার্ড ডিস্ক বা সলিড-স্টেট ড্রাইভ (SSDs) একই ডেটা বিভিন্ন জায়গায় সংরক্ষণ করার একটি উপায় এটা এজন্য করা হয় যাতে একটা হার্ডডিস্ক নষ্ট হয়ে গেলেও অন্য আরেকটি থেকে ডেটা নিয়ে পূর্বাবস্থায় ফেরত আসা যায় মুলত RAID ব্যবহার করে ডেটা সুরক্ষা বা protection এর জন্য

RAID একাধিক ডিস্কে ডেটা স্থাপন করে এবং ইনপুট/আউটপুট (I/O) অপারেশনগুলিকে ভারসাম্যপূর্ণ উপায়ে ওভারল্যাপ করার সুযোগ দেয়, কর্মক্ষমতা উন্নত করে রেইড অ্যারে অপারেটিং সিস্টেমে (OS) একটি একক লজিক্যাল ড্রাইভ হিসাবে দৃশ্যমান থাকে RAID ডিস্ক মিররিং বা ডিস্ক স্ট্রিপিং এর কৌশল ব্যবহার করে মিররিং একাধিক ড্রাইভে অভিন্ন ডেটা অনুলিপি করে স্ট্রিপিং পার্টিশন একাধিক ডিস্ক ড্রাইভে ডেটা ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করে প্রতিটি ড্রাইভের স্টোরেজ স্পেস ৫১২ বাইটের সেক্টর থেকে কয়েক মেগাবাইট পর্যন্ত ইউনিটে বিভক্ত

 

RAID এর সুবিধা:

Ø  কম দামের ডিস্কগুলি প্রচুর পরিমাণে ব্যবহার করার ফলে ব্যয় সাশ্রয় হয়

Ø  একাধিক হার্ড ড্রাইভ এর ব্যবহার একটি একক হার্ড ড্রাইভের কর্মক্ষমতা উন্নত করতে সক্ষম করে

Ø  সিস্টেম ক্র্যাশের পরে কনফিগারেশনের উপর নির্ভর করে কম্পিউটারের গতি এবং নির্ভরযোগ্যতা বৃদ্ধি পায়

Ø  একটি একক ড্রাইভের তুলনায় RAID এর সাথে রিড এবং রাইট দ্রুত সম্পাদন করতে পারে এর কারণ হল একটি ফাইল সিস্টেম বিভক্ত হয়ে সমগ্র ড্রাইভ বিতরণ করা হয় যা একই ফাইলে একসাথে কাজ করে

Ø  RAID বর্ধিত সহজলভ্যতা এবং স্থায়ীত্ব রয়েছে মিররিংয়ের সাথে, দুটি ড্রাইভে একই ডেটা থাকতে পারে, এটি নিশ্চিত করে যে একটি ব্যর্থ হলে অন্যটি কাজ চালিয়ে যাবে

 

LAN এবং WAN এর মধ্যে পার্থক্য:

 

দিক

LAN (লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক)

WAN (ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক)

ভৌগোলিক পরিধি

ছোট, স্থানীয় এলাকা কভার করে (যেমন বাড়ি, অফিস)।

বড় ভৌগোলিক এলাকা জুড়ে থাকে (যেমন শহর, দেশ)।

গতি

উচ্চ গতি (১০0 Mbps থেকে Gbps বা তার বেশি)।

তুলনামূলক কম গতি (কয়েক Mbps থেকে ১০0 Mbps)

খরচ

স্থাপন এবং রক্ষণাবেক্ষণ কম ব্যয়বহুল।

বেশি ব্যয়বহুল, কারণ বিস্তৃত অবকাঠামো প্রয়োজন।

মালিকানা

একটি সংস্থা বা ব্যক্তির মালিকানাধীন এবং পরিচালিত।

একাধিক পরিষেবা প্রদানকারী বা সত্তার সাথে জড়িত।

প্রযুক্তি/প্রোটোকল

ইথারনেট, Wi-Fi ইত্যাদি ব্যবহার করে।

MPLS, ফ্রেম রিলে, ATM ব্যবহার করে এবং ISP এর উপর নির্ভর করে।

লেটেন্সি

কম লেটেন্সি, কারণ দূরত্ব কম।

বেশি লেটেন্সি, কারণ দূরত্ব বেশি এবং একাধিক নোড জড়িত।

রক্ষণাবেক্ষণ

ব্যবস্থাপনা এবং রক্ষণাবেক্ষণ সহজ।

ব্যবস্থাপনা এবং রক্ষণাবেক্ষণ জটিল।

সুরক্ষা

সীমিত পরিসরের কারণে সুরক্ষিত করা সহজ।

সুরক্ষিত করা চ্যালেঞ্জিং; VPN, এনক্রিপশন প্রয়োজন।

উপরের আলোচনা থেকে LAN এবং WAN এর মধ্যে মূল পার্থক্যগুলি স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়

 কম্পিউটার ক্লাস্টারিং কি?

কম্পিউটার ক্লাস্টারিং হল একাধিক কম্পিউটার (যেগুলোকে নোড বলা হয়) একসাথে যুক্ত করে একটি একক সিস্টেম হিসেবে কাজ করার প্রক্রিয়া। এই ক্লাস্টারগুলি পারফরম্যান্স, প্রাপ্যতা এবং নির্ভরযোগ্যতা উন্নত করার জন্য ডিজাইন করা হয়। অন্যভাবে বলা যায় যে, কম্পিউটার ক্লাস্টার হলো এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে অনেকগুলো কম্পিউটারকে একত্রে সংযুক্ত করে একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয়। এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে  কম্পিউটারগুলো একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে পারে এবং একসাথে কাজ করতে পারে। ফলে, তারা  একটি একক ইউনিট হিসেবে,  অনেক বেশি শক্তিশালী কম্পিউটারের মতো কাজ করে। বিভিন্ন ধরনের ক্লাস্টার রয়েছে, যেমন: হাই-পারফরম্যান্স ক্লাস্টার(HPC), হাই-অ্যাভেইলেবিলিটি ক্লাস্টার(HA), লোড-ব্যালান্সিং ক্লাস্টার, ফেইলওভার ক্লাস্টার ইত্যাদি।

কম্পিউটার ক্লাস্টার যেভাবে কাজ করে:

🔹 নোড (Nodes): প্রতিটি কম্পিউটারের নিজস্ব CPU, মেমোরি, ও স্টোরেজ থাকে।

🔹 ক্লাস্টার নেটওয়ার্ক: নোডগুলো দ্রুতগতির নেটওয়ার্ক (যেমন: Ethernet, InfiniBand) দ্বারা সংযুক্ত থাকে।

🔹 ক্লাস্টার ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার: কাজগুলো বিভিন্ন নোডের মধ্যে বণ্টন করে (যেমন: Kubernetes, Apache Hadoop, OpenMPI)

🔹 শেয়ার্ড স্টোরেজ: কিছু ক্লাস্টারে ডিস্ট্রিবিউটেড স্টোরেজ ব্যবহৃত হয় যাতে ডেটা সর্বদা অ্যাক্সেসযোগ্য থাকে।

🔹 ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্ট: কাজগুলো বিভিন্ন নোডে ভাগ হয়ে দ্রুত সম্পন্ন হয়

 

 ব্যাংকের কম্পিউটার সিস্টেমে ক্লাস্টারিং কেন ব্যবহারের কারণ:

ব্যাংকের কম্পিউটার সিস্টেমে ক্লাস্টারিং বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণে ব্যবহৃত হয়:

 

. উচ্চ প্রাপ্যতা এবং নির্ভরযোগ্যতা:

   - ব্যাংকের সিস্টেমগুলি ২৪/৭ চালু থাকা প্রয়োজন। ক্লাস্টারিং নিশ্চিত করে যে একটি নোড ফেইল হলে অন্য নোড সেটির কাজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে গ্রহণ করে, ডাউনটাইম কমিয়ে এবং সার্ভিসের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করে।

 

. লোড ব্যালান্সিং:

   - ব্যাংকিং সিস্টেমগুলি প্রায়শই একই সময়ে অনেক লেনদেন পরিচালনা করে। ক্লাস্টারিং লোডকে একাধিক সার্ভারে বিতরণ করে, যাতে কোনো একটি সার্ভার বাধাগ্রস্ত না হয়ে যায় এবং লেনদেনগুলি দক্ষতার সাথে প্রসেস করা যায়।

 

. ডিজাস্টার রিকভারি:

   - ক্লাস্টারিং একটি শক্তিশালী ডিজাস্টার রিকভারি সমাধান প্রদান করে। হার্ডওয়্যার এর ব্যর্থতা বা অন্যান্য বিঘ্ন ঘটলে, ক্লাস্টার দ্রুত কাজগুলি কার্যকর নোডে রিডাইরেক্ট করতে পারে, ডেটা ইন্টিগ্রিটি এবং সার্ভিস এর ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করে।

 

. প্রসারণক্ষমতা (scalability):

   - ব্যাংক যত বড় হয়, লেনদেন এবং ডেটার পরিমাণও তত বাড়ে। ক্লাস্টারিং ব্যাংকগুলিকে আরও নোড যোগ করে তাদের আইটি অবকাঠামো পরিবর্ধন করে, যাতে পারফরম্যান্স কম্প্রোমাইজ না করে বর্ধিত চাহিদা মেটানো যায়।

 

. উন্নত কার্যক্ষমতা

   - একাধিক নোডে কাজ বিতরণ করে, ক্লাস্টারিং ব্যাংকিং অ্যাপ্লিকেশনের পারফরম্যান্স উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করতে পারে, যার ফলে লেনদেন প্রসেসিং দ্রুত হয় এবং গ্রাহক অভিজ্ঞতা উন্নত হয়।

 

. ডেটা রিডানডেন্সি এবং ইন্টিগ্রিটি:

   - ক্লাস্টারিং প্রায়শই নোড জুড়ে ডেটা রেপ্লিকেশন জড়িত, নিশ্চিত করে যে একটি নোড ফেইল হলে ডেটা হারায় না। এই রিডানডেন্সি আর্থিক ডেটার নিরাপত্তা এবং অখণ্ডতা বজায় রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

 

সংক্ষেপে, ব্যাংকের সিস্টেমে কম্পিউটার ক্লাস্টারিং উচ্চ প্রাপ্যতা, নির্ভরযোগ্যতা, স্কেলেবিলিটি এবং পারফরম্যান্স নিশ্চিত করার জন্য অপরিহার্য, যা অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক এবং নিয়ন্ত্রিত ব্যাংকিং শিল্পে গ্রাহকদের আস্থা এবং সন্তুষ্টি বজায় রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

 

Alternative Delivery Channel (ADC):

বিকল্প ডেলিভারি চ্যানেল বা Alternative Delivery Channel(ADC) হল ব্যাংকিং এবং আর্থিক সেবা প্রদানের আধুনিক বা ডিজিটাল পদ্ধতি, যেখানে শারীরিকভাবে শাখায় যাওয়ার প্রয়োজন হয় না। এটি ডিজিটাল প্রযুক্তি, অটোমেশন, এবং সেলফ-সার্ভিস অপশন ব্যবহার করে গ্রাহকদের আরও সুবিধাজনক ও সহজলভ্য সেবা প্রদান করে। উদাহরণগুলির মধ্যে রয়েছে:

 

. অনলাইন ব্যাংকিং: ওয়েবসাইট বা অ্যাপের মাধ্যমে ব্যাংকিং সেবা।

. মোবাইল ব্যাংকিং: মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে লেনদেন।

. এটিএম: নগদ উত্তোলন বা জমার জন্য স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র।

. পিওএস টার্মিনাল: কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট সিস্টেম।

. ইউএসএসডি ব্যাংকিং: মোবাইল কোড (*১২৩#) ব্যবহার করে ব্যাংকিং।

. কল সেন্টার: ফোনের মাধ্যমে গ্রাহক সেবা।

. সোশ্যাল মিডিয়া: ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদির মাধ্যমে সেবা।

. চ্যাটবট/এআই: স্বয়ংক্রিয় গ্রাহক সহায়তা।

 

ADC-এর লক্ষ্য হল গ্রাহক অভিজ্ঞতা উন্নত করা, খরচ কমানো এবং দূরবর্তী বা অবহেলিত অঞ্চলে সেবা পৌঁছে দেওয়া। ডিজিটাল যুগে এগুলির গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে

 

কেন্দ্রীয় ডাটাবেসের প্রবর্তন ব্যাংকগুলিকে ই-ব্যাংকিং শুরু করতে সহায়তা করে। ই-ব্যাংকিং বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ব্যাংকিং চ্যানেলকে অন্তর্ভুক্ত করে, যেমন এটিএম, পিওএস, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, এসএমএস এবং অ্যালার্ট ব্যাংকিং, ই-কমার্স, এম-কমার্স এবং কল সেন্টার। এই ইলেকট্রনিক চ্যানেলগুলির মাধ্যমে, ব্যাংকগুলি তাদের গ্রাহকদের বিভিন্ন ব্যাংকিং সেবা প্রদান করতে পারে। এই ইলেকট্রনিক চ্যানেলগুলিকে সম্মিলিতভাবে অল্টারনেটিভ ডেলিভারি চ্যানেল (ADC) বলা হয়।

 

স্ট্যান্ড-অ্যালোন সিস্টেম

স্ট্যান্ড-অ্যালোন সিস্টেম কম্পিউটিং-এ একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ কম্পিউটার বা ডিভাইস যা কোনো নেটওয়ার্ক বা বাহ্যিক সিস্টেমের সাথে সংযুক্ত না হয়ে স্বাধীনভাবে কাজ করে। এটি স্থানীয়ভাবে সংরক্ষিত সফ্টওয়্যার, ডেটা এবং সম্পদ ব্যবহার করে সমস্ত কার্য সম্পাদন করে এবং ইন্টারনেট অ্যাক্সেস, ক্লাউড পরিষেবা বা দূরবর্তী সার্ভারের উপর নির্ভর করে না। উদাহরণগুলির মধ্যে অফলাইনে ব্যবহার করা ব্যক্তিগত কম্পিউটার, এটিএম বা স্ট্যান্ডঅলোন মোডে অপারেট করা গেমিং কনসোল অন্তর্ভুক্ত। স্ট্যান্ড-অ্যালোন সিস্টেমগুলি নেটওয়ার্ক  বিচ্ছিন্নতার কারণে উন্নত নিরাপত্তা এবং সহজ সুবিধা প্রদান করে, তবে এগুলির সীমাবদ্ধতাও রয়েছে, যেমন বাহ্যিক রিসোর্স, রিয়েল-টাইম আপডেট এবং অন্যান্য সিস্টেমের সাথে ডেটা শেয়ার বা সহযোগিতা করতে অক্ষমতা। এই সিস্টেমগুলি এমন পরিবেশের জন্য আদর্শ যেখানে নেটওয়ার্ক সংযোগ অপ্রয়োজনীয় বা নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করে।

 

ব্যাংক অটোমেশনে স্ট্যান্ডঅলোন সিস্টেম এর অসুবিধা:

স্ট্যান্ড-অলোন সিস্টেম হলো একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ কম্পিউটার সিস্টেম বা সফটওয়্যার অ্যাপ্লিকেশন যা অন্য সিস্টেম, নেটওয়ার্ক বা প্ল্যাটফর্মের সাথে সংযুক্ত বা ইন্টিগ্রেট না হয়ে স্বাধীনভাবে কাজ করে। এটি আলাদাভাবে নির্দিষ্ট কাজ বা ফাংশন সম্পাদন করে এবং বাহ্যিক সিস্টেমের সাথে ডেটা বা রিসোর্স শেয়ার করে না।

 

স্ট্যান্ডঅ্যালোন ব্যাংক অটোমেশন পদ্ধতি, যেখানে সিস্টেমগুলি একে অপরের সাথে সংহত না হয়ে স্বাধীনভাবে কাজ করে, এর বেশ কিছু অসুবিধা রয়েছে:

 

. সীমিত ডেটা শেয়ারিং: স্ট্যান্ডঅ্যালোন সিস্টেমগুলিতে প্রায়শই আন্তঃপরিচালনার অভাব থাকে, যার ফলে বিভিন্ন বিভাগ বা কার্যালয় জুড়ে ডেটা শেয়ার করা কঠিন হয়ে পড়ে। এটি অদক্ষতা এবং ডেটা সাইলো (একই সংগঠনে বিচ্ছিন্ন ডাটা ভান্ডার) তৈরি করতে পারে।

. উচ্চ পরিচালন খরচ: একাধিক স্ট্যান্ডঅ্যালোন সিস্টেম বজায় রাখা আরও ব্যয়বহুল হতে পারে কারণ এতে ডুপ্লিকেটেড প্রচেষ্টা, পৃথক রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজনীয়তা এবং প্রতিটি সিস্টেমের জন্য বিশেষায়িত কর্মী নিয়োগের প্রয়োজন হয়।

 

. বিচ্ছিন্ন গ্রাহক অভিজ্ঞতা: সিস্টেম সংগঠিতকরন ছাড়া, গ্রাহকরা বিচ্ছিন্ন সেবা অনুভব করতে পারেন, যেমন একই তথ্য একাধিকবার প্রদান করতে হয় বা বিভিন্ন চ্যানেল থেকে অসঙ্গতিপূর্ণ প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়

 

. নিম্ন দক্ষতা: স্ট্যান্ডঅ্যালোন সিস্টেমগুলিতে প্রায়শই ডেটা স্থানান্তর বা তথ্য মেলানোর জন্য ম্যানুয়াল হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হয়, যা প্রক্রিয়াগুলিকে ধীর করে দেয় এবং ত্রুটির ঝুঁকি বাড়ায়।

 

. সীমিত ম্প্রসারণ ক্ষমতা: স্ট্যান্ডঅ্যালোন সিস্টেমগুলি ব্যবসার ক্রমবর্ধমান চাহিদা বা নতুন প্রযুক্তির সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য সহজে পরিবর্ধনযোগ্য নাও হতে পারে, যা পরিবর্তনশীল বাজার চাহিদার সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতা সীমিত করে।

 

. নিরাপত্তা ঝুঁকি বৃদ্ধি: একাধিক স্ট্যান্ডঅ্যালোন সিস্টেম জুড়ে আলাদা আলাদা নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে, যা দুর্বলতা এবং ডেটা ফাঁস হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।

 

. রিপোর্টিং এবং অ্যানালিটিক্সে অসুবিধা: যখন ডেটা বিচ্ছিন্ন সিস্টেম জুড়ে ছড়িয়ে থাকে, তখন বিশদ রিপোর্ট তৈরি বা অ্যানালিটিক্স করা কঠিন হয়ে পড়ে, যা সিদ্ধান্ত গ্রহণে বাধা সৃষ্টি করে।

 

. রিয়েল-টাইম আপডেটের অভাব: স্ট্যান্ডঅ্যালোন সিস্টেমগুলি রিয়েল-টাইম আপডেট প্রদান নাও করতে পারে, যা লেনদেন প্রক্রিয়াকরণ বা গ্রাহক তথ্য আপডেটে বিলম্ব ঘটায়।

 

9. জটিল কমপ্লায়েন্স ব্যবস্থাপনা: একাধিক স্ট্যান্ডঅ্যালোন সিস্টেম নিয়ে কাজ করার সময় নিয়ন্ত্রক প্রয়োজনীয়তা পূরণ করা আরও জটিল হয়ে পড়ে, কারণ প্রত্যেকটির ইউনিটের আলাদা কমপ্লায়েন্স প্রয়োজন হতে পারে।

 

১০. উদ্ভাবনী দক্ষতা হ্রাস: স্ট্যান্ডঅ্যালোন সিস্টেমগুলি নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ বা তৃতীয় পক্ষের পরিষেবাগুলির সাথে সুসংহত করার ক্ষমতা সীমিত, যা উদ্ভাবন এবং প্রতিযোগিতামূলক বাজারে পিছিয়ে পড়ে

 

১১. নতুন প্রযুক্তি গ্রহণে বাধা: ইন্টিগ্রেশনের অভাবে ইনোভেশন সীমিত।

 

এই চ্যালেঞ্জগুলি কাটিয়ে উঠতে, ব্যাংকগুলি প্রায়শই সংহত সিস্টেমের দিকে এগিয়ে যায় যা নিরবিচ্ছিন্ন ডেটা প্রবাহ, উন্নত দক্ষতা এবং উত্তম গ্রাহক অভিজ্ঞতা সক্ষম করে।

 

মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেম  বনাম কোর ব্যাংকিং সিস্টেম :

 

বিষয়

কোর ব্যাংকিং সিস্টেম

মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেম

হিসাব নম্বর

প্রচলিত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর (একটি চেক ডিজিট সহ)

মোবাইল নম্বর + একটি চেক ডিজিট (ঐচ্ছিক)

গ্রাহক নিবন্ধন

ব্যাংক কর্মকর্তা দ্বারা শাখায় নিবন্ধন

এজেন্ট দ্বারা মোবাইল নম্বর ইনপুট, ব্যাংক/তৃতীয় পক্ষ দ্বারা ডেটা এন্ট্রি, এবং কেওয়াইসি যাচাই করার পর ব্যাংক অফিসার দ্বারা অনুমোদন

যোগাযোগ মাধ্যম

WAN (ফাইবার অপটিক, রেডিও লিংক, VSAT ইত্যাদি)

মোবাইল নেটওয়ার্ক (এসএমএস/USSD) এবং/অথবা WAN/ইন্টারনেট

পোস্টিং ডিভাইস

কম্পিউটার

মোবাইল ফোন এবং/অথবা কম্পিউটার

ক্যাশ-ইন

শাখায় ব্যাংকের টেলার দ্বারা

ব্যাংকের টেলার দ্বারা শাখায় এবং এজেন্ট দ্বারা আউটলেটে

ক্যাশ-আউট

শাখায় ব্যাংকের টেলার দ্বারা এবং এটিএমে অটোমেশন

ব্যাংকের টেলার দ্বারা শাখায়, এজেন্ট দ্বারা আউটলেটে এবং এটিএমে অটোমেশন

নির্দিষ্ট সময়ে লেনদেনের সংখ্যা

অল্প কয়েকটি

অনেক বেশি

প্রতি লেনদেনের পরিমাণ

বড়

ছোট

পরিধি

শাখার আশেপাশে গ্রাহকের কাছে পৌঁছাতে পারে

সারা দেশজুড়ে সকল শ্রেণীর কাছে

 

এজেন্ট ব্যাংকিং বনাম কোর ব্যাংকিং ব্যবস্থা:

গ্রাহক নিবন্ধন:

এজেন্ট ব্যাংকিং এর গ্রাহক নিবন্ধন  করা হয়: পিওএস ডিভাইস/ডেস্কটপ অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে এজেন্টদের ইনপুট, এজেন্ট/টেলার দ্বারা কেওয়াইসি এন্ট্রি, এবং কেওয়াইসি যাচাই করার পর এজেন্ট ব্যাঙ্কিং অফিসে ব্যাঙ্ক অফিসার দ্বারা অনুমোদন এর মাধ্যমে

-   কোর ব্যাংকিং গ্রাহক নিবন্ধন করা হয় শাখায় ব্যাংক অফিসার দ্বারা

 

যোগাযোগ মাধ্যম:

এজেন্ট ব্যাংকিং পিওএস এর জন্য: সুরক্ষিত মোবাইল ডেটা

ডেস্কটপ অ্যাপের জন্য: সুরক্ষিত ভিপিএন সম্বলিত ইন্টারনেট এর মাধ্যমে যোগাযোগ সাধিত হয়

 

পোস্টিং ডিভাইস:

এজেন্ট ব্যাংকিং এর পোস্টিং ডিভাইস বায়োমেট্রিক পিওএস এবং পিসি/ল্যাপটপ

-   কোর ব্যাংকিং এর পোস্টিং সম্পাদন হয় কম্পিউটারের মাধ্যমে

ক্যাশ-ইন:

এজেন্ট ব্যাংকিং এর ক্যাশ-ইন হয় এজেন্ট আউটলেটে

-   কোর ব্যাংকিং ক্যাশ-ইন করা হয় শাখায় ব্যাঙ্কের টেলার দ্বারা

ক্যাশ-আউট:

এজেন্ট ব্যাংকিং এর ক্ষেত্রে ক্যাশ-আউট হয় এজেন্ট শাখায় ব্যাংকের টেলার দ্বারা, এজেন্ট আউটলেটে এটিএম-

-   কোর ব্যাংকিং এর ক্ষেত্রে ক্যাশ-আউট হয় শাখায় ব্যাংকের টেলার দ্বারা এটিএম এর মাধ্যমে

 

একটি সময়ের মধ্যে লেনদেনের সংখ্যা:

এজেন্ট ব্যাংকিং প্রকৃত লেনদেনের সংখ্যা আকার বৃহৎ

-   কোর ব্যাংকিং লেনদেনের সংখ্যা সীমিত

 

প্রতি লেনদেনের পরিমাণ:

  এজেন্ট ব্যাংকিং এর লেনদেনের পরিমাণ মাঝারি

-   কোর ব্যাংকিং এর লেনদেনের পরিমাণ বড় অঙ্কের হয়

গ্রাহকের নাগাল:

  এজেন্ট ব্যাংকিং এর গ্রাহক সারাদেশে বিস্তৃত

-   কোর ব্যাংকিং এর মূল সুবিধাভোগী গ্রাহক শাখার চারপাশে অবস্থিত

 

এজেন্ট ব্যাংকের সেবাসমূহ (Agent Banking services in Bangladesh):

. ছোট অঙ্কের নগদ জমা উত্তোলন, তহবিল স্থানান্তর: বাংলাদেশ ব্যাংক কতৃক সীমা নির্ধারন করা থাকবে

.  আন্তঃ বৈদেশিক রেমিটেন্স পরিশোধ                  ৩. ছোট অঙ্কের ঋণ সুবিধা মঞ্জরী ও ঋণের কিস্তি আদায় ৪.   ইউটিলিটি বিল গ্রহণ সুবিধা                            . সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ভাতা পরিশোধ    

.  ব্যালেন্স অনুসন্ধান                                                 ৭) নগদ গ্রহণ ও প্রদান                      

. ব্যাংক বিবরণী সরবরাহ                  ৯. ঋণ মঞ্জুরীর পরবর্তীতে ঋণের তদারকি ও দেখভাল করা

১০. গ্রাহকের কাছ থেকে হিসাব খোলার  আবেদন,  ঋণের কাগজপত্র সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াকরণ

. ইন্সুরেন্স এর প্রিমিয়াম আদায়                                       ১৩) ক্লিয়ারিং এর চেক সংগ্রহ করা

১২. বেতন, পেনশন ও সামাজিক নিরাপত্তা সুবিধার টাকা পরিশোধ          

 

 

ডেটা ব্যাকআপের সুবিধা:

তথ্যের নিরাপত্তা:

নির্ভরযোগ্য একীভূত ডেটা ব্যাকআপ পরিষেবা ক্ষতিকারক কার্যকলাপ থেকে ডেটা সুরক্ষায় সহায়তা করতে পারে। বেশিরভাগ ডেটা ব্যাকআপ সিস্টেমে এনক্রিপশন অন্তর্ভুক্ত থাকে যাতে ব্যাক-আপ করা ডেটা চুরি এবং তাতে অনুপ্রবেশ থেকে রক্ষা করা যায়।

সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনা:

হারিয়ে যাওয়া ডেটা পুনরুদ্ধার করা চাপযুক্ত এবং সময়সাপেক্ষ। ডেটা ব্যাকআপ পরিচালনার সহজ ও ঝামেলামুক্ত । ফলে এটি অসামঞ্জস্যপূর্ণ এবং অনিয়মিত ডেটা পুনরুদ্ধার এড়ায়।

নির্ভরযোগ্য পুনউৎপাদন (Reliable Reproduction):

ডেটার ব্যাকআপ পুনরুদ্ধার করার পরে সঠিক ডেটা পুনরুৎপাদন নিশ্চিত করে যা সিস্টেম অপারেশনকে আরও নির্ভরযোগ্য এবং দক্ষ করে তোলে।

খরচ ব্যবস্থাপনা:

একটি শক্তিশালী ডেটা ব্যাকআপ এবং পুনরুদ্ধারের সমাধান কর্মীদের খরচ কমিয়ে উল্লেখযোগ্য খরচ সাশ্রয় করতে পারে। এইভাবে ডেটা ব্যাকআপ খরচ কমাতে সাহায্য করতে পারে।

কাজের চাপ হ্রাস:

একটি সিডি বা ইউএসবি ড্রাইভে ম্যানুয়ালি ডেটা ব্যাক আপ করা সময়সাপেক্ষ এবং অতিরিক্ত জনবলের প্রয়োজন৷ কিন্তু ডেটা ব্যাকআপ কৌশল স্বয়ংক্রিয় এবং ফলে এটি কাজের চাপ কমায় এবং সময়ও বাঁচায়।

নিরবিচ্ছিন্ন অপারেশন:

অপারেটিং সিস্টেমের চলমান থাকা অবস্থায়, এর ব্যাকআপ সর্বদা ব্যাকগ্রাউন্ডে চলতে থাকেব্যাকআপ অপারেশনের কারণে ব্যবহারকারীরা কম বাধা অনুভব করেন, ফলে আপটাইম বৃদ্ধি পায়।

তথ্য সংরক্ষণাগার (Information Archives):

একটি সংরক্ষণাগারে ক্লায়েন্টের বিবরণ সংরক্ষণ করা একটি কোম্পানির অগ্রগতি এবং বিকাশে সহায়তা করেডেটা ব্যাক আপ করা তথ্যের আর্কাইভ তৈরিকে সহজ করে।

https://datarecoverystation.com/data-backup-importance-and-advantages/#What_are_the_advantages_of_data_backup

https://fluentpro.com/blog/top--advantages-of-data-backup-and-recovery/

 

ইনক্রিমেন্টাল ব্যাকআপ ডিফারেনশিয়াল ব্যাকআপ এর পার্থক্য :

 

বিষয়

ইনক্রিমেন্টাল ব্যাকআপ

ডিফারেনশিয়াল ব্যাকআপ

 

এই ধরনের ব্যাকআপে ডেটার ধারাবাহিক অনুলিপিগুলিতে পূর্ববর্তী ব্যাকআপ কপি তৈরির পর থেকে শুধুমাত্র পরিবর্তিত অংশ থাকে

এই ধরনের ব্যাকআপে শুধুমাত্র শেষ পূর্ণ ব্যাকআপ থেকে ডেটার পার্থক্য সংরক্ষণ করা হয়

 

এটিতে ডিফারেনশিয়াল ব্যাকআপের চেয়ে বেশি অপ্রয়োজনীয় ডেটা রয়েছে

ডিফারেনশিয়াল ব্যাকআপে কম অপ্রয়োজনীয় ডেটা থাকে

পুনরূদ্ধার

এই ধরনের ব্যাকআপে ডেটা পুনরুদ্ধার করা জটিল ও কঠিন কারণ এর জন্য পূর্ণ ব্যাকআপ এবং সবগুলো ইনক্রিমেন্টাল ব্যাকআপ প্রয়োজন।

সর্ব সাম্প্রতিক পূর্ণ ব্যাকবাপ এবং সর্বশেষ পার্থক্যটুকুর ব্যাকআপ নিয়ে ডাটা পুনরুদ্ধার করা যায় তাই এই পদ্ধতিতে ডাটা পুনরুদ্ধার করা সহজ ও কম সময় সাপেক্ষ

সময়

একটি ব্যাকআপ তৈরি করতে কম সময় লাগে

ক্রমবর্ধমান ব্যাকআপের চেয়ে ব্যাকআপ তৈরি করতে বেশি সময় লাগে

স্টোরেজ স্পেস

একটি ব্যাকআপ তৈরি করতে কম ডেটা স্টোরেজ স্পেস লাগে

ক্রমবর্ধমান ব্যাকআপের তুলনায় একটি ব্যাকআপ তৈরি করতে নেওয়া মেমরি বেশি

ব্যান্ডউইথ

ইনক্রিমেন্টাল ব্যাকআপ কম ব্যান্ডউইথ প্রয়োজন হয়

ডিফারেনশিয়াল ব্যাকআপ ইনক্রিমেন্টাল ব্যাকআপের চেয়ে বেশি ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করে

ডেটা হারানোর ঝুঁকি

ঝুঁকি বেশি, কারণ যে কোন একটি ইনক্রিমেন্টাল ব্যাকআপ নষ্ট হলে পুরো রিস্টোর প্রক্রিয়া ব্যর্থ হতে পারে।

কম, কারণ শুধু পূর্ণ ব্যাকআপ এবং একটি ডিফারেনশিয়াল ব্যাকআপ থাকলেই রিস্টোর সম্ভব।

ব্যবহার উপযোগীতা

 

ইনক্রিমেন্টাল ব্যাকআপ ছোট ব্যবসা বা ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানে উপযোগী, যেখানে দ্রুত ব্যাকআপ এবং কম স্টোরেজ খরচ গুরুত্বপূর্ণ।

 

ডিফারেনশিয়াল ব্যাকআপ বড় প্রতিষ্ঠান বা গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর ডেটা নিয়ে কাজ করে এমন সংস্থায় উপযুক্ত, যেখানে দ্রুত রিস্টোর এবং ডেটার নির্ভরযোগ্যতা অগ্রাধিকার পায়।

 

আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির জন্য NDC’র গুরুত্ব (Importance of near Data Center -NDC for FIs):

নিকটবর্তী ডেটা সেন্টার হলো যেখানে প্রধান ডাটা সেন্টার অবস্থিত সেই একই শহরে স্থাপিত আরও একটি ডেটা সেন্টার যার ধারণক্ষমতা এবং সংযোগ ডেটা সেন্টারের মতোই। কাছাকাছি ডেটা সেন্টারকে কখনও কখনও DC হিসাবে উল্লেখ করা হয়।

ডাটা সেন্টার ২ (DC) আর্থিক প্রতিষ্ঠান (FIs) এর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং এটি শুধুমাত্র ডিজাস্টার রিকভারি (DR) সাইটের চেয়েও অনেক বেশি ভূমিকা পালন করে। ডিজাস্টার রিকভারি সাইট (DRS) মূলত কোনো বিপর্যয়ের পরে অপারেশন পুনরুদ্ধারের উপর ফোকাস করে, কিন্তু DC অপারেশনাল স্থিতিস্থাপকতা, স্কেলেবিলিটি এবং ব্যবসায়িক ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করার জন্য একটি বৃহত্তর এবং কৌশলগত ভূমিকা পালন করে। এখানে NDC কেন আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির জন্য গুরুত্বপূর্ণ তা আলোচনা করা হলো:

 

১. অ্যাক্টিভ-অ্যাক্টিভ অপারেশন

   - NDC একটি অ্যাক্টিভ ডাটা সেন্টার হিসাবে ব্যবহৃত হয়, যা DC-এর সমান্তরালে চলতে থাকে, শুধুমাত্র একটি ব্যাকআপ হিসাবে নয়। এটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে উভয় ডাটা সেন্টারে ওয়ার্কলোড বিতরণ করতে দেয়, যা উচ্চ প্রাপ্যতা এবং লোড ব্যালেন্সিং নিশ্চিত করে। যদি একটি ডাটা সেন্টারে সমস্যা হয়, অন্যটি বিনা ব্যাঘাতে কাজ চালিয়ে যেতে পারে।

 

. নির্ভরযোগ্যতা এবং রিডানডেন্সি: নিকটবর্তী ডেটা সেন্টার উচ্চ মাত্রার নির্ভরযোগ্যতা এবং রিয়েল-টাইম রিডানডেন্সি প্রদান করে। ফিনান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনের জন্য ডাউনটাইম অত্যন্ত ব্যয়বহুল হতে পারে

৩. উন্নত পারফরম্যান্স এবং লেটেন্সি হ্রাস

   - বিশ্বব্যপি পরিচালিত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির জন্য, DC ভিন্ন অঞ্চলে অবস্থিত হলে সেই অঞ্চলের গ্রাহকদের জন্য লেটেন্সি কমাতে সাহায্য করে। এন্ড-ইউজারদের কাছাকাছি ডেটা এবং লেনদেন প্রসেসিং করে, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি দ্রুত এবং আরও দক্ষ পরিষেবা  প্রদান করতে পারে, যা গ্রাহক অভিজ্ঞতা উন্নত করে।

 

৪. প্রসারণ যোগ্যতা

   - DC আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে তাদের অপারেশন সম্প্রসারণ করার জন্য অতিরিক্ত ক্ষমতা প্রদান করে। পিক সময়ে (যেমন ট্যাক্স সিজন, ছুটির সময় বা বাজারের অস্থিরতা), DC বর্ধিত ওয়ার্কলোড পরিচালনা করতে পারে, যা সিস্টেমগুলিকে প্রতিক্রিয়াশীল এবং নির্ভরযোগ্য রাখে

৫. নিয়ন্ত্রক মানদণ্ড পূরণ

   - অনেক আর্থিক সংস্থা (যেমন GDPR, PCI DSS, Basel III) আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে ডেটা সুরক্ষা এবং ব্যবসায়িক ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করার জন্য NDC রাখার শর্ত দেয়। DC ডেটা এবং অ্যাপ্লিকেশনের জন্য একটি পৃথক, অপারেশনাল সাইট প্রদান করে এই নিয়মাবলী পূরণ করতে সাহায্য করে।

 

৬. উদ্ভাবন এবং পরীক্ষা

   - DC নতুন প্রযুক্তি, সফটওয়্যার আপডেট বা প্রক্রিয়া পরিবর্তন পরীক্ষার জন্য একটি পরীক্ষামূলক পরিবেশ হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে, যা DC-এর লাইভ পরিবেশে ব্যাঘাত ঘটায় না। এটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে নিরাপদে এবং দক্ষতার সাথে নতুন সমাধান নিয়ে উদ্ভাবন এবং স্থাপন করতে দেয়।

 

৭. উন্নত সাইবার সুরক্ষা  - সাইবার আক্রমণের ক্ষেত্রে (যেমন- র‌্যানসামওয়ারবা ডেটা ব্রিচ), DC একটি নিরাপদ, নিবিড় পরিবেশে কাজ করতে পারে,  যেখানে ক্রিটিক্যাল সিস্টেম এবং ডেটা অপ্রভাবিত থাকে। DRS-এর বিপরীতে, যা শুধুমাত্র ঘটনার পরে সক্রিয় হয়, DC সর্বদা অপারেশনাল থাকে এবং রিয়েল-টাইম সুরক্ষা প্রদান করে।

 

৮. গ্রাহক আস্থা এবং সুনাম

   - আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি গ্রাহক আস্থার উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। যে কোনও উল্লেখযোগ্য ডাউনটাইম বা পরিষেবা ব্যাঘাত তাদের সুনাম ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। DC নিশ্চিত করে যে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি অপ্রত্যাশিত ঘটনাক্রমেও নিরবচ্ছিন্ন পরিষেবা বজায় রাখতে পারে, যা গ্রাহক আস্থা বজায় রাখে।

 

৯. নিরবিচ্ছিন্ন কার্যক্ষমতা

   ডাউনটাইম হ্রাস করে উন্নত পারফরম্যান্স দেয় DC আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে উভয় সেন্টারের মধ্যে সম্পদ বরাদ্দ অপ্টিমাইজ করতে দেয়, যা সামগ্রিক খরচ দক্ষতা উন্নত করে।

 

১০. ডিজাস্টার রিকভারির ছাড়াই ব্যবসায়িক ধারাবাহিকতা

   - DRS মূলত বিপর্যয়ের পরে পুনরুদ্ধারের উপর ফোকাস করে, এর বিপরীতে DC ব্যাঘাত প্রতিরোধ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। মূল ডাটা সেন্টার এর সমান্তরালে কাজ করে, DC নিশ্চিত করে যে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি পরিকল্পিত রক্ষণাবেক্ষণ বা অপ্রত্যাশিত ব্যর্থতার সময়েও অবিচ্ছিন্ন অপারেশন বজায় রাখতে পারে।

 

 DC এবং DRS-এর মধ্যে মূল পার্থক্য:

   - DC: একটি অ্যাক্টিভ, অপারেশনাল ডাটা সেন্টার যা DC-এর সমান্তরালে চলতে থাকে এবং রিয়েল-টাইম রিডানডেন্সি, স্কেলেবিলিটি এবং পারফরম্যান্স উন্নতি প্রদান করে।

   - DRS: একটি প্যাসিভ ব্যাকআপ সাইট যা শুধুমাত্র জরুরি অবস্থায় সক্রিয় হয় এবং ব্যাঘাতের পরে অপারেশন পুনরুদ্ধার করে।

 

NDC শুধুমাত্র একটি ব্যাকআপ বা ডিজাস্টার রিকভারি সমাধান নয়; এটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির জন্য একটি কৌশলগত সম্পদ। এটি উচ্চ প্রাপ্যতা, ভৌগোলিক রিডানডেন্সি, নিয়ন্ত্রক মানদণ্ড পূরণ এবং পরিচালন স্থায়িত্ব  নিশ্চিত করে, যা অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক এবং নিয়ন্ত্রিত শিল্পে অপারেশন করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। DC ব্যবহার করে, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি পারফরম্যান্স উন্নত করতে, ব্যাঘাত থেকে সুরক্ষিত থাকতে এবং গ্রাহক আস্থা বজায় রাখতে পারে, যা তাদের অবকাঠামোর একটি অপরিহার্য অংশ করে তোলে।

 

 

LAN কার্ড:

LAN (লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক) কার্ড, যাকে নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কার্ড (NIC) বলা হয়, এটি একটি হার্ডওয়্যার কম্পোনেন্ট যা কম্পিউটার এবং অন্যান্য ডিভাইসকে একটি লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্কে সংযুক্ত করতে সাহায্য করে এটি ডিভাইস এবং নেটওয়ার্কের মধ্যে ফিজিক্যাল ইন্টারফেস প্রদান করে, যা ইথারনেট বা Wi-Fi এর মতো প্রোটোকল ব্যবহার করে নেটওয়ার্কে যোগাযোগ সম্ভব করে তোলে

 

LAN- LAN কার্ডের প্রয়োজনীয়তা কার্যাবলী:

. ডিভাইস সংযোগ: LAN কার্ড ছাড়া একটি ডিভাইস LAN- ফিজিক্যালি সংযুক্ত হতে পারে না এটি ওয়্যার্ড (ইথারনেট) এবং ওয়্যারলেস (Wi-Fi) উভয় সংযোগের জন্য অপরিহার্য

. যোগাযোগ: এটি ডিভাইসগুলিকে একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে, রিসোর্স শেয়ার করতে (যেমন- ফাইল, প্রিন্টার) এবং ইন্টারনেট অ্যাক্সেস করতে সক্ষম করে

. নেটওয়ার্ক ম্যানেজমেন্ট: LAN কার্ড ডেটা ফ্লো ম্যানেজ করতে সাহায্য করে, যা ডিভাইসগুলির মধ্যে দক্ষ এবং ত্রুটিমুক্ত যোগাযোগ নিশ্চিত করে

. প্রসারনক্ষমতা: এটি একাধিক ডিভাইসকে LAN- সংযুক্ত করতে দেয়, যা নেটওয়ার্ককে প্রয়োজন অনুযায়ী সম্প্রসারণ করা সহজ করে তোলে

৫. ডেটা ট্রান্সমিশন: এটি নেটওয়ার্কে ডেটা প্যাকেট পাঠানো এবং গ্রহণ করতে সাহায্য করে।

৬. প্রোটোকল সমর্থন: এটি নেটওয়ার্ক প্রোটোকল (যেমন -TCP/IP) সমর্থন করে, যাতে ডেটা সঠিকভাবে প্রেরণ এবং গ্রহণ করা যায়।

 

এছাড়াও ---

নেটওয়ার্ক সংযোগ: এটি একটি ডিভাইসকে LAN- সংযুক্ত করে, একই নেটওয়ার্কে অন্যান্য ডিভাইসের সাথে যোগাযোগ করতে সক্ষম করে

MAC অ্যাড্রেস: প্রতিটি LAN কার্ডের একটি অনন্য মিডিয়া অ্যাক্সেস কন্ট্রোল (MAC) অ্যাড্রেস থাকে, যা নেটওয়ার্কে ডিভাইসটিকে শনাক্ত করে।

স্পিড এবং ডুপ্লেক্স সেটিংস: আধুনিক LAN কার্ডগুলি বিভিন্ন স্পিড (যেমন ১০/১০0/১০00 Mbps) এবং ডুপ্লেক্স মোড (হাফ-ডুপ্লেক্স বা ফুল-ডুপ্লেক্স) সমর্থন করে, যা দক্ষ ডেটা ট্রান্সফার নিশ্চিত করে

 

সংক্ষেপে, LAN কার্ড একটি LAN- ডিভাইস সংযোগের জন্য একটি অপরিহার্য কম্পোনেন্ট, যা যোগাযোগ, ডেটা শেয়ারিং এবং নেটওয়ার্ক কার্যকারিতা সম্ভব করে তোলে

 

রাউটিং নাম্বার এর তাৎপর্য :

রাউটিং নাম্বার হলো  ডিজিটের এমন একটি ইউনিক কোড যা যে কেন ব্যাংকের যেকোন শাখার পরিচয় বহন করে। সাধারণত ব্যাংক চেকের পাতায়চেক নম্বর এর বাম পাশে  ডিজিটের ব্যাংক  রাউটিং নম্বর মুদ্রিত থাকে এমআইসিআর (ম্যাগনেটিক ইঙ্ক ক্যারেক্টার রিডেবলচেকের পাতায় যথারীতি বাম দিকে উপরের অংশ বরাবর ডিজিটের রাউটিং নম্বরটি মুদ্রিত থাকার পাশাপাশি চেকের পাতার সিগনেচার লাইনের নিচে অ্যাকাউন্ট নম্বর, চেক নম্বরের পাশাপাশি রাউটিং নাম্বারটিও মুদ্রিত থাকে   

 

সকল ব্যাংকের প্রতিটি শাখার জন্য ইউনিক রাউটিং নাম্বার হয়ে থাকে, যা দিয়ে সহজেই একটি ব্যাংকের নির্দিষ্ট কোন ব্রাঞ্চকে সহজেই আইডিন্টিফাই করা যায় । একজন গ্রাহকের একই ব্যাংকে একাধিক হিসাব খুলতে পারেন, যেখানে প্রতিটি হিসাবের জন্য আলাদা হিসাব নম্বর থাকবে, কিন্তু রাউটিং নম্বর একই থাকবে। এটি পেমেন্ট সঠিক ব্যাংক এবং শাখায় পাঠাতে সাহায্য করে। শাখা নির্ধারন ছাড়াও আন্তব্যাংক চেক ট্রান্সফার, চেক ডিপোজিট, ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার, অনলাইন পেমেন্ট, চেক ক্লিয়ারিং, বিইএফটিএন, এনপিএসবি, আরটিজিএস ফান্ড ট্রান্সফার ইত্যাদি কাজে ব্যাংক রাউটিং নম্বর এর উপযোগিতা অপরিহার্য।

এই বিশেষ কোডের প্রথম তিন সংখ্যা ব্যাংক কোড, পরবর্তী দুই সংখ্যা জেলা কোড, পরবর্তী তিন সংখ্যা শাখা কোড এবং শেষ সংখ্যাটি চেক ডিজিটের সংমিশ্রণে তৈরী হয়।

 

 

 


চেক প্রসেসিং সিস্টেম (Cheque Processing Systems)

 

চেক প্রসেসিং সিস্টেম হলো এমন একটি ব্যাংকিং প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো চেকের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন সম্পন্ন করে। এই সিস্টেমে, চেক লেখক (পেয়ার) এর হিসাব থেকে প্রাপক (পেয়ি) এর হিসাবে টাকা স্থানান্তর করা হয়। এই পুরো প্রক্রিয়াটি চেকের বৈধতা যাচাই, হিসাবে পর্যাপ্ত তহবিল আছে কিনা তা নিশ্চিত করা এবং নিরাপদে টাকা ট্রান্সফার করার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। একটি চেক উপস্থাপনের পর "পর্দার অন্তরালে কতগুলো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়, যা নিশ্চিত করে যে প্রতিটি চেক পেমেন্ট বৈধ, সুরক্ষিত এবং সঠিকভাবে প্রক্রিয়াকরণ হয়েছে। 

 

ব্যবসায়িক লেনদেনের ক্ষেত্রে, চেক প্রসেসিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যখন কোনো গ্রাহক চেকের মাধ্যমে পেমেন্ট করে, তখন ব্যবসায়ীর জন্য এটি জরুরি যে সেই টাকা নির্ভরযোগ্যভাবে তার অ্যাকাউন্টে পৌঁছাবে। এই প্রক্রিয়াটি ব্যবসা এবং গ্রাহকউভয়ের জন্যই একটি সুরক্ষা কবচ হিসেবে কাজ করে, কারণ এটি নিশ্চিত করে যে কোন চেক এর বিপরীতে প্রকৃত ফান্ড দ্বারা সমর্থিত 

বিগত কয়েক বছরে, চেক প্রসেসিং ম্যানুয়াল সিস্টেম থেকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে রূপান্তরিত হয়েছে। প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে ব্যাংকগুলো এখন আরও দ্রুত এবং নির্ভুলভাবে চেক প্রসেস করতে পারে, যা আগের তুলনায় সময় কমিয়ে এনেছে। অটোমেটেড ক্লিয়ারিং হাউস (ACH) এবং ইমেজ-ভিত্তিক ডিপোজিটের মতো ডিজিটাল টুলস এই প্রক্রিয়াকে আরও দ্রুত ও নিরাপদ করেছে, যার ফলে ব্যবসায়ীরা তাড়াতাড়ি পেমেন্ট পাচ্ছেন।

 

 

 উচ্চ মূল্যের চেক নিষ্পত্তি (Large value cheque settlement)

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রেক্ষাপটে, "বড় মূল্যের চেক নিষ্পত্তি" বলতে এমন চেকের প্রক্রিয়াকরণ ও নিষ্পত্তিকে বোঝায় যার পরিমাণ একটি নির্দিষ্ট আর্থিক সীমা অতিক্রম করে এবং সাধারণ চেক নিষ্পত্তির তুলনায় এটি দ্রুততর ও দক্ষতার সাথে সম্পন্ন হয়। এই প্রক্রিয়াটি বাংলাদেশ অটোমেটেড চেক প্রসেসিং সিস্টেম (BACPS)-এর আওতায় পরিচালিত হয়, যা বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম বিভাগ দ্বারা তত্ত্বাবধান করা হয়।

 

উচ্চ মূল্যের চেক, যাকে সাধারণত হাই ভ্যালু (HV) চেক বলা হয়, হলো এমন চেক যার পরিমাণ ৫,০০,০০০ টাকা (৫ লাখ) বা তার বেশি। এই চেকগুলো BACPS-এর মাধ্যমে চেক ইমেজিং অ্যান্ড ট্রাঙ্কেশন (CIT) প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিষ্পত্তি করা হয়, যা চেকের ভৌত স্থানান্তরের পরিবর্তে ইলেকট্রনিক উপস্থাপনা ও পেমেন্টের সুবিধা দেয়।

BACPS-এর আওতায় উচ্চ মূল্যের চেকগুলো ব্যাচ মোডে প্রক্রিয়া করা হয়, তবে দ্রুত নিষ্পত্তি চক্রের মাধ্যমে। এই চেকগুলোর জন্য উপস্থাপনের সময়সীমা সাধারণত দিনের প্রথমভাগে (যেমন- দুপুর ১২:০০) এবং ফেরতের সময়সীমা একই দিনে নিষ্পত্তি নিশ্চিত করার জন্য নির্ধারিত (যেমন- বিকেল ৩:০০)। এর মানে হলো, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উপস্থাপন করা হলে তববিলে টাকা একই দিনে (T+0 চক্র) নিষ্পত্তি হয়।

- উদ্দেশ্য: বড় মূল্যের চেকের উপর জোর দেওয়া হয় সময়-সংবেদনশীল, উচ্চ-মূল্যের লেনদেন সহজতর করার জন্য, যেমন ব্যবসায়িক লেনদেন, সরকারি পেমেন্ট বা উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিগত স্থানান্তর, যাতে তহবিল দ্রুত পাওয়া যায়

 

 

# উচ্চ মূল্যের চেক নিষ্পত্তি সাধারণ চেক চেক নিষ্পত্তির মধ্যে মূল পার্থক্য (Large value cheque settlement vs Normal cheque settlement)

. আর্থিক সীমা:

   - উচ্চ মূল্য: ৫,০০,০০০ টাকা বা তার বেশি।

   - সাধারণ (রেগুলার ভ্যালু): ৫,০০,০০০ টাকার নিচে।

 

. নিষ্পত্তির গতি:

   - উচ্চ মূল্য: একই দিনে নিষ্পত্তির (T+0) জন্য অগ্রাধিকার দেওয়া হয়, চুড়ান্ত সময়সীমা বা কাট অফ টাইম এর মধ্যে দ্রুত প্রক্রিয়াকরণ।

   - সাধারণ: নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে জমা দিলে সাধারণত একই দিনে (T+0) নিষ্পত্তি হয়, তবে প্রক্রিয়াটি কম জরুরি এবং সময়ের দিক থেকে বেশি নমনীয়।

 

. সময়সীমা:

   - উচ্চ মূল্য: দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য দিনের প্রথম ভাগে উপস্থাপন (যেমন- দুপুর ১২:০০) এবং ফেরত (যেমন- বিকেল ৩:০০) সময়সীমা।

   - সাধারণ: পরবর্তী উপস্থাপন (যেমন- দুপুর ১২:৩০) এবং ফেরতের (যেমন- বিকেল ৫:০০) সময়সীমা থাকে, যা কম জরুরি প্রকৃতি প্রতিফলিত করে।

 

. অগ্রাধিকার ও তত্ত্বাবধান:

   - উচ্চ মূল্য: উল্লেখযোগ্য পরিমাণ জড়িত থাকায় উচ্চ অগ্রাধিকার পায়, প্রায়শই গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক কার্যক্রমের সাথে সম্পর্কিত।

   - সাধারণ: নিয়মিত ব্যাংকিং কার্যক্রমের অংশ হিসেবে স্ট্যান্ডার্ড তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়।

 

. খরচ:

   - উচ্চ মূল্য: দ্রুত সেবার জন্য বেশি নিষ্পত্তি ফি প্রযোজ্য হতে পারে (যেমন- একই দিনের নিষ্পত্তির জন্য ভ্যাটসহ ৬০ টাকা)

   - সাধারণ: কম ফি (যেমন- ভ্যাটসহ ১০-২৫ টাকা) স্ট্যান্ডার্ড প্রক্রিয়াকরণের প্রতিফলন।

 

 

 

MICR (ম্যাগনেটিক ইঙ্ক ক্যারেক্টার রিকগনিশন) এবং বারকোড এর মধ্যে পার্থক্য:

 

MICR (ম্যাগনেটিক ইঙ্ক ক্যারেক্টার রিকগনিশন) এবং বারকোড দুটি আলাদা প্রযুক্তি, যেগুলো তথ্য এনকোড এবং পড়ার জন্য ব্যবহৃত হয়। এদের মধ্যে প্রধান পার্থক্যগুলো হলো:

 

১. প্রযুক্তি ও এনকোডিং

   - MICR:  - ম্যাগনেটিক কালি (লোহার অক্সাইডযুক্ত) ব্যবহার করে বিশেষ ফন্টে (যেমন E-১৩B বা CMC-) micr লেখা হয়। 

   - বারকোড: - বিভিন্ন প্রস্থের লাইন বা ডটের প্যাটার্নে তথ্য এনকোড করা হয়।

 

২. ডাটা রিডিং:

    - MICR:  ম্যাগনেটিক সেন্সর দ্বারা পড়া যায়। 

     -- বারকোড: অপটিক্যাল স্ক্যানার (লেজার বা ইমেজ-ভিত্তিক) দ্বারা পড়া যায়। 

 

. ব্যবহার:

   - MICR:   - প্রধানত ব্যাংকিং সেক্টরে চেক প্রসেসিংয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়। হিসাব নম্বর, রাউটিং নম্বর ইত্যাদি নিরাপদে পড়ার জন্য। 

   - বারকোড:  - রিটেল, লজিস্টিক্স, ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদিতে বহুল ব্যবহৃত। পণ্য ট্র্যাকিং এবং ডেটা অটোমেশনের জন্য। 

 

. স্থায়িত্ব:

   - MICR:   - ম্যাগনেটিক কালির কারণে খুবই টেকসই এবং সহজে বিবর্ণ হয় না বা ক্ষতি সহ্য করতে পারে। 

   - বারকোড:   - এটি সহজে নষ্ট হয়ে যায় ছিঁড়ে যাওয়া বা নষ্ট হলে পড়া কঠিন হতে পারে। 

 

. খরচ:

   - MICR:   - বিশেষ কালি এবং প্রিন্টিং যন্ত্রের কারণে খরচ বেশি। 

   - বারকোড:   - তুলনামূলকভাবে সস্তা এবং সহজে প্রিন্ট করা যায়। 

 

 বহুমুখী এবং বিভিন্ন শিল্পে প্রয়োজন অনুযায়ী MICR  বারকোড প্রযুক্তি নির্বাচন করা হয়।

 

 নির্ভুল চেক প্রক্রিয়াকরণে MICR এনকোডিং-এর সুবিধা (Benefits of MICR encoding for cheque processing accuracy)

  1. উন্নত পঠনযোগ্যতা এবং নির্ভুলতা:

o   MICR ম্যাগনেটিক কালি ব্যবহার করে একটি মানসম্মত ফরম্যাটে অক্ষর (যেমন- ব্যাংক রাউটিং নম্বর, অ্যাকাউন্ট নম্বর, এবং চেক নম্বর) মুদ্রণ করে, যা মেশিন দ্বারা উচ্চ নির্ভুলতার সাথে পড়া যায়, এবং এতে মানুষের ভুল ত্রুটি কম হয়

o   এই প্রযুক্তি চেক ভাঁজ করা, দাগযুক্ত বা সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সঠিকভাবে পড়তে পারে, কারণ এটি চাক্ষুষ স্পষ্টতার পরিবর্তে ম্যাগনেটিক বৈশিষ্ট্যের উপর নির্ভর করে।

  1. জালিয়াতি প্রতিরোধ:

o   MICR এনকোডিং পরিবর্তন বা জাল করা কঠিন, কারণ এটি ম্যাগনেটিক কালি এবং নির্দিষ্ট ফন্ট (যেমন- E-১৩B বা CMC-) ব্যবহার করে, যা নিরাপত্তা বাড়ায় এবং জাল চেক প্রক্রিয়াকরণ কমায়।

o   MICR লাইনে এনকোড করা ব্যাংক এবং অ্যাকাউন্টের অনন্য সমন্বয় প্রক্রিয়াকরণের সময় সত্যতা যাচাই করতে সাহায্য করে।

  1. প্রক্রিয়াকরণে গতি:

o   MICR রিডার দ্রুত স্ক্যান করে এনকোড করা তথ্য বোঝে, যা ব্যাংকগুলোকে মানুষের হস্তক্ষেপ ছাড়াই প্রচুর পরিমাণে চেক দক্ষতার সাথে প্রক্রিয়া করতে দেয়।

o   এটি ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতির তুলনায় প্রক্রিয়াকরণের সময় কমায়, দ্রুত যাচাইকরণ এবং ক্লিয়ারিং নিশ্চিত করে।

  1. বাছাইকালীন ত্রুটি হ্রাস:

o   MICR লাইনে ব্যাংক রাউটিং নম্বর থাকে, যা চেকগুলোকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান অনুযায়ী বাছাই করতে সক্ষম করে, ভুল রাউটিং কমায় এবং চেক সঠিক ক্লিয়ারিং হাউস বা ব্যাংকে পৌঁছায়।

o   মানসম্মত এনকোডিং অস্পষ্ট হস্তাক্ষর বা অসামঞ্জস্যপূর্ণ ফরম্যাটের কারণে সৃষ্ট অসঙ্গতি দূর করে।

  1. উন্নত হিসাব সমন্বয়:

o   MICR ডেটা ব্যাংকিং সফটওয়্যারের সাথে নির্বিঘ্নে একীভূত হয়, সঠিক রেকর্ড রাখা এবং লেনদেনের হিসাব সমন্বয় সহজে ও স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পাদন করা যায়, ব্যাংক রেকর্ড এবং গ্রাহক হিসাবের মধ্যে অসঙ্গতি কমায়।

বাংলাদেশে স্বয়ংক্রিয় ক্লিয়ারিং সিস্টেম কীভাবে তহবিল স্থানান্তর ত্বরান্বিত করে

বাংলাদেশে, স্বয়ংক্রিয় ক্লিয়ারিং সিস্টেম, প্রধানত বাংলাদেশ অটোমেটেড চেক প্রসেসিং সিস্টেম (BACPS) এবং রিয়েল টাইম গ্রস সেটলমেন্ট (RTGS) সিস্টেম, ম্যানুয়াল প্রক্রিয়াগুলোকে দক্ষ, প্রযুক্তি-চালিত সমাধান দিয়ে প্রতিস্থাপন করে তহবিল স্থানান্তরে বিপ্লব এনেছে। এখানে কীভাবে এগুলো তহবিল স্থানান্তর ত্বরান্বিত করে তা বর্ণনা করা হলো:

1.      BACPS-এর মাধ্যমে ইলেকট্রনিক প্রক্রিয়াকরণ:

o   চেক ইমেজিং এবং ট্রাঙ্কেশন (CIT): BACPS MICR-এনকোডেড চেকগুলো স্ক্যান করে ডিজিটাল ছবিতে রূপান্তরিত করে, ব্যাংকগুলোর মধ্যে চেকের ভৌত স্থানান্তরের প্রয়োজনীয়তা দূর করে। এটি পরিবহন সময়কে দিন থেকে ঘণ্টায় কমিয়ে দেয়।

o   ব্যাচ প্রক্রিয়াকরণ: উচ্চ-মূল্যের (৫,০০,০০০ টাকার বেশি) এবং সাধারণ-মূল্যের চেক উভয়ই T+0 (একই দিনে ক্লিয়ারিং এর ভিত্তিতে ব্যাচে ক্লিয়ার করা হয়, যদি নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে (যেমন- উচ্চ-মূল্যের জন্য দুপুর ১২:০০) জমা দেওয়া হয়এটি প্রাপকের কাছে ম্যানুয়াল ক্লিয়ারিংয়ের তুলনায় অনেক দ্রুত তহবিল পৌছে দেয়

o   কেন্দ্রীয়ভাবে ক্লিয়ারিং: বাংলাদেশ ব্যাংক দ্বারা পরিচালিত BACPS সারা দেশে চেক ক্লিয়ারিং কেন্দ্রীভূত করে, অংশগ্রহণকারী ব্যাংকগুলোর মধ্যে যোগাযোগ সহজ করে এবং আন্তঃব্যাংক সমন্বয়ের কারণে বিলম্ব কমায়।

2.      RTGS-এর মাধ্যমে রিয়েল-টাইম নিষ্পত্তি:

o   তাৎক্ষণিক তহবিল স্থানান্তর: ২০১৫ সালে চালু করা RTGS উচ্চ-মূল্যের (ন্যূনতম ১,০০,০০০ টাকা) লেনদেন তাৎক্ষণিকভাবে গ্রস ভিত্তিতে নিষ্পত্তি করে, ব্যাচ প্রক্রিয়াকরণ এড়িয়ে। তহবিল প্রাপকের হিসাবে মিনিটের মধ্যে জমা হয়, যা জরুরি ব্যবসায়িক বা সরকারি পেমেন্টের জন্য আদর্শ।

o   ২৪/৭ প্রাপ্যতা: RTGS ব্যাংকিং সময়ের মধ্যে কাজ করে কিন্তু লেনদেন রিয়েল-টাইমে প্রক্রিয়া করে, ঐতিহ্যবাহী চেক ক্লিয়ারিং বা EFT সিস্টেমের তুলনায় অপেক্ষার সময় উল্লেখযোগ্যভাবে কমায়।

3.      ম্যানুয়াল হস্তক্ষেপ হ্রাস:

o   স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা মানুষের হাতে পরিচালনা কমায়, চেক ম্যানুয়াল বাছাই, যাচাইকরণ এবং পরিবহনের ত্রুটি ও বিলম্ব কমিয়ে দেয়। উদাহরণস্বরূপ, MICR-এনকোডেড চেক স্বয়ংক্রিয়ভাবে পড়া ও প্রক্রিয়া করা হয়, যা BACPS বা RTGS সিস্টেমে সরাসরি ডেটা সরবরাহ করে।

o   এই দক্ষতা কোন বাধা ছাড়াই। তহবিল দ্রুত প্রদানকারী থেকে প্রাপকের হিসাবে স্থানান্তর করে

4.      উন্নত তারল্য ব্যবস্থাপনা:

o   BACPS (একই দিনে) এবং RTGS (রিয়েল-টাইম) এর মাধ্যমে দ্রুত ক্লিয়ারিং ব্যবসা এবং কোন ব্যক্তি তহবিল দ্রুততার সাথে পায়, ফলে নগদ প্রবাহ এবং আর্থিক পরিকল্পনা উন্নত করে।

o   ব্যাংকগুলো তহবিল দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়ায় তারল্য আরও ভালোভাবে পরিচালনা করতে পারে, ফ্লোটিং পিরিয়ড (চেক ইস্যু এবং তহবিল উপলব্ধতার মধ্যবর্তী সময়) কমিয়ে।

5.      উচ্চ গতি এবং ভলিউম পরিচালনা:  BACPS প্রতিদিন হাজার হাজার চেক (যেমন- উচ্চ-মূল্য এবং সাধারণ-মূল্য মিলিয়ে) প্রক্রিয়া করে, এবং RTGS বড় লেনদেন দক্ষতার সাথে পরিচালনা করে। এই প্রসারণক্ষমতা গতি না কমিয়ে লেনদেনের ক্রমবর্ধমান ভলিউম সামলাতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, পিক সময়ে (যেমন- করের মরসুম বা বেতন বিতরণ) স্বয়ংক্রিয় সিস্টেম ম্যানুয়াল ক্লিয়ারিংয়ে দেখা ব্যাকলগ প্রতিরোধ করে।

6.      উন্নত নিরাপত্তা এবং স্বচ্ছতা: স্বয়ংক্রিয় সিস্টেম MICR ডেটা এবং ডিজিটাল ট্র্যাকিং একীভূত করে, চেক হারিয়ে যাওয়া বা জালিয়াতি পরিবর্তনের ঝুঁকি কমায়। এই নির্ভরযোগ্যতা পুনরায় যাচাইকরণের প্রয়োজনীয়তা দূর করে প্রক্রিয়াটিকে ত্বরান্বিত করে। লেনদেনের স্থিতি রিয়েল-টাইমে (RTGS) বা দিনের শেষে (BACPS) আপডেট হয়, সকল পক্ষের কাছে স্পষ্টতা প্রদান করে এবং অনিশ্চয়তার কারণে সংঘটিত বিলম্ব এড়ায়।

চেক ট্রাঙ্কেশন (cheque truncation):

চেক ছাঁটাই বলতে মূল কাগজী চেক বাদ দিয়ে এবং এটিকে ডিজিটাল চেকে রূপান্তরিত করে একটি চেক ক্লিয়ার করার প্রক্রিয়াকে বোঝায় এটি চেকের একটি ইলেকট্রনিক সংস্করণ- যাকে বিকল্প চেকও বলা হয় - এর মূল চেকের মতোই আইনি অধিকার রয়েছে, যতক্ষণ পর্যন্ত এটি পূর্ব-নির্ধারিত শর্ত পূরণ করে। চেক ক্লিয়ারিং প্রক্রিয়ার সময় এই বিকল্প চেকটি ব্যবহার করা হয়, যা যাচাইকরণের জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিতে একে অপরের মধ্যে বাহ্যিক চেক পরিবহনের প্রয়োজন দূর করে। প্রদানকারী ব্যাংকে কোন চেক পৌঁছানোর পথে শারীরিক উপস্থিতি বদলে দেওয়া হয় চেকের প্রাসঙ্গিক তথ্য  যথা- MICR ক্ষেত্র, উপস্থাপনের তারিখ, উপস্থাপনকারী ব্যাংক, টাকার পরিমাণ প্রভৃতি সম্বলিত একটি ইলেকট্রনিক প্রতিলিপি ড্রই-এর শাখায় পাঠানো হ

অনেক ক্ষেত্রে, একটি ব্যাংক নির্দিষ্ট সময়ের পরে মূল চেকটি নষ্ট করে দিতে পারে। যদি গ্রাহক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অর্থপ্রদানের প্রমাণের জন্য চেকের একটি কপি চান সেক্ষেত্রে, ব্যাংক গ্রাহকের বিবৃতিতে বিকল্প চেকের ডিজিটাল কপি সরবরাহ করে

 

 

চেক ট্রাঙ্কেশন কিভাবে চেকের বাহ্যিক স্থানান্তর রোধে সহায়ক হয়/ চেক ট্রাঙ্কেশনের সুবিধা:

চেক ট্রাঙ্কেশন হল এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে চেকের শারীরিক চলাচল বন্ধ করে এটি ডিজিটাল চিত্রে রূপান্তর করা হয় এবং ইলেকট্রনিক উপায়ে প্রসেস করা হয়। এটি যেভাবে সাহায্য করে:

1.      স্ক্যানিং ও ডিজিটাল রূপান্তর: যখন একটি চেক ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়, তখন ব্যাংক সেটি স্ক্যান করে এবং এর ছবি, MICR কোড, স্বাক্ষর ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ডিজিটাল ফরম্যাটে রূপান্তর করে সংরক্ষিত হয়।

2.      ইলেকট্রনিক প্রেরণ: ফিজিক্যাল চেক পাঠানোর পরিবর্তে, ব্যাংক চেকের ডিজিটাল ইমেজ এবং সংশ্লিষ্ট তথ্য ইলেকট্রনিকভাবে ক্লিয়ারিং হাউস বা ড্রয়ি ব্যাংকে পাঠিয়ে দেয়।

  1. প্রক্রিয়াকরণ এবং যাচাই: প্রাপক ব্যাঙ্ক ইলেকট্রনিক ছবি এবং তথ্য ব্যবহার করে চেকটি প্রক্রিয়া করে। চেকটি শারীরিকভাবে হাতে নেওয়ার প্রয়োজন ছাড়াই তহবিলের প্রাপ্যতা এবং সত্যতা ডিজিটালভাবে যাচাই করা হয়,
  2. ক্লিয়ারিং এবং নিষ্পত্তি: ক্লিয়ারিং হাউস বা পেমেন্ট সিস্টেম (যেমন কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক বা আর্থিক নেটওয়ার্ক দ্বারা পরিচালিত) ইলেকট্রনিক তথ্যের ভিত্তিতে প্রদানকারীর এবং প্রাপকের ব্যাঙ্কের মধ্যে তহবিল স্থানান্তর সহজতর করে, লেনদেন সম্পন্ন করে।ঐতিহ্যগত পদ্ধতিতে, চেকগুলো ক্লিয়ারিংহাউসে শারীরিকভাবে জমা দেওয়া হতো। কিন্তু ট্রাঙ্কেশনে, সবকিছু ডিজিটালভাবে হয়, ফলে কোনো কাগজের চেক সেখানে পৌঁছানোর দরকার হয় না।
  3. চেকের সংরক্ষণ : স্ক্যানিংয়ের পর, মূল চেকটি সাধারণত জমা দেওয়া ব্যাঙ্কে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সংরক্ষণ করা হয়।অনেক দেশে (যেমন বাংলাদেশে) চেক ট্রাঙ্কেশনকে আইনিভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। গ্রাহক বা কোন পক্ষের প্রয়োজনে ডিজিটাল ছবি এবং তথ্য মূল চেকের মতোই বৈধ বলে গণ্য হয়, তাই শারীরিক চেকের প্রয়োজন হয় না।এর মানে হলো, চেকটি কখনোই প্রথম ব্যাঙ্কের বাইরে যায় না, যা শারীরিক চলাচলকে পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়।

চেকের ভৌতিক রূপটিকে ডিজিটাল সমতুল্য দিয়ে প্রতিস্থাপন করে চেক ট্রাঙ্কেশন ব্যবস্থার মাধ্যমে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো দ্রুত ও নিরাপদে চেক নিষ্পত্তি করতে পারে, যা গ্রাহকদের জন্যও সুবিধাজনক।

সনাতন চেক ক্লিয়ারিং সিস্টেমের তুলনায় চেক ট্রাঙ্কেশন সিস্টেমের সুবিধা (Benefits of a cheque truncation system):

চেক ট্রাঙ্কেশন সিস্টেম (CTS) ঐতিহ্যবাহী চেক ক্লিয়ারিং পদ্ধতির তুলনায় আরও আধুনিক, দ্রুত এবং নিরাপদ। এটি চেকের শারীরিক চলাচল বন্ধ করে ডিজিটালভাবে প্রসেসিংয়ের মাধ্যমে কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। নিচে এর প্রধান সুবিধাগুলো তুলে ধরা হলো:

১. দ্রুত চেক নিষ্পত্তি (Clearing Process Faster): প্রচলিত পদ্ধতিতে চেক ক্লিয়ারিং হতে ২-৭ দিন সময় লাগতে পারে CTS ব্যবস্থায় একই দিনে বা পরের দিনে চেক নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয়।

২. চেক হারানো বা জালিয়াতির ঝুঁকি হ্রাস: শারীরিকভাবে চেক পাঠানোর সময় হারিয়ে যাওয়া, চুরি হওয়া বা নকল করার ঝুঁকি থাকে। CTS ব্যবস্থায় চেকের ডিজিটাল ইমেজ সরাসরি ব্যাংকের মধ্যে নিরাপদভাবে স্থানান্তরিত হয়, যা জালিয়াতি ও ত্রুটি কমায়।

 

৩. খরচ সাশ্রয়: প্রচলিত চেক ক্লিয়ারিং ব্যবস্থায়  চেক পরিবহন, সংরক্ষণ ও ম্যানুয়াল প্রসেসিংয়ের জন্য অতিরিক্ত খরচ হয়। CTS এই খরচ কমিয়ে ব্যাংকের পরিচালন খরচ কমায় এবং কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে।

 

৪. নিরাপত্তা বৃদ্ধি: CTS ব্যবস্থায় ইমেজ-ভিত্তিক যাচাই, ডিজিটাল স্বাক্ষর এবং এনক্রিপশন (Encryption) প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়, যা নিরাপত্তা আরও শক্তিশালী করে।

 

৫. পরিবেশবান্ধব ব্যাংকিং : কাগজের ব্যবহার কমে যায় এবং চেক সংরক্ষণের জন্য অতিরিক্ত স্থান প্রয়োজন হয় না, যা পরিবেশ- বান্ধব ব্যাংকিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করে।

 

৬. গ্রাহকদের জন্য আরও সুবিধাজনক: চেক দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়ায় গ্রাহকরা তাড়াতাড়ি টাকা পেয়ে যান, যা ব্যবসা ও ব্যক্তিগত লেনদেনের জন্য উপকারী। চেক হারানোর চিন্তা না থাকায় গ্রাহকদের জন্য এটি আরও নিরাপদ ও সহজ হয়।

 

৭. যেকোনো স্থান থেকে চেক ক্লিয়ারিং: প্রচলিত পদ্ধতিতে চেক নির্দিষ্ট ক্লিয়ারিং হাউসে পাঠাতে হয়। CTS ব্যবস্থায় যেকোনো স্থান থেকে ডিজিটালভাবে চেক ক্লিয়ারিং করা সম্ভব, যা সারা দেশে দ্রুত পরিষেবা প্রদান করে।

. উন্নততর সমন্বয় ও যাচাই প্রক্রিয়া: চেক ট্রাঙ্কেশন চেকের তথ্য ডিজিটালি সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করে, যা স্বয়ংক্রিয় মিলকরণ ব্যবস্থা, ত্রুটি হ্রাস এবং দ্রুত প্রসেসিং নিশ্চিত করে। এটি জালিয়াতি শনাক্তকরণ বৃদ্ধি করে, রিয়েল-টাইম ট্র্যাকিং সুবিধা দেয় এবং নিরাপদ ডিজিটাল রেকর্ডের মাধ্যমে অডিট প্রক্রিয়া সহজ করে, ফলে ব্যাংকিং কার্যক্রম আরও দক্ষ ও স্বচ্ছ হয়।

. স্বয়ংক্রিয় ও নির্ভুল প্রসেসিং: CTS ব্যাংকগুলোর মধ্যে একীভূত (Standardized) এবং স্বয়ংক্রিয় (Automated) চেক প্রসেসিং নিশ্চিত করে। ম্যানুয়াল ভুল কমে যায়, ফলে কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়।

চেক ট্রাঙ্কেশন সিস্টেম ঐতিহ্যবাহী চেক ক্লিয়ারিং পদ্ধতির তুলনায় দ্রুত, নিরাপদ ও সাশ্রয়ীএটি ব্যাংকিং ব্যবস্থা আধুনিক করে তোলে এবং গ্রাহকদের জন্য সুবিধাজনক ব্যাংকিং অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।

  চেক জালিয়াতি সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং এম আই সিআর ও অটোমেটেড ক্লিয়ারিং সিস্টেমের ভূমিকা (Challenges related to cheque fraud and  Role of MICR and Automated Clearing System technologies in fraud prevention)

ডিজিটাল পেমেন্টের উত্থান সত্ত্বেও চেক জালিয়াতি ব্যাংকিং খাতে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবেই রয়ে গেছে। জালিয়াতরা চেক পরিবর্তন, জালিয়াতি, নকল চেক এবং চুরিকৃত চেক এর মতো কৌশল ব্যবহার করে দুর্বলতাগুলোকে কাজে লাগায়।

## চেক জালিয়াতির চ্যালেঞ্জসমূহ:

১. চেক পরিবর্তন ও জালিয়াতি:  - জালিয়াতরা বৈধ চেকের প্রাপকের নাম, টাকার পরিমাণ বা তারিখ পরিবর্তন করে।  উদাহরণ: "Tk. ,০০০ " কে একটি শূন্য যোগ করে "Tk. ১০,০০০" এ পরিবর্তন করা

২. নকল চেক:  উচ্চমানের প্রিন্টিং ব্যবহার করে আসল চেকের মতো দেখতে নকল চেক তৈরি করা।

৩. চুরিকৃত চেক:   - অপরাধীরা চেকবুক চুরি করে অননুমোদিত পেমেন্ট ইস্যু করে।

৪. চেকের নকল উপস্থাপন: একজন জালিয়াত একই চেক শনাক্ত হওয়ার আগে একাধিক বার বা একাধিক ব্যাংকে জমা দিতে পারে

. রিয়েল-টাইম যাচাইয়ে বিলম্ব: প্রচলিত চেক প্রক্রিয়াকরণে বিলম্ব জালিয়াতদের অসদুপায় অবলম্বনের সুযোগ দেয়।

# জালিয়াতি প্রতিরোধের MICR ভুমিকা:

- অনন্য এমআইসিআর কোড:  ব্যাংক, শাখা এবং অ্যাকাউন্টের বিবরণ থাকে, যা নকলের ঝুঁকি কমায়। 

- উচ্চ নিরাপত্তা: চৌম্বক কালি নকল করা কঠিন, জালিয়াতি প্রতিরোধ করে। 

- স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়াকরণ:  ম্যানুয়াল ডেটা এন্ট্রিতে মানুষের ভুল থাকে কিন্তু স্কানারের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডাটা রিড করানো হয় ফলে ভুলত্রুটি কমায়।

 

অটোমেটেড ক্লিয়ারিং সিস্টেম (এসিএস)/চেক ট্রাংকেশন সিস্টেম (সিটিএস): 

-ডিজিটাল রূপান্তর: এসিএস চেক প্রক্রিয়াকরণকে ডিজিটাইজ করে, শারীরিক চলাচলের স্থানে ইলেকট্রনিক ইমেজ ব্যবহার করে।

- প্রারম্ভিক জালিয়াতি শনাক্তকরণ: ব্যাংকগুলি রিয়েল-টাইম বা কাছাকাছি সময়ে চেক যাচাই করতে পারে ফলে প্রারম্ভিক অবস্থায় জালিয়াতি শনাক্তকরণ সম্ভব হয় 

-ইমেজ-ভিত্তিক যাচাই প্রাপকের বিবরণ, স্বাক্ষর এবং পরিমাণ ডিজিটালভাবে পরীক্ষা করা হয়। 

- ডুপ্লিকেট শনাক্তকরণ একাধিকবার উপস্থাপিত চেকগুলিকে সিস্টেম ফ্ল্যাগ করে। 

- দ্রুত ক্লিয়ারিং জালিয়াতদের বিলম্ব কাজে লাগানোর সুযোগ কমায়।

 


 

RTGS এবং BEFTN-এর মৌলিক পার্থক্য:

RTGS (Real-Time Gross Settlement) এবং BEFTN (Bangladesh Electronic Funds Transfer Network) উভয়ই বাংলাদেশে ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার পদ্ধতি, তবে এদের কাজের ধরন ও উদ্দেশ্য ভিন্ন।

বৈশিষ্ট্য

RTGS

BEFTN

লেনদেন নিষ্পত্তির সময়

ব্যাংকিং সময়ের মধ্যে তাৎক্ষণিক নিষ্পত্তি (রিয়েল-টাইম)

নির্ধারিত ক্লিয়ারিং চক্র অনুযায়ী নিষ্পত্তি

লেনদেনের ধরন

গ্রস সেটেলমেন্ট (একটির পর একটি আলাদাভাবে নিষ্পত্তি)

নেট সেটেলমেন্ট (একসাথে ব্যাচ হিসেবে প্রসেস করা হয়)

ন্যূনতম লেনদেন সীমা

BDT ১ লাখ (১০০,০০০/-)

কোনও ন্যূনতম সীমা নেই

সর্বোচ্চ লেনদেন সীমা

কোনও ঊর্ধ্বসীমা নেই

সাধারণত ব্যাংকের নির্ধারিত সীমার মধ্যে

উদ্দেশ্য

বড় অংকের ও জরুরি লেনদেন সম্পাদন

কম ও মাঝারি অংকের লেনদেন

প্রসেসিং সময়

প্রতিটি লেনদেন আলাদাভাবে এবং রিয়েল টাইমে প্রসেস করা হয়।

একাধিক লেনদেন একসাথে (ব্যাচ আকারে) প্রসেস করা হয়।

ব্যবহারের ক্ষেত্র

ব্যবসায়িক কর্পোরেট লেনদেন, বড় অঙ্কের ট্রান্সফার, জরুরি লেনদেন ইত্যাদির জন্য ব্যবহৃত হয়।

বেতন প্রদান, বিল পরিশোধ, সরবরাহকারীর অর্থ পরিশোধ, ছোট অঙ্কের ট্রান্সফার ইত্যাদি

খরচ

 

RTGS সাধারণত উচ্চ খরচযুক্ত, কারণ এটি বড় অঙ্কের এবং জরুরি লেনদেনের জন্য ব্যবহৃত হয়।

BEFTN সাধারণত কম খরচযুক্ত, কারণ এটি ছোট এবং মাঝারি অঙ্কের লেনদেনের জন্য ব্যবহৃত হয়।

মূল কথা:

  • RTGS উচ্চমূল্যের এবং জরুরি লেনদেনের জন্য ব্যবহৃত হয়, যা তাৎক্ষণিকভাবে নিষ্পত্তি হয়।
  • BEFTN কম ও মাঝারি অংকের লেনদেনের জন্য ব্যবহৃত হয়, যা ব্যাচ-ভিত্তিক হওয়ায় ১-২ কর্মদিবস সময় নিতে পারে।

RegTech:

রেগুলেটরি টেকনোলজি, যা RegTech নামে জনপ্রিয়, এটি এমন একটি প্রযুক্তি যা ব্যবসা এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিতে নিয়মকানুন মেনে চলার প্রক্রিয়াকে আরও দক্ষ এবং কার্যকরভাবে পরিচালনা করতে সাহায্য করে। RegTech প্রযুক্তিগুলি যেমন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স  (AI), মেশিন লার্নিং )ML), বিগ ডেটা অ্যানালিটিক্স, ব্লকচেইন, এবং ক্লাউড কম্পিউটিং ব্যবহার করে কমপ্লায়েন্স প্রক্রিয়াগুলি সহজ করে, খরচ কমায় এবং নিয়মকানুন সংক্রান্ত ঝুঁকি হ্রাস করে।

RegTech প্রযুক্তির উদাহরণ:

  1. কমপ্লায়েন্স ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার: নিয়মকানুন সংক্রান্ত রিপোর্টিং এবং ট্র্যাকিং স্বয়ংক্রিয় করে।
  2. লেনদেন মনিটরিং সিস্টেম (TMS): সন্দেহজনক আর্থিক কার্যক্রম শনাক্ত করে।
  3. KYC প্ল্যাটফর্ম: গ্রাহক অনবোর্ডিং এবং যাচাইকরণ সহজ করে।
  4. ব্লকচেইন-ভিত্তিক সমাধান: কমপ্লায়েন্সের জন্য নিরাপদ এবং স্বচ্ছ নথিপত্র লিপিবদ্ধ করণ-সংরক্ষণ নিশ্চিত করে।

ক্রিপ্টোকারেন্সি:

ক্রিপ্টোকারেন্সি হল ডিজিটাল সম্পদ যা সরকার বা ব্যাঙ্কের মতো কেন্দ্রীভূত কর্তৃপক্ষের আওতার বাইরে থেকে স্বাধীন লেনদেন সম্পাদন, যাচাই এবং রেকর্ড করার জন্য একটি এনক্রিপ্ট করা নেটওয়ার্কের উপর নির্ভর করে এটি একটি জটিল ধারণা

·        ক্রিপ্টোকারেন্সি (বা সংক্ষেপে "ক্রিপ্টো") হল বিকেন্দ্রীভূত মুদ্রা , যার অর্থ এগুলি কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক দ্বারা জারি বা নিয়ন্ত্রিত নয়৷ কিছু ক্রিপ্টোকারেন্সি তাদের ডেভেলপারদের দ্বারা জারি করা হয়, অন্যগুলি তাদের নিজ নিজ নেটওয়ার্ক অ্যালগরিদম দ্বারা তৈরি করা হয়

·        ক্রিপ্টো হল ডিজিটাল সম্পদতাদের কোন বাস্তব রূপ নেই

·        ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্লকচেইন নামে বিদ্যমান একটি পাবলিক লেজারে কাজ করে , যা সমস্ত ক্রিপ্টো লেনদেন রেকর্ড করে

·        ব্লকচেইন এনক্রিপশন এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে সমস্ত লেনদেন অপরিবর্তনীয় এবং টেম্পারিং, জাল, এবং অন্যান্য ধরনের প্রতারণামূলক লেনদেন থেকে সুরক্ষিত থাকে

ক্রিপ্টোকারেন্সি কিভাবে কাজ করে?

ব্লকচেইন:

ব্লকচেইন হল একটি এনক্রিপ্ট করা পাবলিক লেজার যার মাধ্যমে ডিজিটাল সম্পদ স্থানান্তর, রেকর্ড করা এবং সংরক্ষণ করা যায়।এটি মূলত একটি বিকেন্দ্রীভূত নেটওয়ার্ক, যাকে ডিস্ট্রিবিউটেড-লেজার প্রযুক্তি (DLT) বলা হয়। এর অর্থ হল নেটওয়ার্কের মধ্যে লেনদেনের জন্য দারোয়ান বা সুবিধাদাতা হিসাবে কাজ করে এমন কোনও একক কর্তৃপক্ষ নেই।

·        পরিবর্তে, নেটওয়ার্কে অংশগ্রহণকারী কম্পিউটারগুলিকে চেইনের মধ্যে প্রতিটি "ব্লক" (অর্থাৎ, প্রবেশ বা লেনদেন) যাচাইকরণ এবং সহায়তা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে, প্রতিটি ব্লক ক্রিয়া যাচাই এবং সহজতর করার জন্য সমস্ত কম্পিউটার একসাথে কাজ করে। অন্যান্য ক্ষেত্রে, কয়েকটি কম্পিউটারের একটি গ্রুপ এলোমেলোভাবে নির্বাচন করা হয়।

·        এটিই ব্লকচেইন লেনদেনকে নিরাপদ করে তোলে এবং পরিবর্তন করা প্রায় অসম্ভব। কয়েক হাজার কম্পিউটারের মাধ্যমে একটি একক লেনদেন বা এন্ট্রি যাচাই করতে হয় কম্পিউটারের মধ্যে মতবিরোধ থাকলে লেনদেন বাতিল হয়ে যাবে।

মাইনিং: মাইনিং হল ক্রিপ্টো-কারেন্সি উৎপাদনের প্রক্রিয়া।

মাইনাররা বিটকয়েন তৈরি করে, রেকর্ড করে এবং ত্যতা নিশ্চিত করে

বিনিময়ে তারা উৎপন্ন বিটকয়েনের মালিক হয় এবং অল্প পরিমাণ ফি পায়

BitFirms হল মন্ট্রিলের একটি মাইনিং কোম্পানি এবং বিপুল বিদ্যুত খরচ করে (যা অস্ট্রিয়ার মত একটি দেশের মোট বিদ্যুত খরচ এর সমান)

কোম্পানিটি একটি বিশাল ডেটা সেন্টার এবং বড় কম্পিউটার এবং সরঞ্জাম স্থাপন নির্মাণে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করেছে

ব্লকচেইন প্রযুক্তি (Block Chain Technology):

ব্লকচেইন প্রযুক্তি হল একটি বিকেন্দ্রীভূত (decentralized) এবং বিশেষ ধরনের ডিস্ট্রিবিউটেড লেজার টেকনোলজি (Distributed Ledger Technology - DLT), যা ডিজিটাল লেনদেন এবং ডেটা রেকর্ড করার জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি ক্রিপ্টোগ্রাফিকভাবে সুরক্ষিত, বিকেন্দ্রীভূত (decentralized), এবং অপরিবর্তনীয় (immutable) সিস্টেম, যেখানে ডেটা ব্লক আকারে সংরক্ষণ করা হয় এবং এই ব্লকগুলি একটি চেইনের মতো একে অপরের সাথে সংযুক্ত থাকে। প্রতিটি ব্লকে লেনদেনের তথ্য সংরক্ষণ করা হয়, এবং প্রতিটি ব্লক পূর্ববর্তী ব্লকের সাথে ক্রিপ্টোগ্রাফিক হ্যাশ (cryptographic hash) দ্বারা সংযুক্ত থাকে, যা ডেটার নিরাপত্তা এবং অখণ্ডতা নিশ্চিত করে।

 ব্লকচেইন প্রযুক্তির সংজ্ঞা বিস্তারিত:

 

. ডিস্ট্রিবিউটেড লেজার টেকনোলজি (DLT):

   - ব্লকচেইন হল ডিস্ট্রিবিউটেড লেজার টেকনোলজির একটি রূপ, যেখানে ডেটা একক স্থানে সংরক্ষণ করা হয় না, বরং নেটওয়ার্কের সমস্ত নোড (nodes) বা অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়।

   - প্রতিটি নোডে লেজারের একটি কপি থাকে, যা নেটওয়ার্কের স্বচ্ছতা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।

 

. ব্লক এবং চেইন:

   - ব্লক: প্রতিটি ব্লকে এক বা একাধিক লেনদেনের তথ্য সংরক্ষণ করা হয়। প্রতিটি ব্লকে একটি ক্রিপ্টোগ্রাফিক হ্যাশ থাকে, যা পূর্ববর্তী ব্লকের হ্যাশের সাথে সংযুক্ত থাকে।

   - চেইন: ব্লকগুলি একটি ক্রমিক শৃঙ্খলে সংযুক্ত থাকে, যা ব্লকচেইন তৈরি করে। এই চেইনটি লেনদেনের সম্পূর্ণ ইতিহাস সংরক্ষণ করে।

 

. ক্রিপ্টোগ্রাফি:

   - ব্লকচেইন ক্রিপ্টোগ্রাফিক টেকনিক ব্যবহার করে ডেটা সুরক্ষিত করে। প্রতিটি ব্লক একটি ক্রিপ্টোগ্রাফিক হ্যাশ দ্বারা পূর্ববর্তী ব্লকের সাথে সংযুক্ত থাকে, যা ডেটার অখণ্ডতা নিশ্চিত করে।

   - ক্রিপ্টোগ্রাফিক হ্যাশ হল একটি গাণিতিক ফাংশন, যা ইনপুট ডেটাকে একটি নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যের আলফানিউমেরিক স্ট্রিংয়ে রূপান্তর করে।

 

. বিকেন্দ্রীভূত নেটওয়ার্ক:

   - ব্লকচেইন কোনো কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ বা সার্ভারের উপর নির্ভর করে না। এটি একটি পিয়ার-টু-পিয়ার (PP) নেটওয়ার্কে পরিচালিত হয়, যেখানে সমস্ত অংশগ্রহণকারী (nodes) সমানভাবে লেনদেন যাচাই এবং রেকর্ড করতে পারে।

   - এই বিকেন্দ্রীভূত কাঠামো নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা এবং নির্ভরযোগ্যতা বৃদ্ধি করে।

 

. অপরিবর্তনীয়তা (Immutability):

   - একবার ব্লকচেইনে ডেটা সংরক্ষণ করা হলে তা পরিবর্তন বা মুছে ফেলা যায় না। এটি ক্রিপ্টোগ্রাফিক হ্যাশ এবং চেইন স্ট্রাকচারের কারণে সম্ভব হয়।

   - এই বৈশিষ্ট্য ডেটার নিরাপত্তা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা নিশ্চিত করে।

 

. কনসেনসাস মেকানিজম (Consensus Mechanism): ব্লকচেইন নেটওয়ার্কে লেনদেন যাচাই এবং নতুন ব্লক যোগ করার জন্য একটি কনসেনসাস মেকানিজম ব্যবহার করা হয়। সবচেয়ে সাধারণ কনসেনসাস মেকানিজমগুলি হল:

     - প্রুফ অফ ওয়ার্ক (Proof of Work - PoW): Bitcoin-এ ব্যবহৃত হয়।

     - প্রুফ অফ স্টেক (Proof of Stake - PoS): Ethereum .0-এ ব্যবহৃত হয়।

   - কনসেনসাস মেকানিজম নেটওয়ার্কের অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সম্মতি নিশ্চিত করে এবং নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা বজায় রাখে।

 

. স্মার্ট কন্ট্রাক্ট (Smart Contract):

   - স্মার্ট কন্ট্রাক্ট হল স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকরযোগ্য প্রোগ্রামযোগ্য চুক্তি, যা ব্লকচেইন প্ল্যাটফর্মে সংরক্ষণ করা হয়। এটি নির্দিষ্ট শর্তাবলী মেনে চলা এবং লেনদেন সম্পন্ন করার জন্য ব্যবহৃত হয়।

   - উদাহরণ: Ethereum প্ল্যাটফর্মে স্মার্ট কন্ট্রাক্ট ব্যবহার করা হয়।

 

 ব্লকচেইন প্রযুক্তির উপাদান:

. নোড (Node): ব্লকচেইন নেটওয়ার্কের অংশগ্রহণকারী কম্পিউটার বা ডিভাইস।

. লেনদেন (Transaction): ডিজিটাল লেনদেনের তথ্য, যেমন ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রান্সফার।

. ব্লক (Block): লেনদেনের তথ্য সংরক্ষণ করে এবং পূর্ববর্তী ব্লকের সাথে সংযুক্ত থাকে।

. চেইন (Chain): ব্লকগুলির ক্রমিক শৃঙ্খল, যা লেনদেনের ইতিহাস সংরক্ষণ করে।

. কনসেনসাস মেকানিজম (Consensus Mechanism): লেনদেন যাচাই এবং নতুন ব্লক যোগ করার প্রক্রিয়া।

ব্লকচেইন প্রযুক্তি ডিজিটাল লেনদেন এবং ডেটা ম্যানেজমেন্টকে নিরাপদ, স্বচ্ছ, এবং দক্ষ করে তোলে। এটি শুধুমাত্র ক্রিপ্টোকারেন্সির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং বিভিন্ন শিল্পে এর ব্যাপক প্রয়োগ রয়েছে, যেমন ব্যাংকিং, হেলথকেয়ার, সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট, ভোটিং সিস্টেম, এবং আরও অনেক কিছু।

 

ব্যাংকিং খাতে ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রসমূহ (areas of banking, use of the block chain technology):

ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যাংকিং সেক্টরে বিপ্লব ঘটানোর ক্ষমতা রাখে। এটি একটি বিকেন্দ্রীভূত, নিরাপদ এবং স্বচ্ছ লেজার সিস্টেম যা ব্যাংকিং অপারেশনকে আরও দক্ষ, নিরাপদ এবং নির্ভরযোগ্য করে তুলতে পারে। নিচে ব্যাংকিংয়ের যে ক্ষেত্রগুলিতে ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করা যেতে পারে তা আলোচনা করা হলো:

 ১. পেমেন্ট এবং ফান্ড ট্রান্সফার:

   - আন্তঃদেশীয় পেমেন্ট: ব্লকচেইন ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক পেমেন্ট দ্রুত, সাশ্রয়ী এবং নিরাপদ করা যায়।

   - রিয়েল-টাইম পেমেন্ট: লেনদেনগুলি তাত্ক্ষণিকভাবে সম্পন্ন করা যায়, যা ঐতিহ্যগত পদ্ধতির চেয়ে অনেক দ্রুত।

 

 ২. ঋণ ও অগ্রিম ব্যবস্থাপনা: ব্লকচেইন ব্যবহার করে ক্রেডিট স্কোরিং এর মাধ্যমে গ্রাহকের ক্রেডিট হিস্ট্রি নিরাপদ এবং স্বচ্ছভাবে সংরক্ষণ করা যায়স্বয়ংক্রিয়ভাবে লোনের শর্তাবলী মেনে চলা এবং পেমেন্ট প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা।

 

 ৩. KYC এবং গ্রাহক যাচাইকরণ: গ্রাহকের তথ্য একটি ব্লকচেইন নেটওয়ার্কে সংরক্ষণ করে KYC প্রক্রিয়া সহজীকরণের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার করা যায়। সেই সাথে গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য নিরাপদ এবং সুরক্ষিত রাখা।

 

 ৪. জাল জালিয়াতি সনাক্তকরণ এবং প্রতিরোধ: প্রতিটি লেনদেন ব্লকচেইনে রেকর্ড করা হয়, যা জালিয়াতি শনাক্তকরণ এবং প্রতিরোধে সাহায্য করে। একবার রেকর্ড করা ডেটা পরিবর্তন করা যায় না, যা স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে জালিয়াতি রোধ করে।

 

 ৫. ট্রেড ফাইন্যান্স:

- ডিজিটাল ডকুমেন্টেশন: ট্রেড ফাইন্যান্সের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টেশন ব্লকচেইনে সংরক্ষণ করা যায়।

- স্বয়ংক্রিয় শর্ত পূরণ: স্মার্ট কন্ট্রাক্ট ব্যবহার করে ট্রেড ফাইন্যান্সের শর্তাবলী স্বয়ংক্রিয়ভাবে পূরণ করা যায়।

 

 ৬. সিকিউরিটিজ এবং সম্পদ ব্যবস্থাপনা:

   -ডিজিটাল অ্যাসেট টোকেনাইজেশন: শেয়ার, বন্ড এবং অন্যান্য সিকিউরিটিজ ডিজিটাল টোকেন হিসেবে ইস্যু এবং ব্যবস্থাপনা করা।

   - স্বচ্ছ লেনদেন: সিকিউরিটিজ লেনদেনের স্বচ্ছতা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

 ৭. বীমা দাবি প্রসেসিং: ব্লকচেইন ব্যবহার করে ইনশ্যুরেন্স ক্লেইম প্রসেসিং দ্রুত এবং স্বচ্ছ করা যায়। বীমা পলিসির শর্তাবলী স্বয়ংক্রিয়ভাবে মেনে চলা।

 

 ৮. অ্যান্টি-মানি লন্ডারিং (AML) পরিপালন:

   - লেনদেন মনিটরিং: ব্লকচেইন ব্যবহার করে সন্দেহজনক লেনদেন শনাক্ত করা।

   - রেগুলেটরি কমপ্লায়েন্স: AML বিধিমালা মেনে চলার জন্য স্বচ্ছ এবং নিরাপদ রেকর্ড রাখা।

 

 ৯. আন্তঃব্যাংক লেনদেন:

   - দক্ষ লেনদেন প্রক্রিয়া: ব্যাংকগুলির মধ্যে লেনদেন দ্রুত এবং নিরাপদ করা।

   - ব্যয় সাশ্রয়ী: ইন্টারমিডিয়ারি কমিশন এবং ফি হ্রাস করা।

 

 ১০. ডিজিটাল আইডেন্টিটি ম্যানেজমেন্ট: গ্রাহকের ডিজিটাল আইডেন্টিটি নিরাপদভাবে সংরক্ষণ এবং যাচাই করা। ডেটা গোপনীয়তা বজায় রেখে গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত রাখা।

 

 ১১. সাপ্লাই চেইন ফাইন্যান্স: সাপ্লাই চেইন ফাইন্যান্সের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টেশন ব্লকচেইনে ডিজিটালি সংরক্ষণ করা। স্মার্ট কন্ট্রাক্ট ব্যবহার করে সাপ্লাই চেইন ফাইন্যান্সের শর্তাবলী স্বয়ংক্রিয়ভাবে পূরণ করা।

 

 ১২. সেন্ট্রাল ব্যাংক ডিজিটাল কারেন্সি (CBDC): - সেন্ট্রাল ব্যাংকগুলি তাদের নিজস্ব ডিজিটাল কারেন্সি ইস্যু করতে পারে।ডিজিটাল কারেন্সি ব্যবহার করে মুদ্রা নীতি আরও দক্ষভাবে বাস্তবায়ন করা।

 

 ১৩. অডিট এবং কমপ্লায়েন্স: ব্লকচেইনে সংরক্ষিত ডেটা ব্যবহার করে অডিট প্রক্রিয়া সহজ এবং স্বচ্ছ করা। রেগুলেটরি রিপোর্টিং প্রক্রিয়া স্বয়ংক্রিয় এবং নির্ভুল করা।

 

 ১৪. ইন্টারঅপারেবিলিটি: বিভিন্ন ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ডেটা শেয়ারিং এবং সহযোগিতা সহজ করা।

 

সংক্ষেপে, ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যাংকিং সেক্টরের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে, যা পরিচালন দক্ষতা, নিরাপত্তা এবং স্বচ্ছতা বৃদ্ধি করে। এটি ব্যাংকিং সেক্টরে একটি বিপ্লব ঘটানোর ক্ষমতা রাখে এবং ভবিষ্যতে এর ব্যবহার আরও বৃদ্ধি পাবে।

 

অনলাইন ওয়ালেট প্রোভাইডার

অনলাইন ওয়ালেট প্রোভাইডার হল এমন একটি সেবা বা প্ল্যাটফর্ম যা ইন্টারনেটের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের একটি ভার্চুয়াল ওয়ালেট (ইলেকট্রনিক ওয়ালেট) তৈরি এবং পরিচালনা করার সুবিধা প্রদান করে। যেখানে ব্যবহারকারীরা সেবার ধরণের উপর ভিত্তি করে টাকা রাখতে, পেমেন্ট করতে, টাকা গ্রহণ করতে বা এমনকি ক্রিপ্টোকারেন্সি ধরে রাখতে পারেন অনলাইন ওয়ালেট প্রোভাইডাররা সাধারণত মোবাইল অ্যাপ বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তাদের সেবা প্রদান করে।

সাধারণত, একটি অনলাইন ওয়ালেট ব্যবহারকারীর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ক্রেডিট/ডেবিট কার্ড বা অন্যান্য অর্থায়নের উৎসের সাথে সংযুক্ত থাকে। এটি লেনদেনের জন্য মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করেঅনলাইন ওয়ালেটের মাধ্যমে টাকা জমা এবং উত্তোলন, অনলাইন পেমেন্ট,  বিল পেমেন্ট,  ব্যক্তি হতে ব্যক্তিতে (PP) ট্রান্সফার,  কিছু ক্ষেত্রে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে দোকানে কেনাকাটার জন্য সুবিধা প্রদান করে বিভিন্ন রকম লেনদেন করা যায়।

উদাহরণস্বরূপ - Google Pay, PhonePe, Paytm, PayPal, Amazon Pay, MobiKwik এবং এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি ওয়ালেট প্রদানকারী যেমন Coinbase বা MetaMask হল কয়েকটি জনপ্রিয় অনলাইন ওয়ালেট প্রোভাইডার

সংক্ষেপে, অনলাইন ওয়ালেট প্রোভাইডার হল এমন একটি সেবা যা ব্যবহারকারীদের ডিজিটাল ওয়ালেট তৈরি এবং পরিচালনা করার সুবিধা প্রদান করে, যার মাধ্যমে তারা বিভিন্ন ধরনের আর্থিক লেনদেন পরিচালনা করতে পারেন। এটি আধুনিক ডিজিটাল অর্থনীতির একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে।

 অনলাইন ওয়ালেট প্রোভাইডারদের কার্যক্রমসমূহ (functionalities) :

ব্যবহারকারীদের ডিজিটাল লেনদেনকে সহজ, নিরাপদ এবং দ্রুততর করে তোলে। এই ওয়ালেটগুলি বিভিন্ন ধরনের আর্থিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে সক্ষম। নিচে অনলাইন ওয়ালেট প্রোভাইডারদের প্রধান কার্যকারিতাগুলি আলোচনা করা হলো:

 ১. ডিজিটাল ওয়ালেট তৈরি এবং পরিচালনা: ব্যবহারকারীরা একটি ডিজিটাল ওয়ালেট তৈরি করতে পারেন এবং তাদের ব্যক্তিগত ও আর্থিক তথ্য সংরক্ষণ করতে পারেন।

   - ওয়ালেটে টাকা জমা, উত্তোলন এবং ব্যালেন্স চেক করার সুবিধা রয়েছে।

২. অনলাইন পেমেন্ট: ই-কমার্স ওয়েবসাইট, অ্যাপ বা অনলাইন সেবাগুলিতে পেমেন্ট করার সুবিধা।

   - উদাহরণ: Amazon, Flipkart ইত্যাদি ওয়েবসাইটে পণ্য কিনতে অনলাইন ওয়ালেট ব্যবহার করা।

 ৩. বিল পেমেন্ট: ইউটিলিটি বিল (বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি), মোবাইল রিচার্জ, ইন্টারনেট বিল ইত্যাদি পরিশোধ করা।

   - উদাহরণ: Google Pay, PhonePe-এর মাধ্যমে বিল পেমেন্ট।

 ৪. মোবাইল রিচার্জ এবং ডাটা প্যাক: মোবাইল ফোন রিচার্জ এবং ডাটা প্যাক কিনার সুবিধা।

info and Communication Tech. part-1
 Info & Comm. Techno- আরো পড়ুন

   - উদাহরণ: Paytm, MobiKwik-এর মাধ্যমে মোবাইল রিচার্জ।

৫. ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে (PP) ট্রান্সফার: এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তির কাছে টাকা পাঠানো।

   - উদাহরণ: UPI-এর মাধ্যমে টাকা ট্রান্সফার (Google Pay, PhonePe)

 ৬. অফলাইন পেমেন্ট: QR কোড স্ক্যান করে দোকান, রেস্তোরাঁ বা অন্য কোনো স্থানে পেমেন্ট করা।

   - উদাহরণ: দোকানে Paytm বা PhonePe QR কোড স্ক্যান করে পেমেন্ট।

 ৭. আন্তর্জাতিক লেনদেন: বৈদেশিক মুদ্রায় লেনদেন এবং আন্তর্জাতিক পেমেন্টের সুবিধা।

   - উদাহরণ: PayPal-এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পেমেন্ট।

 ৮. ডিজিটাল গিফ্ট কার্ড এবং ভাউচার: ডিজিটাল গিফ্ট কার্ড বা ভাউচার কেনা এবং পাঠানোর সুবিধা।

   - উদাহরণ: Amazon গিফ্ট কার্ড বা Paytm ভাউচার

 ৯. বিনিয়োগ এবং সঞ্চয়: ডিজিটাল ওয়ালেটের মাধ্যমে মিউচুয়াল ফান্ড, স্টক বা অন্যান্য বন্ডে বিনিয়োগ করা।

   - উদাহরণ: Paytm Money-এর মাধ্যমে মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ।

 ১০. ঋণ এবং ক্রেডিট সুবিধা: ডিজিটাল ওয়ালেটের মাধ্যমে ক্ষুদ্র ঋণ বা ক্রেডিট সুবিধা পাওয়া।

   - উদাহরণ: PhonePe-এর মাধ্যমে লোনের আবেদন।

 ১১. রিওয়ার্ড এবং ক্যাশব্যাক: লেনদেনের উপর রিওয়ার্ড পয়েন্ট বা ক্যাশব্যাক অফার।

   - উদাহরণ: Paytm-এ ট্রানজেকশনের উপর ক্যাশব্যাক

 ১২. সুরক্ষা এবং গোপনীয়তা:    টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন (২FA), PIN, এবং বায়োমেট্রিক সিকিউরিটি (ফিঙ্গারপ্রিন্ট, ফেসিয়াল রিকগনিশন) ব্যবহার করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

   - উদাহরণ: Google Pay-UPI PIN ব্যবহার।

 ১৩. লেনদেনের হিস্ট্রি এবং রিপোর্ট: সমস্ত লেনদেনের ইতিহাস এবং রিপোর্ট সংরক্ষণ করা।

   - ব্যবহারকারীরা তাদের ট্রানজেকশন হিস্ট্রি চেক করতে পারেন।

 ১৪. মাল্টি-কারেন্সি সমর্থন:- একাধিক মুদ্রা সমর্থন করে, যা আন্তর্জাতিক লেনদেনের জন্য উপযোগী।

   - উদাহরণ: PayPal-এ একাধিক মুদ্রার সমর্থন।

 ১৫. গ্রাহক সেবা: ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার এবং সাহায্যের সুবিধা।

   - উদাহরণ: চ্যাট সাপোর্ট, হেল্পলাইন নম্বর।

 ১৬. ইন্টিগ্রেশন:   - অন্যান্য ফিনান্সিয়াল সার্ভিস, অ্যাপ এবং প্ল্যাটফর্মের সাথে ইন্টিগ্রেশন।

   - উদাহরণ: ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ক্রেডিট কার্ড, বা অন্যান্য পেমেন্ট গেটওয়ের সাথে সংযোগ।

সংক্ষেপে, অনলাইন ওয়ালেট প্রোভাইডাররা ব্যবহারকারীদের জন্য ডিজিটাল লেনদেনকে সহজ, নিরাপদ এবং দ্রুততর করে তোলে। তারা বিভিন্ন ধরনের আর্থিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে সক্ষম, যা আধুনিক ডিজিটাল অর্থনীতির একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে।

  ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ন্ত্রণ অসম্ভব হওয়ার কারণ:

ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন- এর পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। ক্রিপ্টোকারেন্সি হল একটি ডিজিটাল বা ভার্চুয়াল মুদ্রা, যা ক্রিপ্টোগ্রাফি ব্যবহার করে সুরক্ষিত এবং বিকেন্দ্রীভূত (decentralized) নেটওয়ার্কে পরিচালিত হয়। এর বৈশিষ্ট্যগুলি এটিকে ঐতিহ্যগত ফিয়াট মুদ্রা (যেমন ডলার, ইউরো) থেকে আলাদা করে এবং নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন করে তোলে। নিচে ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হওয়ার প্রধান কারণগুলি আলোচনা করা হলো:

১. বিকেন্দ্রীভূত প্রকৃতি (Decentralized Nature):

   - ক্রিপ্টোকারেন্সি কোনো কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ, ব্যাংক বা সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকে না। এটি একটি পিয়ার-টু-পিয়ার (PP) নেটওয়ার্কে পরিচালিত হয়, যেখানে সমস্ত লেনদেন নোড (nodes) দ্বারা যাচাই করা হয়।

  - এই বিকেন্দ্রীভূত কাঠামোর কারণে কোনো একক কর্তৃপক্ষের পক্ষে ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ন্ত্রণ করা প্রায় অসম্ভব

 

২. ছদ্মবেশ এবং গোপনীয়তা (Anonymity and Privacy):

   - অনেক ক্রিপ্টোকারেন্সি (যেমন Bitcoin) ব্যবহারকারীদের পরিচয় গোপন রাখে। লেনদেনগুলি পাবলিক লেজারে রেকর্ড করা হয়, কিন্তু ব্যবহারকারীদেরকে শুধুমাত্র তাদের ওয়ালেট ঠিকানা (wallet address) দ্বারা শনাক্ত করা যায়, যা ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করে না।

   - এই গোপনীয়তা ফ্রড, মানি লন্ডারিং এবং অন্যান্য অবৈধ কার্যক্রমের জন্য ক্রিপ্টোকারেন্সিকে আকর্ষণীয় করে তোলে, যা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন।

 

৩. বৈশ্বিক সীমানাবিহীন (Global Nature):

   - ক্রিপ্টোকারেন্সি কোনো নির্দিষ্ট দেশ বা অঞ্চলের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি একটি বৈশ্বিক নেটওয়ার্কে পরিচালিত হয়, যেখানে যেকোনো দেশের ব্যবহারকারীরা অংশগ্রহণ করতে পারে।

   - এই বৈশ্বিক প্রকৃতির কারণে কোনো একক দেশ বা সরকারের পক্ষে ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন।

৪. প্রযুক্তিগত জটিলতা (Technical Complexity):

   - ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তি অত্যন্ত জটিল এবং প্রযুক্তিগত জ্ঞান প্রয়োজনঅনেক নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের কাছে এই প্রযুক্তি সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান নেই, যা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন করে তোলে।

   - ক্রিপ্টোকারেন্সি নেটওয়ার্কগুলি ক্রমাগত উন্নত হচ্ছে, যা নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করে।

 

৫. অপরিবর্তনীয়তা (Immutability):

   - একবার ব্লকচেইনে লেনদেন রেকর্ড করা হলে তা পরিবর্তন বা মুছে ফেলা যায় না। এই অপরিবর্তনীয়তা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন করে তোলে, কারণ কোনো ভুল বা অবৈধ লেনদেন সংশোধন করা যায় না।

 

৬. বিধি নিশেধ আরোপে প্রতিবব্ধকতা (Regulatory Challenges):

   - ক্রিপ্টোকারেন্সি কোনো ঐতিহ্যগত আর্থিক সিস্টেমের অংশ নয়, তাই এটি বিদ্যমান আর্থিক নিয়মকানুনের আওতায় পড়ে না।

   - বিভিন্ন দেশের মধ্যে ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে নিয়মকানুনের পার্থক্য রয়েছে, যা বৈশ্বিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন করে তোলে।

. বাজার অস্থিতিশীলতা (Market Volatility):

   - ক্রিপ্টোকারেন্সির মূল্য অত্যন্ত অস্থির (volatile), যা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন করে তোলে। এই অস্থিরতা বিনিয়োগকারীদের জন্য ঝুঁকি তৈরি করে এবং নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের জন্য চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করে।

 

৯. অবৈধ কার্যক্রম (Illegal Activities):

   - ক্রিপ্টোকারেন্সি অবৈধ কার্যক্রম যেমন মানি লন্ডারিং, ডার্ক ওয়েব লেনদেন, এবং প্রতারণামূলক কর্মকান্ডে জন্য ব্যবহৃত হয়। এই অবৈধ কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন করে তোলে।

 

১০. প্রযুক্তির দ্রুত উন্নতি (Rapid Technological Advancements):

   - ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তি দ্রুত উন্নত হচ্ছে। নতুন নতুন ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হচ্ছে, যা নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করে।

১১. ব্যবহারকারীদের স্বাধীনতা (User Freedom):

   - ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহারকারীদের আর্থিক স্বাধীনতা প্রদান করে। ব্যবহারকারীরা তাদের টাকা নিজেরাই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, যা ঐতিহ্যগত ব্যাংকিং সিস্টেমের চেয়ে আলাদা।

   - এই স্বাধীনতা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন করে তোলে।

 

১২. আদর্শ মানদন্ডর ঘাটতি (Lack of Standardization):

   - ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে কোনো বৈশ্বিক মানদণ্ড বা স্ট্যান্ডার্ড নেই। বিভিন্ন দেশ এবং প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন নিয়মকানুন অনুসরণ করে, যা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন করে তোলে।

 

ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন এর পেছনে প্রধান কারণগুলি হল এর বিকেন্দ্রীভূত প্রকৃতি, অ্যানোনিমিটি, বৈশ্বিক প্রকৃতি, প্রযুক্তিগত জটিলতা, এবং রেগুলেটরি চ্যালেঞ্জ। এই বৈশিষ্ট্যগুলি ক্রিপ্টোকারেন্সিকে ঐতিহ্যগত আর্থিক সিস্টেম থেকে আলাদা করে এবং নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন করে তোলে। তবে ক্রিপ্টোকারেন্সির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির সাথে সাথে বিশ্বব্যাপী নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষগুলি এর নিয়ন্ত্রণ এবং নিয়মকানুন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে।

 

 কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক ডিজিটাল মুদ্রা ইস্যু করার সম্ভাব্য যুক্তি: 

আমি বিশ্বাস করি আমাদের ডিজিটাল মুদ্রা ইস্যুর সম্ভাবনা বিবেচনা করা উচিত 

- ডিজিটাল অর্থনীতিতে অর্থ সরবরাহের জন্য রাষ্ট্র একটি ভূমিকা রাখতে পারে। 

- সুবিধা স্পষ্ট। পেমেন্ট তাৎক্ষণিক, নিরাপদ, ব্যয় সাশ্রয়ী এবং আংশিকভাবে বেনামী হতে পারে... এবং সেন্ট্রাল ব্যাংকগুলি পেমেন্টে একটি নিশ্চিত ভিত্তি ধরে রাখবে। 

- কানাডা, চীন, সুইডেন এবং উরুগুয়ের সেন্ট্রাল ব্যাংকগুলি সবাই ডিজিটাল মুদ্রার প্রস্তাবনা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছে। 

- সেন্ট্রাল ব্যাংক দ্বারা ইস্যু করা একটি ভার্চুয়াল মুদ্রা রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা সৃষ্টি হবে যেমন নগদ টাকা কোনো ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানের নয়। 

- এটি ভোক্তাদের লেনদেনকে আরও নিরাপদ এবং সাধারণ করে তুলবে, এবং ফলস্বরূপ সুলভ হবে। 

জাতীয় ডিজিটাল মুদ্রা (National Digital Currency - NDC)

জাতীয় ডিজিটাল মুদ্রা – NDC প্রবর্তনের ধারণা হল একটি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক ইস্যু করা একটি ডিজিটাল বা ভার্চুয়াল মুদ্রা, যা ঐতিহ্যগত বিহিত মুদ্রার (যেমন টাকা, ডলার, ইউরো) ডিজিটাল সংস্করণ হিসাবে কাজ করে। এই মুদ্রাটি ব্লকচেইন বা অন্যান্য ডিজিটাল লেজার প্রযুক্তির উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয় এবং এটি দেশের আর্থিক সিস্টেমের একটি অংশ হিসাবে কাজ করে। জাতীয় ডিজিটাল মুদ্রার মূল লক্ষ্য হল আর্থিক লেনদেনকে আরও দক্ষ, নিরাপদ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক করা, পাশাপাশি ক্রিপ্টোকারেন্সির মতো বেসরকারি ডিজিটাল মুদ্রার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা।

জাতীয় ডিজিটাল মুদ্রা প্রবর্তনের ধারণা (Idea of introducing National Digital Currency):

উদ্দেশ্য:

. আর্থিক অন্তর্ভুক্তি (Financial Inclusion):

   - ডিজিটাল মুদ্রা ব্যবহার করে ব্যাংকিং সুবিধা থেকে বঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে আর্থিক সিস্টেমের অন্তর্ভুক্ত করা।

   - বিশেষ করে গ্রামীণ এবং দূরবর্তী অঞ্চলের মানুষদের জন্য আর্থিক সেবা সহজলভ্য করা।

 

. লেনদেনের দক্ষতা বৃদ্ধি:

   - ডিজিটাল মুদ্রা ব্যবহার করে লেনদেন দ্রুত, নিরাপদ এবং সহজলভ্য হবে

   - আন্তঃসীমান্ত পেমেন্ট এবং অভ্যন্তরীণ লেনদেনের সময় ও খরচ কমানো।

 

. নগদবিহীন অর্থনীতি (Cashless Economy):

   - নগদ টাকার ব্যবহার কমিয়ে ডিজিটাল লেনদেনকে উৎসাহিত করা।

   - নগদ টাকার চোরাচালান, জালিয়াতি এবং কালো টাকা রোধ করা।

 

. সরকারি নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারি:

   - ডিজিটাল মুদ্রার মাধ্যমে সরকার আর্থিক লেনদেনের উপর নজরদারি করতে পারে, যা কর ফাঁকি এবং অবৈধ কার্যক্রম রোধে সাহায্য করে।

   - মুদ্রা নীতি বাস্তবায়নে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা।

 

. ক্রিপ্টোকারেন্সির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা:

   - বেসরকারি ক্রিপ্টোকারেন্সির (যেমন বিটকয়েন) জনপ্রিয়তা এবং এর সম্ভাব্য ঝুঁকি মোকাবেলা করা।

   - সরকারি নিয়ন্ত্রণে একটি নিরাপদ এবং স্থিতিশীল ডিজিটাল মুদ্রা প্রদান করা।

 

 জাতীয় ডিজিটাল মুদ্রার বৈশিষ্ট্য:

. কেন্দ্রীয় ব্যাংক দ্বারা ইস্যু:

   - জাতীয় ডিজিটাল মুদ্রা দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক দ্বারা ইস্যু এবং নিয়ন্ত্রিত হবে।

   - এটি রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা হিসাবে বিবেচিত হবে, যেমন নগদ টাকা।

 

. ডিজিটাল লেজার প্রযুক্তি:

   - ব্লকচেইন বা অন্যান্য ডিজিটাল লেজার প্রযুক্তির উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হবে। লেনদেনের স্বচ্ছতা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে

 

. ই-কেওয়াইসি যাচাইকরণ:

   - ব্যবহারকারীদের ইলেকট্রনিক নলেজ ইয়োর কাস্টমার (e-KYC) প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিবন্ধন করতে হবে।

   - নির্বাচন কমিশন বা অন্যান্য সরকারি ডেটাবেসের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর পরিচয় যাচাই করা হবে।

 

. ব্যাংক এবং অনলাইন ওয়ালেট প্রদানকারী:

   - বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলি অনলাইন ওয়ালেট প্রদানকারী হিসাবে কাজ করবে

   - ব্যবহারকারীরা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (MFS) এর মাধ্যমে ডিজিটাল মুদ্রা ব্যবহার করতে পারবে।

 

. বিনিময়যোগ্যতা:

   - জাতীয় ডিজিটাল মুদ্রা দেশের বিহিত মুদ্রার (যেমন টাকা) সাথে বিনিময়যোগ্য হতে পারে

   - মানি চেঞ্জার, এমএফএস এবং এজেন্ট ব্যাংকিং এজেন্টরা টাকা এবং ডিজিটাল মুদ্রার মধ্যে রূপান্তর করতে সাহায্য করবে।

 

. দৃষ্টান্ত: চীন ডিজিটাল ইউয়ান (e-CNY) চালু করেছে, যা বিশ্বের প্রথম প্রধান জাতীয় ডিজিটাল মুদ্রা।

- সুইডেন: e-Krona প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে।

- কানাডা এবং উরুগুয়ে: জাতীয় ডিজিটাল মুদ্রা প্রবর্তনের সম্ভাবনা নিয়ে গবেষণা করছে।

সংক্ষেপে, জাতীয় ডিজিটাল মুদ্রা হল একটি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক ইস্যু করা একটি ডিজিটাল মুদ্রা, যা আর্থিক লেনদেনকে আরও দক্ষ, নিরাপদ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক করে তোলে। এটি নগদহীন অর্থনীতিকে উৎসাহিত করে এবং ক্রিপ্টোকারেন্সির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে সাহায্য করে

 

ক্রিপ্টোকারেন্সির তুলনায় জাতীয় ডিজিটাল মুদ্রার (NDC) স্বাতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্য/ স্বকীয়তা: 

i) বিটকয়েনের ক্ষেত্রে মাইনার ছদ্মবেশী ও বেনামী হয় এবং তারা ব্যবসায়িক লক্ষ্য হিসাবে বিশাল ডেটা সেন্টার স্থাপন করে। সেক্ষেত্রে ন্যাশনাল ডিজিটাল কারেন্সি, কেন্দ্রীয় ব্যাংক একমাত্র মাইনার হবে।

ii) বিটকয়েনের ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীগনও ছদ্মবেশী ও বেনামী হয় এবং জাতীয় ডিজিটাল মুদ্রায় ব্যবহারকারীরা

নির্বাচন কমিশন ডাটাবেস থেকে ই-কেওয়াইসি যাচাইকরণের মাধ্যমে নিবন্ধিত হবেন।

iii) বিটকয়েনের অনলাইন ওয়ালেট প্রদানকারীরা বেনামী পক্ষ (কোন কর্তৃপক্ষ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয়) যখন জাতীয় ডিজিটাল মুদ্রার ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলি অনলাইন ওয়ালেট প্রদানকারী হিসাবে কাজ করবে।

iv) বিটকয়েনের ক্ষেত্রে, এক্সচেঞ্জ কোম্পানিগুলি হল লুকানো কোম্পানি যা কোনো কর্তৃপক্ষ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয়

যখন জাতীয় ডিজিটাল মুদ্রার ক্ষেত্রে, এক্সচেঞ্জ কোম্পানি প্রয়োজন হয় না যদি NDC কে টাকার সাথে বিনিময়যোগ্য না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, অন্যথায় মানি চেঞ্জার এবং/অথবা MFS এবং এজেন্ট ব্যাঙ্কিং এর এজেন্টরা টাকাকে এনডিসিতে রূপান্তর করতে বা তার বিপরীতে মনোনীত এজেন্ট হিসেবে কাজ করতে পারে।

v) এটি ব্যবসা এবং গ্রাহকদের গোপনীয়তা, স্থানান্তরযোগ্যতা, সুবিধাজনক, অ্যাক্সেসযোগ্যতা এবং আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে আর্থিক লেনদেন পরিচালনা করবে।

vi) একটি জটিল আর্থিক ব্যবস্থার জন্য প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণের খরচ হ্রাস করে, বহি সীমান্ত লেনদেনের খরচ কমায় এবং যারা বর্তমানে বিকল্প অর্থ-স্থানান্তর পদ্ধতি ব্যবহার করেন তাদের স্বল্প খরচের বিকল্পগুলি প্রদান করবে।

vii) ডিজিটাল মুদ্রার বর্তমান রূপ বা ক্রিপ্টোকারেন্সির ব্যবহার করার ঝুঁকি হ্রাস করবে। ক্রিপ্টোকারেন্সিগুলি অত্যন্ত পরিবর্তনশীল, তাদের মান ক্রমাগত ওঠানামা করে। এই অস্থিরতা অনেক ক্ষেত্রে গুরুতর আর্থিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে এবং অর্থনীতির সামগ্রিক স্থিতিশীলতাকে প্রভাবিত করতে পারে। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত CBDCs পরিবার, ভোক্তা এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ডিজিটাল মুদ্রা বিনিময়ের একটি নিরাপদ উপায় সৃষ্টি করবে৷

 

 ক্লাউড কম্পিউটিং কি?

ক্লাউড কম্পিউটিং হল ইন্টারনেটের মাধ্যমে কম্পিউটিং সেবা সরবরাহ করা,  যেখানে সার্ভার, স্টোরেজ, ডাটাবেস, নেটওয়ার্কিং, সফটওয়্যার, অ্যানালিটিক্স এবং ইন্টেলিজেন্সের মতো পরিষেবাগুলি প্রদান করা হয়। এটি  দ্রুত উদ্ভাবন, নমনীয় দক্ষতা এবং আর্থিক সুবিধা প্রদান করে। প্রতিষ্ঠানগুলিকে নিজস্ব ডাটা সেন্টার এবং সার্ভার ক্রয় ও পরিচালনা করার পরিবর্তে, তারা প্রয়োজন অনুযায়ী ক্লাউড প্রদানকারী যেমন- Amazon Web Services (AWS), Microsoft Azure এবং Google Cloud Platform (GCP) থেকে প্রযুক্তি পরিষেবা গ্রহণ করতে পারে।

 

ক্লাউড কম্পিউটিং সাধারণত তিনটি প্রধান পরিষেবা মডেলে বিভক্ত:

. ইনফ্রাস্ট্রাকচার ভিত্তিক as a Service (IaaS): ইন্টারনেটের মাধ্যমে ভার্চুয়ালাইজড কম্পিউটিং রিসোর্স প্রদান করে (যেমন ভার্চুয়াল মেশিন, স্টোরেজ)।

. প্ল্যাটফর্ম ভিত্তিক as a Service (PaaS): সাধারণত ইন্টারনেটের মাধ্যমে অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্টের জন্য (যেমন ডাটাবেস, ডেভেলপমেন্ট ফ্রেমওয়ার্ক)হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার টুলস প্রদান করে,

. সফটওয়্যার ভিত্তিক as a Service (SaaS): সফটওয়্যার অ্যাপ্লিকেশন ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রদান করে, সাধারণত সাবস্ক্রিপশন ভিত্তিতে (যেমন- ইমেইল, CRM সিস্টেম)।

 

 ক্লাউড ব্যাংকিং এর সুবিধা

ক্লাউড ব্যাংকিং হল ব্যাংকিং সেক্টরে ক্লাউড কম্পিউটিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে দক্ষতা, সম্প্রপ্রসারণ ক্ষমতা এবং গ্রাহক অভিজ্ঞতা উন্নত করা। এর প্রধান সুবিধাগুলি হল:

. খরচ সাশ্রয়ী:

   - বাস্তব অবকাঠামো নির্মানের মাধ্যমে বৃহৎ বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তা হ্রাস করে।

   - পরিচালন খরচ কমে যায় কারণ ব্যবহার অনুযায়ী মূল্য পরিশোধ নীতি অনুযায়ী খরচ হয়।

 

. প্রসারণ ক্ষমতা:

   - ব্যাংকগুলি চাহিদা অনুযায়ী সহজেই রিসোর্সসমূহ বৃদ্ধি বা হ্রাস করতে পারে।

   - নতুন পরিষেবা এবং অ্যাপ্লিকেশন দ্রুত সংযোজন করা সম্ভব।

 

. গ্রাহক অভিজ্ঞতা উন্নত করা:

   - ডাটা অ্যানালিটিক্স এবং AI এর মাধ্যমে পছন্দসই এবং নিরবিচ্ছিন্ন ব্যাংকিং অভিজ্ঞতা প্রদান করে।

   - ওমনিচ্যানেল বা সর্বজনীন গ্রাহক পরিষেবা ব্যাংকিং সমর্থন করে, যাতে গ্রাহকরা একাধিক প্ল্যাটফর্মে অভিন্ন পরিষেবা অ্যাক্সেস করতে পারে।

 

. উদ্ভাবন এবং তৎপরতা:

   - নতুন আর্থিক পণ্য পরিষেবা দ্রুত উন্নয়ন এবং সংস্থাপন করা সম্ভব।

   - ফিনটেক কোম্পানি এবং তৃতীয় পক্ষের ডেভেলপারদের সাথে সহযোগিতা উৎসাহিত করে।

 

. ডিজাস্টার রিকভারি এবং ব্যবসার ধারাবাহিকতা:

   - ক্লাউড সেবা প্রদানকারী সংস্থা শক্তিশালী ডিজাস্টার রিকভারি ব্যবস্থা রয়েছে, যা আপদকালে ডাটা ব্যাকআপ এবং দ্রুত পুনরুদ্ধার নিশ্চিত করে।

   - সাইবার হুমকি এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়িএকই মানের সেবা প্রদান করে।

 

. নিয়ন্ত্রণমূলক বিধি পরিপালন:

   - ক্লাউড প্রদানকারীরা প্রায়শই টুলস এবং পরিষেবা প্রদান করে যা ব্যাংকগুলিকে নিয়ন্ত্রণমূলক প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে সাহায্য করে। রিপোর্টিং এবং অডিটিং প্রক্রিয়া সহজ করে।

 

 ক্লাউড ব্যাংকিং এর চ্যালেঞ্জ

নানাবিধ সুবিধা থাকা সত্ত্বেও, ক্লাউড ব্যাংকিং এর কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে:

 

. নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তা লঙ্ঘন:

   - সংবেদনশীল আর্থিক ডাটা ক্লাউডে সংরক্ষণ করা ডাটা ফাঁস হওয়া এবং অননুমোদিত অ্যাক্সেসের উদ্বেগ বাড়ায়।

   - ব্যাংকগুলিকে কঠোর ডাটা সুরক্ষা নিয়মাবলী (যেমন GDPR, CCPA) মেনে চলতে হবে।

 

. নিয়ন্ত্রণমূলক বিধি পরিপালন সমস্যা:

   - বিভিন্ন আইনপ্রণয়নকারী সংস্থার ডাটা স্টোরেজ এবং প্রসেসিং সম্পর্কে ভিন্ন ভিন্ন নিয়ম রয়েছে, যা ক্লাউড সেবা গ্রহণকে জটিল করে তোলে।

   - ব্যাংকগুলিকে যে ক্লাউড সেবা প্রদানকারীরা নিয়ন্ত্রণমূলক মানদণ্ড পূরণ করছে এরূপ নিশ্চিত করতে হ

 

. ভেন্ডরের উপর নির্ভরশীলতা:

   - একটি ক্লাউড সেবা প্রদানকারীর উপর নির্ভরশীলতা নির্দিষ্ট ভেন্ডর এর কাছে জিম্মি অবস্থার দিকে নিয়ে যেতে পারে, যা সেবা প্রদানকারী পরিবর্তন বা পরিষেবা মাইগ্রেশন কঠিন করে তোলে।

   - বিভিন্ন ক্লাউড প্ল্যাটফর্মের মধ্যে ইন্টারঅপারেবিলিটি চ্যালেঞ্জিং হতে পারে।

. ডাটা সার্বভৌমত্ব:

   - ক্লাউডে সংরক্ষিত ডাটা যেখানে ক্লাউড প্রদানকারীর সার্ভার অবস্থিত সেই দেশের আইনের অধীন হতে পারে, যা সার্বভৌমত্বের সমস্যা তৈরি করে।

   - ব্যাংকগুলিকে নিশ্চিত করতে হবে যে ডাটা স্থানীয় আইন মেনে সংরক্ষণ এবং প্রসেস করা হয়।

 

. নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট এবং উচ্চ মাত্রার ব্যান্ডউইথ:

      - উচ্চতর প্রাপ্যতা এবং কম লেটেন্সি নিশ্চিত করতে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক অবকাঠামো প্রয়োজন।

-এর অভাবে  ক্লাউড-ভিত্তিক পরিষেবাগুলি লেটেন্সি সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে, যা রিয়েল-টাইম ব্যাংকিং অ্যাপ্লিকেশনের কার্যক্ষমতাকে প্রভাবিত করে।

 

. ডাটা মাইগ্রেশনে সমস্যা:

   - বিদ্যমান সিস্টেম থেকে ক্লাউডে ডেটা স্থানান্তরের অনেক রকম ঝুঁকি রয়েছে অর্থাৎ বিপুল পরিমাণ ডেটা, অদক্ষ প্রযুক্তিবিদ, অসামঞ্জস্যপূর্ণ  লিগ্যাসি সফ্টওয়্যার ইত্যাদি।   -আর এই বাধা কাটাতে  উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ব্যবস্থাপনা এবং প্রশিক্ষণ প্রচেষ্টা প্রয়োজন হয়

 

. খরচ ব্যবস্থাপনা:

   - যদিও ক্লাউড কম্পিউটিং খরচ কমাতে পারে, রিসোর্সের অপব্যবহার অপ্রত্যাশিত খরচের দিকে নিয়ে যেতে পারে।

   - খরচ বৃদ্ধি এড়াতে ব্যাংকগুলিকে ক্লাউড ব্যবহার মনিটর এবং অপ্টিমাইজ করতে হবে।

ক্লাউড কম্পিউটিং ব্যাংকিং সেক্টরের জন্য উল্লেখযোগ্য সুবিধা প্রদান করে, যার মধ্যে খরচ দক্ষতা, স্কেলেবিলিটি এবং উন্নত গ্রাহক অভিজ্ঞতা অন্তর্ভুক্ত। তবে, এটি সুরক্ষা, নিয়ন্ত্রণমূলক সম্মতি এবং ভেন্ডর লক-ইন সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জও উপস্থাপন করে। ব্যাংকগুলিকে এই বিষয়গুলি সাবধানে মূল্যায়ন করতে হবে এবং সম্পূর্ণ সুবিধা গ্রহণ করার সময় ঝুঁকি হ্রাস করার জন্য একটি ব্যাপক ক্লাউড কৌশল উন্নয়ন করতে হবে।

 

ব্যাংকিং সেক্টরে প্রযুক্তি ব্যবহারে বর্তমান প্রবণতা (current trend in banking in respect to technology use):

ব্যাংকিং সেক্টরে বর্তমানে ব্যবহৃত কিছু প্রধান প্রযুক্তির মধ্যে রয়েছে:

. গ্রাহকদের স্বনির্ভর-অন-বোর্ডিং (ই-কেওয়াইসি)

. ডিজিটাল মুদ্রা (ক্রিপ্টোকারেন্সি) ব্যবহার করা হচ্ছে যা ভৌত মুদ্রার ব্যবহার হ্রাস করবে।

.  যেকোনো ধরণের লেনদেন, তহবিল স্থানান্তর, অনুসন্ধান, ব্যালেন্স/স্টেটমেন্ট, ই-পেমেন্ট, ই-লোন ইত্যাদির জন্য আর্থিক অ্যাপ।

. সিআরএম ব্যবহার করে কার্ডবিহীন এটিএম উত্তোলন, জমা ও উত্তোলন

.  কিউআর এবং এনএফসি পেমেন্ট।

. আইভিআর (ইন্টারেক্টিভ ভয়েস রেসপন্স) এবং ভিডিও ব্যাংকিং।

. ই-কমার্স

. ফিঙ্গারপ্রিন্ট, ফেস ডিটেকশন, ভয়েস ব্যাংকিং

 

ব্যাংকিং সেক্টরে আসন্ন এআই ভিত্তিক প্রযুক্তি:

. ব্লক চেইন প্রযুক্তির সাহায্যে ভার্চুয়ালাইজেশন এবং ক্লাউড ভিত্তিক ব্যাংকিং।

১০. ভার্চুয়াল এবং অগমেন্টেড রিয়েলিটির ব্যবহার।

১১. মেশিন লার্নিং, ডেটা সায়েন্স ব্যবহার করে গ্রাহকের চাহিদা ভিত্তিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক পরিষেবা

১২.  BaaS (ব্যাংকিং ভিত্তিক সেবা), Paas (প্ল্যাটফর্ম ভিত্তিক সেবা) চালু হতে চলেছে।

 

ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের যথাযথ সুবিধা গ্রহণের জন্য নিরাপত্তা অন্যতম প্রধান উদ্বেগের বিষয় হবে। শক্তিশালী

সাইবার নিরাপত্তা, ব্যবহারকারীর পরিচয়, সুরক্ষিত ডিভাইস, অবস্থানকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

পরিশেষে, প্রযুক্তির আশীর্বাদে রূপান্তর ঘটবে এবং বাজারের শেয়ার নিশ্চিত করতে, ব্যাংকগুলিকে ভার্চুয়ালাইজেশন এবং ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের উপর খুব জোরদারভাবে মনোনিবেশ করতে হবে।

 

রাউটিং নাম্বার এর তাৎপর্য :

রাউটিং নাম্বার হলো ৯ ডিজিটের এমন একটি ইউনিক কোড যা যেকেন ব্যাংকের যেকোন শাখার পরিচয় বহন করে। সাধারণত ব্যাংক চেকের পাতায়, চেক নম্বর এর বাম পাশে ৯ ডিজিটের ব্যাংক রাউটিং নম্বর মুদ্রিত থাকে। এমআইসিআর (ম্যাগনেটিক ইঙ্ক ক্যারেক্টার রিডেবল) চেকের পাতায় যথারীতি বাম দিকে উপরের অংশ বরাবর ৯ ডিজিটের রাউটিং নম্বরটি মুদ্রিত থাকার পাশাপাশি চেকের পাতার সিগনেচার লাইনের নিচে অ্যাকাউন্ট নম্বর, চেক নম্বরের পাশাপাশি রাউটিং নাম্বারটিও মুদ্রিত থাকে।  

সকল ব্যাংকের প্রতিটি শাখার জন্য ইউনিক রাউটিং নাম্বার হয়ে থাকে, যা দিয়ে সহজেই একটি ব্যাংকের নির্দিষ্ট কোন ব্রাঞ্চকে সহজেই আইডিন্টিফাই করা যায় । একজন গ্রাহকের একই ব্যাংকে একাধিক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন, যেখানে প্রতিটি অ্যাকাউন্টের জন্য আলাদা অ্যাকাউন্ট নম্বর থাকবে, কিন্তু রাউটিং নম্বর একই থাকবে। এটি পেমেন্ট সঠিক ব্যাংক এবং শাখায় পাঠাতে সাহায্য করে। শাখা নির্ধারন ছাড়াও আন্তব্যাংক চেক ট্রান্সফার, চেক ডিপোজিট, ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার, অনলাইন পেমেন্ট, চেক ক্লিয়ারিং, বিইএফটিএন, এনপিএসবি, আরটিজিএস ফান্ড ট্রান্সফার ইত্যাদি কাজে ব্যাংক রাউটিং নম্বর এর উপযোগিতা অপরিহার্য।

এই বিশেষ কোডের প্রথম তিন সংখ্যা ব্যাংক কোড, পরবর্তী দুই সংখ্যা জেলা কোড, পরবর্তী তিন সংখ্যা শাখা কোড এবং শেষ সংখ্যাটি চেক ডিজিটের সংমিশ্রণে তৈরী হয়।

 

ERP সিস্টেম কী? 

ERP (Enterprise Resource Planning) হল একটি সমন্বিত কম্পিউটার-ভিত্তিক সিস্টেম, যা সংস্থার অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক সম্পদ পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হয়। এতে দৃশ্যমান সম্পদ, আর্থিক সম্পদ, উপকরণ এবং মানব সম্পদ অন্তর্ভুক্ত থাকে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো, প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ সকল ব্যবসায়িক কার্যক্রমের মধ্যে তথ্য প্রবাহ সহজ করা এবং বাইরের অংশীদারদের সঙ্গে সংযোগ ব্যবস্থাপনা করা। এটি একটি কেন্দ্রীয় ডাটাবেসের উপর ভিত্তি করে তৈরি এবং সাধারণত একটি অভিন্ন কম্পিউটিং প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে। ERP সিস্টেম সমস্ত ব্যবসায়িক কার্যক্রমকে একত্রিত করে, যা সমগ্র প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি অভিন্ন ও উপযোগী পরিবেশ তৈরি করে।

ব্যাংকগুলিতে ERP (এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্ল্যানিং) সফটওয়্যার এর ভুমিকা/ কাজ:

.  তথ্য বিশ্লেষণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ: ERP সমস্ত ব্যাংকিং অপারেশনকে একটি প্ল্যাটফর্মে একীভূত করে, যা গ্রাহক তথ্য, লেনদেন, অ্যাকাউন্ট ইত্যাদির জন্য একটি কেন্দ্রীভূত ডেটাবেস সরবরাহ করে। রিয়েল-টাইম তথ্য বিশ্লেষণ করে যা উন্নত অর্থনৈতিক পরিকল্পনা সিদ্ধান্ত গ্রহনে সহায়তা করে

. পরিচালনা দক্ষতা বৃদ্ধি হিসাব ব্যবস্থাপনা, ঋণ প্রক্রিয়াকরণ, কমপ্লায়েন্স রিপোর্টিং ইত্যাদি স্বয়ংক্রিয় করে, যা ম্যানুয়াল ত্রুটি এবং শ্রম কমায়।

. গ্রাহক সম্পর্ক ব্যবস্থাপনা (CRM)  - গ্রাহক তথ্যে৩৬0-ডিগ্রি ভিউ প্রদান করে, যা পছন্দসই সেবা এবং দ্রুত প্রতিক্রিয়া প্রদান সম্ভব করে। গ্রাহকের তথ্য একত্রিত করে উন্নত পরিষেবা ও পছন্দসই ব্যাংকিং অভিজ্ঞতা প্রদান করে।

. প্রকিউরমেন্ট ও ভেন্ডর ব্যবস্থাপনাবিভিন্ন সরঞ্জাম কেনাকাটা ও সরবরাহকারী সম্পর্ক সহজতর করে।

. আর্থিক ব্যবস্থাপনা - বাজেটিং, ফোরকাস্টিং, আর্থিক রিপোর্টিং ইত্যাদি প্রক্রিয়া ব্যবস্থাপনা করে।

. ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা  - ক্রেডিট ঝুঁকি, মার্কেট ঝুঁকি, পরিচালনা ঝুঁকি ইত্যাদি শনাক্তকরণ এবং প্রশমন করে।

. খরচ কমানো  - প্রক্রিয়াগুলি স্বয়ংক্রিয় করে এবং ম্যানুয়াল হস্তক্ষেপ কমিয়ে পরিচালন খরচ কমায়।

.  পরিবর্ধন পরিমার্জন:   - ব্যাংকের অগ্রগতির সাথে সাথে ERP সিস্টেম লেনদেনের পরিমাণ, নতুন প্রোডাক্ট এবং অপারেশন সম্প্রসারণ করতে পারে।

. আর্থিক ব্যবস্থাপনা ও রিপোর্টিংলেনদেন, বাজেটিং, এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার রিপোর্টিং সহজ করে।

১০. অন্যান্য সিস্টেমের সাথে ইন্টিগ্রেশন - ERP সফটওয়্যার কোর ব্যাংকিং সলিউশন, CRM, এবং পেমেন্ট গেটওয়ের সাথে ইন্টিগ্রেট করে।

১১. মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা - পে-রোল, রিক্রুটমেন্ট, কর্মী মূল্যায়ন ইত্যাদি ব্যবস্থাপনা করে।

১২. জাল জালিয়াতি শনাক্তকরণ এবং প্রতিরোধের জন্য উন্নত মনিটরিং টুলস প্রদান করে।

১৩. সহযোগিতা উন্নতি বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে যোগাযোগ এবং সহযোগিতা উন্নত করে।

১৪. কৌশলগত পরিকল্পনা- মার্কেট ট্রেন্ড, গ্রাহক আচরণ, এবং পরিচালনগত কার্যক্ষমতা সম্পর্কে অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে।

১৫. বিধি নিষেধ পরিপালন: ERP সিস্টেম ব্যাংকগুলিকে স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক নিয়মকানুন (যেমন: Basel III, GDPR, AML) মেনে চলতে সাহায্য করে।

সংক্ষেপে বলা যায় যে, ERP সফটওয়্যার ব্যাংকগুলিকে তাদের জটিল অপারেশন ব্যবস্থাপনা, নিয়মকানুন মেনে চলা, এবং গ্রাহক সেবা প্রদানের পাশাপাশি লাভজনকতা বজায় রাখতে এবং ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

 

CRM (কাস্টমার রিলেশনশিপ ম্যানেজমেন্ট) :

CRM (Customer Relationship Management)  বা গ্রাহক সম্পর্ক ব্যবস্থাপনা হলো ক্রেতা, গ্রাহক এবং বিক্রয় সম্ভাবনার সঙ্গে একটি প্রতিষ্ঠানের আন্তঃসম্পর্ক ব্যবস্থাপনার জন্য বহুল ব্যবহৃত একটি কৌশল। এটি প্রযুক্তির সাহায্যে ব্যবসায়িক প্রক্রিয়াগুলোকে সংগঠিত, স্বয়ংক্রিয় এবং সমন্বিত করতে সহায়তা করেবিশেষত বিক্রয় কার্যক্রমের জন্য, তবে বিপণন, গ্রাহক পরিষেবা এবং প্রযুক্তিগত সহায়তার ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হয়।

CRM-এর প্রধান লক্ষ্য হলো নতুন গ্রাহক খুঁজে বের করা, আকৃষ্ট করা এবং অর্জন করা, বিদ্যমান গ্রাহকদের ধরে রাখা ও যত্ন নেওয়া, পুরনো গ্রাহকদের পুনরায় ফিরিয়ে আনা এবং বিপণন ও গ্রাহক পরিষেবার ব্যয় হ্রাস করাএটি একটি প্রতিষ্ঠানব্যাপী ব্যবসায়িক কৌশলকে নির্দেশ করে, যার মধ্যে গ্রাহক সংযোগ সংক্রান্ত সকল বিভাগ অন্তর্ভুক্ত

 

ব্যাংকগুলিতে CRM (কাস্টমার রিলেশনশিপ ম্যানেজমেন্ট) সফটওয়্যার ব্যবহারের গুরুত্ব:

ব্যাংকগুলিতে CRM (কাস্টমার রিলেশনশিপ ম্যানেজমেন্ট) সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয় গ্রাহকদের সাথে সম্পর্ক উন্নত করতে, সেবার মান বৃদ্ধি করতে এবং ব্যবসায়িক বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে। নিচে ব্যাংকগুলিতে CRM সফটওয়্যার ব্যবহারের প্রধান কারণগুলি উল্লেখ করা হলো:

 

 ১. গ্রাহক ডেটা কেন্দ্রীকরণ - CRM সিস্টেম গ্রাহকদের তথ্য (যেমন: যোগাযোগের বিবরণ, লেনদেনের ইতিহাস, পছন্দ-অপছন্দ) একটি প্ল্যাটফর্মে সংরক্ষণ করে, যা প্রতিটি গ্রাহকের সম্পর্কে একটি ৩৬০-ডিগ্রি ভিউ প্রদান করে।

 

 ২. গ্রাহক সেবা উন্নয়ন  - গ্রাহকদের প্রশ্নের দ্রুত উত্তর দিতে এবং সমস্যা দ্রুত সমাধান করতে সাহায্য করে।  ফোন, ইমেল, চ্যাট, শাখা পরিদর্শন ইত্যাদি বিভিন্ন চ্যানেলের মাধ্যমে গ্রাহকদের সাথে যোগাযোগ ট্র্যাক করে।

 

 ৩.  স্বনির্বাচিত মার্কেটিং - গ্রাহক ডেটা বিশ্লেষণ করে টার্গেটেড মার্কেটিং ক্যাম্পেইন এবং পছন্দসই অফার তৈরি করে। গ্রাহকদের আচরণ এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সম্পূরক পন্য এবং অধিকতর উন্নত পন্য বিক্রয় (cross-sell and upsell ) করতে সাহায্য করে (যেমন: ঋণ, ক্রেডিট কার্ড, বীমা)

 

 ৪. গ্রাহক ধরে রাখা - ঝুঁকিপূর্ণ গ্রাহকদের শনাক্ত করে এবং তাদের ধরে রাখার জন্য সক্রিয় ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয় গ্রাহকদের প্রয়োজন বুঝে এবং তা পূরণ করে সম্পর্ক মজবুত করে।

 

 ৫. বিক্রয় প্রক্রিয়া সহজীকরণ- লিড ট্র্যাকিং, পাইপলাইন ম্যানেজমেন্ট এবং পর্যালোচনা স্বয়ংক্রিয় করে বিক্রয় টিমের দক্ষতা বৃদ্ধি করে।গ্রাহকদের পছন্দ-অপছন্দ সম্পর্কে অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে, যা বিক্রয় টিমকে তাদের পদ্ধতি নির্ধারণ করতে সাহায্য করে।

 

 ৬. ডেটা-চালিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ-  গ্রাহক আচরণ, ক্যাম্পেইন কার্যদক্ষতা এবং বিক্রয় মেট্রিক্স ট্র্যাক করার জন্য অ্যানালিটিক্স এবং রিপোর্টিং টুলস প্রদান করে।- গ্রাহক সন্তুষ্টি এবং লাভজনকতা বৃদ্ধির জন্য তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে।

 

 ৭. মাল্টি-চ্যানেল ইন্টিগ্রেশন - সোশ্যাল মিডিয়া, ইমেল, এসএমএস ইত্যাদি বিভিন্ন যোগাযোগ চ্যানেলের সাথে ইন্টিগ্রেশন করে, যা গ্রাহকদের একটি নিরবিচ্ছিন্ন অভিজ্ঞতা প্রদান করে। সব চ্যানেলে সামঞ্জস্যপূর্ণ যোগাযোগ নিশ্চিত করে।

 

 ৮. রুটিন কাজ স্বয়ংক্রিয়করণ   - রিমাইন্ডার পাঠানো, গ্রাহক রেকর্ড আপডেট করা, ফলো-আপ শিডিউল করা ইত্যাদি রুটিন কাজ স্বয়ংক্রিয় করে, যা সময় বাঁচায় এবং ত্রুটি কমায়।

 

 ৯. গ্রাহকের শ্রেণীবিভাগ  - ভৌগোলিক আচরণ এবং লেনদেনের ইতিহাসের ভিত্তিতে গ্রাহকদের সেগমেন্ট করে, যা আরও কাঙ্খিত এবং কার্যকর মার্কেটিং কৌশল সক্ষম করে।

 

 ১১. দলীয় সহযোগীতা উন্নতি - সেলস, কাস্টমার সার্ভিস, মার্কেটিং ইত্যাদি টিমগুলির মধ্যে গ্রাহক সম্পর্কিত তথ্য শেয়ার করে যোগাযোগ এবং সহযোগিতা উন্নত করে।

 

 ১২. গ্রাহক ফিডব্যাক ব্যবস্থাপনা - গ্রাহক ফিডব্যাক সংগ্রহ এবং বিশ্লেষণ করে সেবার মান উন্নত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয়

 

 ১৩. লয়্যাল্টি প্রোগ্রাম   - গ্রাহক লয়্যাল্টি প্রোগ্রাম ব্যবস্থাপনা এবং ট্র্যাক করে, দীর্ঘমেয়াদী গ্রাহকদের পুরস্কৃত করে এবং পুনরাবৃত্ত ব্যবসা উৎসাহিত করে।

 

 ১৪. রিয়েল-টাইম নোটিফিকেশন  - গ্রাহকদের রিয়েল-টাইম অ্যালার্ট এবং নোটিফিকেশন পাঠায় (যেমন: পেমেন্ট রিমাইন্ডার, অ্যাকাউন্ট আপডেট) এবং ব্যাংক স্টাফদের (যেমন: উচ্চ-প্রাধান্য সমস্যা)।

 

 ১৫. পরিবর্ধন ও পরিমার্জন:   - ব্যাংকের বৃদ্ধির সাথে সাথে ক্রমবর্ধমান গ্রাহক এবং লেনদেনের সংখ্যা সামলানোর জন্য কৌশল তৈরী করে।

 

 ১৬. প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা - ব্যাংকগুলিকে উচ্চমানের গ্রাহক অভিজ্ঞতা এবং ব্যক্তিগতকৃত সেবা প্রদানের মাধ্যমে প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা প্রদান করে।

 

CRM সফটওয়্যার ব্যাংকগুলির জন্য অপরিহার্য, কারণ এটি গ্রাহকদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলে, অপারেশনাল দক্ষতা বৃদ্ধি করে এবং রাজস্ব বৃদ্ধি করে। গ্রাহক ডেটা ব্যবহার করে এবং প্রক্রিয়াগুলি স্বয়ংক্রিয় করে, ব্যাংকগুলি ব্যক্তিগতকৃত সেবা প্রদান করতে পারে, গ্রাহক সন্তুষ্টি বৃদ্ধি করতে পারে এবং আর্থিক খাতে প্রতিযোগিতামূলক থাকতে পারে।

 

CRM (কাস্টমার রিলেশনশিপ ম্যানেজমেন্ট) সফটওয়্যার ব্যবহারের ক্ষেত্রসমূহ (fields of application of a CRM software):

 

CRM (কাস্টমার রিলেশনশিপ ম্যানেজমেন্ট) সফটওয়্যার গ্রাহকদের সাথে সম্পর্ক ও আন্তঃযোগাযোগ ব্যবস্থাপনার জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। নিচে বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হলো:

 

 ১. বিক্রয় ব্যবস্থাপনা (Sales Management): CRM সফটওয়্যার বিক্রয় প্রক্রিয়াকে সহজ করে। এটি গ্রাহকের ইন্টারঅ্যাকশন ট্র্যাক করে, লিড (Lead) বা সম্ভাব্য গ্রাহকদের তথ্য সংরক্ষণ করে এবং তাদেরকে বিক্রয় ফানেলের মাধ্যমে পরিচালনা করে। এছাড়াও, এটি অটোমেটেড রেমাইন্ডার, ফলো-আপ এবং ডিল ক্লোজিং প্রক্রিয়াকে সহজ করে, যা বিক্রয় টিমের উৎপাদনশীলতা বাড়ায়।

 

 ২. মার্কেটিং অটোমেশন (Marketing Automation) CRM মার্কেটিং টিমকে কাঙ্খিত ক্যাম্পেইন পরিচালনা করতে সাহায্য করে। এটি গ্রাহকের আচরণ, পছন্দ এবং ক্রয় ইতিহাস বিশ্লেষণ করে তাদের পছন্দসই মার্কেটিং মেসেজ পাঠায়। এছাড়াও, এটি ক্যাম্পেইনের পারফরম্যান্স চিহ্নিত করে, যেমন- কতজন গ্রাহক ক্লিক করেছে বা আগ্রহী হয়েছে, যা মার্কেটিং টিমকে ভবিষ্যতের ক্যাম্পেইন উন্নত করতে সাহায্য করে।

 

 ৩. গ্রাহক সেবা ও সমর্থন (Customer Service and Support): CRM গ্রাহক সেবা টিমকে গ্রাহকের অভিযোগ, জিজ্ঞাসা বা সমস্যা দ্রুত সমাধান করতে সাহায্য করে। এটি টিকেট সিস্টেমের মাধ্যমে গ্রাহকের সমস্যা ট্র্যাক করে এবং সাপোর্ট টিমকে সঠিক তথ্য সরবরাহ করে। এছাড়াও, এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বার বার জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ) প্রদর্শন করে, যা গ্রাহকদের স্বয়ংক্রিয়ভাবে তথ্য অনুসন্ধানে সাহায্য করে।

 

 ৪. পরিচিতি ব্যবস্থাপনা (Contact Management): CRM গ্রাহক এবং সম্ভাব্য গ্রাহকদের সমস্ত তথ্য একটি কেন্দ্রীয় ডাটাবেসে সংরক্ষণ করে। এটি গ্রাহকের নাম, যোগাযোগের তথ্য, ক্রয় ইতিহাস, পছন্দ-অপছন্দ এবং পূর্ববর্তী পারস্পরিক মিথষ্ক্রিয়া অনুসরণ করেএই তথ্য সেলস, মার্কেটিং এবং সাপোর্ট টিমের জন্য সহজলভ্য হয়, যা গ্রাহকদের সাথে আরও ভালো যোগাযোগ স্থাপনে সাহায্য করে।

 

 ৫. ডেটা বিশ্লেষণ ও রিপোর্টিং (Analytics and Reporting): CRM সফটওয়্যার গ্রাহকের ডেটা বিশ্লেষণ করে গুরুত্বপূর্ণ অন্তদৃষ্টি প্রদান করে। এটি বিক্রয় ট্রেন্ড, গ্রাহকের আচরণ, মার্কেটিং ক্যাম্পেইনের পারফরম্যান্স এবং অন্যান্য মেট্রিক্স অনুসরণ করে। এই ডেটা ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সাহায্য করে এবং ভবিষ্যতের কৌশল উন্নত করে।

 

. গ্রাহক প্রতিক্রিয়া ও জরিপ (Customer Feedback and Surveys): CRM গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া সংগ্রহ করে এবং জরিপ পরিচালনা করে। এই ডেটা ব্যবসায়িক প্রক্রিয়া, পণ্য এবং পরিষেবা উন্নত করতে ব্যবহৃত হয়।

 ৭. ওয়ার্কফ্লো অটোমেশন (Workflow Automation): CRM ব্যবসায়িক প্রক্রিয়াগুলিকে স্বয়ংক্রিয় করে কাজের গতি বাড়ায়। এটি রুটিন কাজ যেমন ডেটা এন্ট্রি, নোটিফিকেশন পাঠানো, বা টাস্ক রিমাইন্ডার অটোমেট করে, যা সময় বাঁচায় এবং ভুলের সম্ভাবনা কমায়।

 ৮. ইমেইল ইন্টিগ্রেশন (Email Integration): CRM ইমেইল সিস্টেমের সাথে সংযুক্ত হয়ে গ্রাহকের সাথে ইমেইল যোগাযোগ অনুসরণ করে। এটি ইমেইল ক্যাম্পেইন তৈরি, পাঠানো এবং রেসপন্স পর্যবেক্ষণ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও, এটি ইমেইল থ্রেডগুলিকে গ্রাহকের প্রোফাইলের সাথে সংযুক্ত করে, যাতে সমস্ত অনুসরণ মিথষ্ক্রিয়া এক জায়গায় সংরক্ষিত থাকে।

 ৯. সোশ্যাল মিডিয়া ইন্টিগ্রেশন (Social Media Integration): CRM সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের সাথে সংযুক্ত হয়ে গ্রাহকের মিথষ্ক্রিয়া অনুসরণ করে। এটি ব্র্যান্ড মেনশন, কমেন্ট এবং মেসেজ মনিটর করে, যা গ্রাহকদের সাথে আরও ভালোভাবে জড়িত হতে সাহায্য করে। এছাড়াও, এটি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ক্যাম্পেইন ট্র্যাক করে।

 ১০. ই-কমার্স ইন্টিগ্রেশন (E-commerce Integration) 

CRM ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের সাথে সংযুক্ত হয়ে গ্রাহকের ক্রয় ইতিহাস, পছন্দ এবং আচরণ বিশ্লেষণ করে। এটি পছন্দসই প্রোডাক্ট পরামর্শ এবং অফার প্রদান করে, যা গ্রাহকদের ক্রয় করতে উৎসাহিত করে।

 ১১. ফিল্ড সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট (Field Service Management): CRM ফিল্ড সার্ভিস টিমকে কাজের সময়সূচী, অ্যাসাইনমেন্ট এবং সরঞ্জাম ব্যবস্থাপনা করতে সাহায্য করে। এটি গ্রাহকদের কাছে সময়মতো পরিষেবা সরবরাহ নিশ্চিত করে।

. পার্টনার রিলেশনশিপ ম্যানেজমেন্ট (Partner Relationship Management): CRM ব্যবসায়িক পার্টনার এবং চ্যানেল পার্টনারদের সাথে সম্পর্ক ব্যবস্থাপনা করে। এটি পার্টনারদের পারফরম্যান্স অনুসরণ করে এবং সহযোগিতা বৃদ্ধি করে।

CRM সফটওয়্যার রিটেইল, স্বাস্থ্যসেবা, ব্যাংকিং, রিয়েল এস্টেট, টেলিকমিউনিকেশন এবং অন্যান্য শিল্পে ব্যবহার করা হয়। এটি গ্রাহক সন্তুষ্টি বাড়ায়, ব্যবসায়িক প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং বিক্রয় ও মার্কেটিং কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করে।

 

-মেইল:

ই-মেইল, "ইলেকট্রনিক মেইল" এর সংক্ষিপ্ত রূপ, ইন্টারনেট বা অন্যান্য কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ডিজিটাল বার্তা পাঠানো এবং গ্রহণ করার একটি পদ্ধতি। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারী দ্রুত এবং কার্যকরভাবে টেক্সট, ছবি, ফাইল এবং অন্যান্য ডেটা আদান-প্রদান করতে পারেনএটিকে ঐতিহ্যবাহী মেইলের একটি আধুনিক, ডিজিটাল সংস্করণ হিসেবে গন্য করা হয়, তবে কাগজের চিঠির পরিবর্তে বার্তাগুলো ইলেকট্রনিকভাবে একটি ই-মেইল ঠিকানার (যেমন, username@domain.com) সাথে সংযুক্ত ইনবক্সে পাঠানো হয়।

 

এটি কীভাবে কাজ করে, তবে এটি বার্তা পাঠানোর জন্য SMTP (সিম্পল মেইল ট্রান্সফার প্রোটোকল) এর এবং গ্রহণের জন্য POP3 বা IMAP এর মতো প্রোটোকলের উপর নির্ভর করে সহজ কথায়, ব্যবহারকারী একটি বার্তা লিখে সেন্ড বোতামে ক্লিক করেন, এবং এটি প্রায় সঙ্গে সঙ্গে কারও ডিজিটাল মেইলবক্সে পৌঁছে যায়

 

ইমেইল সফটওয়্যার এর গুরুত্ব:

ইমেইল সফটওয়্যার আধুনিক যোগাযোগের একটি অপরিহার্য অংশ, যা ব্যক্তিগত, পেশাদার এবং প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে একটি মৌলিক ভূমিকা পালন করে। এর গুরুত্ব নিম্নলিখিত কয়েকটি প্রধান কার্যকারিতা এবং সুবিধার মাধ্যমে প্রকাশ পায়:

 

 ১. দক্ষ যোগাযোগ: ইমেইল সফটওয়্যার তাত্ক্ষণিক যোগাযোগ সম্ভব করে, যা ব্যক্তি এবং গোষ্ঠীকে বার্তা, নথি এবং তথ্য বিনিময় করতে সাহায্য করে। এটি ঐতিহ্যবাহী ডাকে ব্যবস্থার বিলম্ব দূর করে এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করে।

 

 ২. কেন্দ্রীয় তথ্য ব্যবস্থাপনা:- এটি যোগাযোগের একটি কেন্দ্রীয় প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে, যেখানে সমস্ত বার্তা সংরক্ষিত থাকে। এটি অতীতের আলোচনাগুলি ট্র্যাক করা, রেফারেন্স করা এবং সংগঠিত রেকর্ড রাখাকে সহজ করে তোলে।

 

 ৩. পেশাদারিত্ব এবং আনুষ্ঠানিকতা: ইমেইল ব্যবসা এবং একাডেমিক ক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগের জন্য একটি সর্বজনস্বীকৃত মাধ্যম। ইমেইল সফটওয়্যার প্রায়ই স্বাক্ষর, টেমপ্লেট এবং ফরম্যাটিং সরঞ্জাম অন্তর্ভুক্ত করে, যা বার্তাগুলির পেশাদারিত্ব বাড়ায়।

 

 ৪. সহযোগিতা এবং উৎপাদনশীলতা:- আধুনিক ইমেইল সফটওয়্যার ক্যালেন্ডার, টাস্ক ম্যানেজার এবং সহযোগিতা সরঞ্জামগুলির সাথে সংহত হয়, যা ব্যবহারকারীদের মিটিং নির্ধারণ, রিমাইন্ডার সেট করা এবং ফাইল শেয়ার করতে সাহায্য করে। এটি উৎপাদনশীলতা বাড়ায় এবং কাজের প্রক্রিয়াকে সহজ করে।

 

৫. প্রবেশযোগ্যতা এবং গতিশীলতা: ক্লাউড-ভিত্তিক ইমেইল পরিষেবার মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা যেকোনো ডিভাইস থেকে তাদের ইমেইল অ্যাক্সেস করতে পারেন। এই নমনীয়তা দূরবর্তী কাজ, ভ্রমণ এবং চলাফেরার সময় সংযুক্ত থাকার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

 

 ৬. নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তা: ইমেইল সফটওয়্যার প্রায়ই এনক্রিপশন, স্প্যাম ফিল্টার এবং প্রমাণীকরণ প্রোটোকল অন্তর্ভুক্ত করে, যা সংবেদনশীল তথ্য সুরক্ষিত করে এবং অননুমোদিত অ্যাক্সেস প্রতিরোধ করে। এটি ব্যবসায়িক গোপনীয়তা রক্ষার জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

 

 ৭. খরচ-সাশ্রয়ী: অন্যান্য যোগাযোগ পদ্ধতির তুলনায় ইমেইল অপেক্ষাকৃত সাশ্রয়ী। অনেক ইমেইল প্ল্যাটফর্ম বিনামূল্যে বা সাশ্রয়ী মূল্যের পরিকল্পনা অফার করে, যা সীমিত বাজেটের ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের জন্য এটি অ্যাক্সেসযোগ্য করে তোলে।

 

 ৮. সমগ্র বিশ্বে পৌঁছানো: ইমেইল ভৌগোলিক সীমানা অতিক্রম করে, বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের কারো সাথে যোগাযোগ সম্ভব করে। এটি আন্তর্জাতিক ব্যবসা, নেটওয়ার্কিং এবং সীমানার বাধা পেরিয়ে সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য অপরিহার্য।

 

 ৯. স্বয়ংক্রিয়তা এবং সমন্বিত ব্যবস্থা: উন্নত ইমেইল সফটওয়্যার স্বয়ংক্রিয় প্রতিক্রিয়া, ফিল্টার এবং নিয়মের মতো বৈশিষ্ট্যগুলি সমর্থন করে, যা সময় বাঁচায় এবং ম্যানুয়াল শ্রম কমায়। অন্যান্য সরঞ্জামের সাথে ইন্টিগ্রেশন (যেমন- CRM সিস্টেম, প্রকল্প ব্যবস্থাপনা প্ল্যাটফর্ম) এর উপযোগিতা আরও বাড়ায়

 

 ১০. পরিবেশগত প্রভাব: কাগজ-ভিত্তিক যোগাযোগ প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে, ইমেইল সফটওয়্যার বর্জ্য হ্রাস এবং টেকসই যোগাযোগ অনুশীলনকে সমর্থন করে, যা পরিবেশ-বান্ধব পদ্ধতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

১১. আর্কাইভিং ব্যবস্থা: ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে, ইমেইল সফটওয়্যার আর্কাইভিং ক্ষমতা প্রদান করে, যা আইনি এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার শর্তাবলী পূরণে সাহায্য করে। এটি নিশ্চিত করে যে গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ সংরক্ষিত এবং প্রয়োজন হলে পুনরুদ্ধারযোগ্য।

 সংক্ষেপে, ইমেইল সফটওয়্যার আজকের ডিজিটাল যুগের একটি অপরিহার্য সরঞ্জাম, যা দক্ষ, নিরাপদ এবং পেশাদার যোগাযোগকে সমর্থন করে। এটি সহযোগিতা, উৎপাদনশীলতা এবং বৈশ্বিক সংযোগকে শক্তিশালী করে। এর বহুমুখিতা এবং অভিযোজনযোগ্যতা এটিকে ব্যক্তিগত এবং পেশাদার জীবনের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান করে তোলে।

 

 ভাইরাস এবং ম্যালওয়্যারের মধ্যে পার্থক্য:

ভাইরাস এবং ম্যালওয়্যার একই ধরনের বিপজ্জনক সফটওয়্যার হলেও এদের মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে। নিচে তাদের মধ্যে পার্থক্য এবং উদাহরণ দেওয়া হলো:

- সংজ্ঞা: ভাইরাস হল এক ধরনের ম্যালওয়্যার যা একটি বৈধ প্রোগ্রাম বা ফাইলের সাথে সংযুক্ত হয়ে অন্য ফাইল এবং সিস্টেমে ছড়িয়ে পড়ে যখন সেই প্রোগ্রামটি চালানো হয়।

-ম্যালওয়্যার (ম্যালিসিয়াস সফটওয়্যার) একটি সাধারণ শব্দ যা সকল ক্ষতিকর সফটওয়্যারকে বোঝায় যা সিস্টেম বা নেটওয়ার্কের ক্ষতি করে বা ডেটা চুরি করে। এর মধ্যে ভাইরাস, ট্রোজান,                     র‌্যানসমওয়ার, স্পাইওয়্যার, ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত।

- আচরণ: ভাইরাস সাধারণত একটি হোস্ট ফাইল বা প্রোগ্রামের মাধ্যমে ছড়ায় এবং এটি একটি সিস্টেমে চালানোর পর সক্রিয় হয়, তারপর ফাইলগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে বা ডেটা চুরি করতে পারে।

              -ম্যালওয়্যার বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর কাজ করতে পারে, যেমন তথ্য চুরি, ফাইল ক্ষতিগ্রস্ত করা বা সিস্টেমে অবৈধ অ্যাক্সেস লাভ করা।

 স্বয়ংক্রিয় প্রতিলিপি তৈরি: ভাইরাস স্বয়ংক্রিয়ভাবে অন্য সিস্টেমে ছড়িয়ে পড়ে যখন আক্রান্ত ফাইলটি চালানো হয়।

              -সব ম্যালওয়্যারই স্বয়ংক্রিয়ভাবে ছড়ায় না। যেমন- ট্রোজান বা র‌্যানসামওয়ার সাধারণত ব্যবহারকারীর দ্বারা ডাউনলোড বা চালানোর মাধ্যমে সক্রিয় হয়।

ব্যাপ্তি: ভাইরাস একটি বিশেষ ধরনের ম্যালওয়্যার, যা ফাইল বা প্রোগ্রামের মাধ্যমে ছড়ায়,

-যেখানে ম্যালওয়্যার আরও বিস্তৃত একটি শব্দ যা ভাইরাস, ট্রোজান, র‌্যানসমওয়ার, স্পাইওয়্যার ইত্যাদি সমস্ত ক্ষতিকর সফটওয়্যারকেই অন্তর্ভুক্ত করে।

উদাহরণ: :  ILOVEYOU ভাইরাস, মেলিসা ভাইরাস, WannaCry, CIH (Chernobyl Virus, Sasser Virus, Stuxnet ইত্যাদি কতগুলো বহুল পরিচিত ভাইরাসের নাম

কয়েকটি ম্যালওয়ার হল ট্রোজান, র‌্যানসমওয়ার, স্পাইওয়্যার, অ্যাডওয়্যার, ওয়ার্ম  ইত্যাদি


 অ্যান্টি-ভাইরাস সফটওয়্যার এবং অ্যান্টি-ম্যালওয়্যার সফটওয়্যার এর মূল পার্থক্য ও কয়েকটি সফটওয়ার :

অ্যান্টি-ভাইরাস সফটওয়্যার: অ্যান্টি-ভাইরাস সফটওয়্যার মূলত ভাইরাস, ওয়ার্ম, ট্রোজান এবং অন্যান্য প্রচলিত ম্যালওয়্যার শনাক্ত, প্রতিরোধ এবং অপসারণে ফোকাস করে। 

১. নর্টন অ্যান্টিভাইরাস (Norton Antivirus),  ২. ম্যাকাফি অ্যান্টিভাইরাস (McAfee Antivirus)

৩. ক্যাসপারস্কি অ্যান্টিভাইরাস (Kaspersky Antivirus), ৪. বিটডিফেন্ডার অ্যান্টিভাইরাস (Bitdefender Antivirus),    ৫. অ্যাভাস্ট অ্যান্টিভাইরাস (Avast Antivirus) 

 

অ্যান্টি-ম্যালওয়্যার সফটওয়্যার: অ্যান্টি-ম্যালওয়্যার সফটওয়্যার স্পাইওয়্যার, অ্যাডওয়্যার, র‌্যানসামওয়ার  এবং জিরো-ডে থ্রেটের মতো আরও বিস্তৃত ম্যালওয়্যার শনাক্ত এবং অপসারণে ফোকাস করে। 

১. ম্যালওয়্যার বাইটস (Malwarebytes),   ২. হিটম্যানপ্রো (HitmanPro), 

৩. স্পাইবট সার্চ অ্যান্ড ডেস্ট্রয় (Spybot Search & Destroy), ৪. অ্যাডওয়াক্লিনার (AdwCleaner),       ৫. সুপার অ্যান্টিস্পাইওয়্যার (SUPER Anti Spyware), 

  

মূল পার্থক্য: 

১. প্রাথমিক ফোকাস 

- অ্যান্টি-ভাইরাস সফটওয়্যার- প্রচলিত থ্রেট যেমন ভাইরাস, ওয়ার্ম, ট্রোজান এবং অন্যান্য পরিচিত ম্যালওয়্যারের উপর ফোকাস করে। এই ধরনের থ্রেট প্রতিরোধ, শনাক্ত এবং অপসারণের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। 

 - অ্যান্টি-ম্যালওয়্যার সফটওয়্যার- বিস্তৃত থ্রেট যেমন স্পাইওয়্যার, অ্যাডওয়্যার, র‌্যানসামওয়ারএবং জিরো-ডে এক্সপ্লয়িটের মতো নতুন এবং উন্নত ম্যালওয়্যারের উপর ফোকাস করে। অ্যান্টি-ভাইরাস সফটওয়্যার যেসব থ্রেট মিস করতে পারে, সেগুলো শনাক্ত এবং অপসারণে সাহায্য করে।

 

২. সুরক্ষার পরিধি: 

- অ্যান্টি-ভাইরাস সফটওয়্যার প্রধানত পরিচিত থ্রেটগুলিকে টার্গেট করে, যা ইতিমধ্যে এর ভাইরাস ডাটাবেসে সংরক্ষিত আছে।

- অ্যান্টি-ম্যালওয়্যার সফটওয়্যার-পরিচিত এবং অপরিচিত উভয় থ্রেটকে টার্গেট করে, যার মধ্যে নতুন এবং জিরো-ডে ম্যালওয়্যারও রয়েছে। 

 

 ৩. থ্রেটের ধরন 

- অ্যান্টি-ভাইরাস সফটওয়্যার:  সিগনেচার-ভিত্তিক ডিটেকশন ব্যবহার করে থ্রেট শনাক্ত এবং ব্লক করে। সিস্টেম জুড়ে ছড়িয়ে পড়া এবং প্রতিলিপি তৈরি করা থ্রেটগুলিতে ফোকাস করে। 

 - অ্যান্টি-ম্যালওয়্যার সফটওয়্যার:স্পাইওয়্যার, অ্যাডওয়্যার, র‌্যানসমওয়ার, কীলগার, রুটকিট এবং অন্যান্য উন্নত থ্রেট  - বিহেভিয়ার-ভিত্তিক ডিটেকশন এবং হিউরিস্টিক অ্যানালাইসিস ব্যবহার করে সন্দেহজনক অ্যাক্টিভিটি শনাক্ত করে।

 

 ৪. শনাক্তকরণ পদ্ধতি 

- অ্যান্টি-ভাইরাস সফটওয়্যার: - প্রধানত সিগনেচার-ভিত্তিক ডিটেকশন ব্যবহার করে, যেখানে এটি ফাইলগুলিকে পরিচিত ম্যালওয়্যার সিগনেচারের ডাটাবেসের সাথে তুলনা করে। 

- অ্যান্টি-ম্যালওয়্যার সফটওয়্যার - বিহেভিয়ার-ভিত্তিক ডিটেকশন এবং হিউরিস্টিক অ্যানালাইসিস ব্যবহার করে সন্দেহজনক অ্যাক্টিভিটি শনাক্ত করে, এমনকি যদি থ্রেটটি ডকুমেন্টেড না হয়। অজানা ফাইল বিশ্লেষণের জন্য স্যান্ডবক্সিং ব্যবহার করে।

 

 ৫. ব্যবহারের ক্ষেত্র 

- অ্যান্টি-ভাইরাস সফটওয়্যার: সাধারণ এবং পরিচিত থ্রেট থেকে রিয়েল-টাইম প্রোটেকশন প্রদানের জন্য সবচেয়ে ভালো। প্রতিদিনের ব্যবহারের জন্য আদর্শ। 

- অ্যান্টি-ম্যালওয়্যার সফটওয়্যার: উন্নত বা শক্তিশালী থ্রেট শনাক্ত এবং অপসারণের জন্য অন-ডিমান্ড স্ক্যানিং এর জন্য সবচেয়ে ভালো। সাধারণত অ্যান্টি-ভাইরাস সফটওয়্যারের পাশাপাশি একটি অতিরিক্ত সুরক্ষা স্তর হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

 

সর্বোচ্চ সুরক্ষার জন্য অ্যান্টি-ভাইরাস এবং অ্যান্টি-ম্যালওয়্যার উভয় সফটওয়্যার একসাথে ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়। অ্যান্টি-ভাইরাস রিয়েল-টাইম সুরক্ষা প্রদান করে, আর অ্যান্টি-ম্যালওয়্যার উন্নত থ্রেট মোকাবেলা করে।

 

ফিনটেক:

আর্থিক প্রযুক্তি বা ফাইন্যান্সিয়াল টেকনোলজি (সংক্ষেপে ফিনটেক) হচ্ছে আর্থিক খাতে প্রযুক্তির ব্যবহার যা আর্থিক পরিষেবা এবং প্রক্রিয়াগুলি উন্নত এবং স্বয়ংক্রিয় করতে সাহায্য করে। অর্থাৎ ফিনটেক হল এমন পদ্ধতি বা ব্যবসায় যা প্রথাগত আর্থিক সেবা পদ্ধতির সাথে প্রতিযোগিতা করে আর্থিক পরিষেবা স্বয়ংক্রিয় ও উন্নত করে। ফিনটেক একটি উদীয়মান শিল্প যেটি আর্থিক পরিষেবা ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি (পিয়ার টু পিয়ার) পর্যায়ে পৌঁছে দিতে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকে। FinTech হল ব্যাংক, লিজিং কোম্পানী, বীমা কোম্পানীর মত আর্থিক কোম্পানী যারা তাদের নিজস্ব পণ্যকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে FinTech এম্বেড করে। মোবাইল ব্যাংকিং, অনলাইন ব্যাঙ্কিং, ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিং, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, এটিএম/সিআরএম, এমএফএস, এজেন্ট ব্যাঙ্কিং, মোবাইল অ্যাপ হল ব্যাংকের ক্ষেত্রে ফিনটেকের উদাহরণ যা সাধারণ জনগণের জন্য আর্থিক সেবা আরো সহজলভ্য করেছে।

 

জাতীয় ডিজিটাল মুদ্রা (National Digital Currency):

জাতীয় ডিজিটাল মুদ্রা (CBDC) হল একটি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক দ্বারা জারি করা ডিজিটাল মুদ্রার একটি রূপ। এটি ক্রিপ্টোকারেন্সির মতোই, এর মূল্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক দ্বারা নির্ধারিত এবং দেশের বিহিত মুদ্রার সমতুল্য। অনেক দেশ সিবিডিসি উন্নয়ন করছে, এবং বাস্তবায়ন করেছে। সম্প্রতি অনেক দেশ ডিজিটাল মুদ্রায় রূপান্তর করার উপায়গুলি নিয়ে গবেষণা করছেপ্রথাগতভাবে, বিহিত মুদ্রা হল ব্যাংকনোট এবং কয়েন, কিন্তু সরকার এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে প্রযুক্তির সহায়তায় একটি ক্রেডিট-ভিত্তিক মুদ্রা মডেলের সাথে ভৌত বিহিত অর্থের পরিপূরক করার সম্মতি দিয়েছে যা ডিজিটালভাবে ব্যালেন্স এবং লেনদেন রেকর্ড করে। সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক ডিজিটাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক দ্বারা জারি করা যেতে পারে, সাধারণ জনগণের কাছে অ্যাক্সেসযোগ্য এবং ফার্ম এবং পরিবারের মধ্যে লেনদেন নিষ্পত্তি করতে ব্যবহৃত হয়। অ্যাকাউন্টের একক হবে জাতীয় মুদ্রা, এবং এটিকে সমতার সাথে বিনিময় করা যেতে পারে (অর্থাৎ একজনের জন্য একটি) অন্যান্য ধরনের অর্থের সাথে, যেমন ভৌত মুদ্রা বা সুনিয়ন্ত্রিত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে ইলেকট্রনিক আমানত।

 

জাতীয় ডিজিটাল মুদ্রার বৈশিষ্ট্য:

সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক ডিজিটাল মুদ্রা কেন্দ্রীয় ব্যাংক কতৃক জারি করা হবে।

সাধারণ জনগণের কাছে এই মুদ্রা অ্যাক্সেসযোগ্য এবং পতিষ্ঠান ও ব্যক্তির মধ্যে লেনদেন নিষ্পত্তি করতে ব্যবহৃত হয়।

অ্যাকাউন্টের একক হবে জাতীয় মুদ্রা, এবং এটিকে সমতার সাথে বিনিময় করা যেতে পারে (অর্থাৎ একজনের জন্য একটি)

এই মুদ্রা অন্যান্য ধরনের অর্থের সাথে, যেমন কাগজী মুদ্রা বা সুনিয়ন্ত্রিত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে ইলেকট্রনিক আমানতের বিনিময়যোগ্য হবে।

 

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI):

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হল মানুষের মতো চিন্তা করার এবং কাজ করার জন্য প্রোগ্রাম করা মেশিনে মানুষের বুদ্ধিমত্তার অনুকরণ। এটি কম্পিউটার তৈরি করার একটি পদ্ধতি, একটি কম্পিউটার-নিয়ন্ত্রিত রোবট বা একটি সফ্টওয়্যার যা মানুষের মনের মতো বুদ্ধিমানভাবে চিন্তা করে। AI মানুষের মস্তিষ্কের গঠন অনুযায়ী অধ্যয়ন করে এবং চিন্তা চেতনা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিশ্লেষণ করে কাজ সম্পাদন করে। AI এর কাজের সাথে সাধারণত মানুষের ন্যায় বুদ্ধিমান প্রাণীর সমন্বয় থাকে।

 

 AI শব্দটি প্রায়শই মানুষের মত বুদ্ধি বৃত্তিক কার্যাবলির বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ সিস্টেম উন্নয়নের বিভিন্ন প্রকল্পে প্রয়োগ করা হয়, যেমন- যুক্তি করার ক্ষমতা, যুক্তি, সমস্যা-সমাধান, অতীত অভিজ্ঞতা থেকে শেখার ক্ষমতা বা কাজে লাগানো। ১৯৪0-এর দশকে কম্পিউটার উন্নয়নের পর থেকে, ডিজিটাল কম্পিউটারগুলি অত্যন্ত জটিল কাজগুলি সম্পাদন করার জন্য প্রোগ্রাম করা হয়েছে যেমন- দুর্দান্ত দক্ষতার সাথে গাণিতিক উপপাদ্যের প্রমাণ আবিষ্কার করা বা দাবা খেলা । বর্তমানে উন্নত ওয়েব সার্চ ইঞ্জিন, মানুষের ভাষা বোঝা, স্ব-চালিত গাড়ি, স্বয়ংক্রিয় কৌশলগত গেম সিস্টেমের সর্বোচ্চ স্তরে সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং প্রতিযোগিতা ইত্যাদি ক্ষেত্রে এআই এর সর্বাধিক ব্যবহার হচ্ছে।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহে বিপুল পরিমাণ ডেটা পাওয়া যায় এবং এখানে অনেক বড় অঙ্কের ডেটা তৈরি হয়। তথ্য সংগ্রহ, গঠন এবং সংরক্ষণের জন্য ব্যাংকিং শিল্পের একটি শক্তিশালী হাতিয়ার প্রয়োজন। অনেক ব্যাংকিং এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি লিভারেজের মতো সমন্বিত ডেটা সেট, গ্রাহকের অভিজ্ঞতা উন্নত করন, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা উন্নত করা, ডেটার নিরাপত্তা, বিধিমালা পরিপালন ইত্যাদিতে AI ব্যবহার করছে।

 

ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান এ AI এর প্রভাব:

আমরা ব্যাংকিং এ AI এর প্রভাবকে দুটি দৃষ্টিকোণ থেকে ভাগ করতে পারি:

গ্রাহকদের দৃষ্টিকোণ থেকে:

. ভার্চুয়াল সহকারীর মাধ্যমে এআই সহায়ক অ্যাকাউন্ট খোলা।

. হিসাব শনাক্তকরণের জন্য বায়োমেট্রিক্স (মুখ/আইরিস/ভয়েস/আঙুলের ছাপ সনাক্তকরণ) এর ব্যবহার ও অর্থ লেনদেন।

. প্রতিটি গ্রাহককে একটি নিজস্ব ইউজার অভিজ্ঞতা প্রদান করা।

. AI সহায়ক সুরক্ষিত ব্যাঙ্কিং সুবিধা প্রদান করা।

ব্যাংকের দৃষ্টিকোণ থেকে:

. একাধিক উৎস থেকে স্বতন্ত্রভাবে গ্রাহক সনাক্তকরণ

. মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদম ব্যবহার করে গ্রাহকদের জন্য ঋণের যোগ্যতার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া। প্রাসঙ্গিক তথ্যের উপর ভিত্তি করে এবং একটি আর্থিক সীমা প্রদান করতে পারে।

. জালিয়াতি সনাক্তকরণ এবং সন্দেহজনক আচরণ সনাক্তকরণ।

. সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত পরিষেবাগুলি খুঁজে বের করা এবং সেই অনুযায়ী গ্রাহকদের সেগুলি অফার করা৷

. ব্যবস্থাপনা কতৃপক্ষ এবং ব্যাঙ্ক কর্মীদের সেবার আদর্শ মানগুলির জন্য মনিটরিং সরঞ্জাম।

. প্রচুর পরিমাণে ব্যাংকিং এর প্রাথমিক উপাত্ত থেকে সারসংক্ষেপ তৈরি করা, যা ভবিষ্যতে ব্যাংকিং কৌশল গঠনে সাহায্য করতে পারে।

. গ্রাহকদের ব্যবহৃত তথ্যর উপর ভিত্তি করে গ্রাহকদের জন্য অফার/প্যাকেজ/পরিষেবা তৈরি করা

. গ্রাহকদের জন্য ভৌগলিক, আর্থ-সামাজিক তথ্য।

. প্রতিযোগীদের বিশ্লেষণ এবং বাজারে টিকে থাকার জন্য কৌশলগত সিদ্ধান্ত নেওয়া

১০. মুনাফা অর্জনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বিনিয়োগের ক্ষেত্রগুলি খুঁজে বের করা।

১১. মুদ্রাস্ফীতি এবং মুদ্রা ঘাটতি সংক্রান্ত ব্যাংক সংকটের পূর্বাভাস দেওয়ার জন্য ডিপ লার্নিং মডেল বেশ কার্যকর ভুমিকা রাখতে পারে।

 

ভার্চুয়াল ব্যাংকিং

ভার্চুয়াল ব্যাংকিং হল সম্পূর্ণ অনলাইনে পরিচালিত ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা, যেখানে কোনো শারীরিক শাখা ছাড়াই বা ব্যাংকের শাখায় সরাসরি উপস্থিত না হয়েই গ্রাহকরা ওয়েব বা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে লেনদেন করতে পারেন। ব্যাংকিংয়ে প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহারের মাধ্যমে এটি সম্ভব হয়এই ব্যাংকগুলি অ্যাকাউন্ট ব্যবস্থাপনা, ফান্ড ট্রান্সফার, লোন, এবং বিনিয়োগের মতো সেবা দেয়, যা দ্রুত, সুবিধাজনক এবং সাধারণত কম খরচে সম্পন্ন হয়। প্রচলিত ব্যাংকের তুলনায় ভার্চুয়াল ব্যাংকগুলির অপারেশন খরচ কম হওয়ায় তারা উচ্চ সুদ হার এবং কম ফি আরোপ করতে পারে। এগুলি উন্নত সুরক্ষা প্রযুক্তি ব্যবহার করে, যেমন- এনক্রিপশন ও বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশন, যাতে লেনদেন নিরাপদ থাকে। এর সহজলভ্যতা, দক্ষতা এবং ডিজিটাল সুবিধার কারণে প্রযুক্তিনির্ভর গ্রাহকদের কাছে ভার্চুয়াল ব্যাংকিং জনপ্রিয় হয়ে উঠছে

 

ভার্চুয়াল ব্যাংকিংয়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার কৌশল (Way to address challenges regarding adoption of virtual banking): 

ভার্চুয়াল ব্যাংকিং (ডিজিটাল ব্যাংকিং) এর দ্রুত বৃদ্ধি যেমন সুযোগ তৈরি করেছে, তেমনি এনে দিয়েছে বেশ কিছু বড় চ্যালেঞ্জ, বিশেষ করে গ্রাহকের আস্থা, ডেটা সুরক্ষা এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার পরিপালন নিয়ে। টেকসই গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে অবশ্যই একটি বহুমুখী কৌশল বাস্তবায়ন করতে হবে যা প্রযুক্তি, সুশাসন এবং গ্রাহক সম্পৃক্ততা একত্রিত করে। নিচে এই চ্যালেঞ্জগুলো কীভাবে কার্যকরভাবে মোকাবিলা করা যায় তার বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। 

 ১. স্বচ্ছতা ও যোগাযোগ 

- নীতিমালা স্পষ্টভাবে প্রকাশ: ভার্চুয়াল ব্যাংকগুলিকে ফি, সুদের হার এবং ডেটা ব্যবহার সম্পর্কে সহজে বোধগম্য শর্তাবলী সরবরাহ করতে হবে। 

- রিয়েল-টাইম নোটিফিকেশন: লেনদেন, লগইন প্রচেষ্টা এবং নিরাপত্তা আপডেট সম্পর্কে গ্রাহকদের তাত্ক্ষণিক সতর্কতা পাঠানো উচিত। 

- শিক্ষামূলক প্রচারণা: টিউটোরিয়াল, FAQ এবং ওয়েবিনার প্রদানের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের ঝুঁকি এবং সুবিধাগুলো বুঝতে পারবেন। 

 ২. নির্ভরযোগ্য গ্রাহক সহায়তা 

- ২৪/৭ এআই চ্যাটবট + মানব সহায়তা: এআই চালিত চ্যাটবট সাধারণ প্রশ্নের উত্তর দেবে, অন্যদিকে মানব এজেন্ট জটিল সমস্যার সমাধান করবে। 

- অমনিচ্যানেল সাপোর্ট: গ্রাহকদের লাইভ চ্যাট, ফোন, ইমেইল এবং সোশ্যাল মিডিয়া এর মাধ্যমে সহায়তা পাওয়ার সুযোগ থাকতে হবে। 

- সক্রিয় জালিয়াতি সতর্কতা: ব্যাংকগুলিকে সন্দেহজনক কার্যকলাপ সম্পর্কে ব্যবহারকারীদের অবিলম্বে জানাতে হবে এবং পরবর্তী পদক্ষেপ নির্দেশ করতে হবে। 

. ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা (UX) সর্বোত্তমকরণ:

- বুদ্ধিদীপ্ত মোবাইল ও ওয়েব ইন্টারফেস: একটি সহজ, দ্রুত এবং নিরাপদ UI/UX ত্রুটি কমায় এবং আস্থা বাড়ায়। 

-পছন্দসই ব্যাংকিং ফিচার: এআই চালিত সুপারিশ (যেমন সঞ্চয়ের টিপস, ব্যয়ের বিশ্লেষণ) ব্যবহারকারীদের সম্পৃক্ততা বাড়ায়। 

 ৪. উন্নত প্রমাণীকরণ ও এনক্রিপশন 

- মাল্টি-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন (MFA) যেমন- পাসওয়ার্ড + OTP + বায়োমেট্রিক্স (ফিঙ্গারপ্রিন্ট/ফেস আইডি) এর সমন্বয়ে লগইন সুরক্ষিত করা। 

- এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন (EEE): ব্যবহার করে ডেটা সুরক্ষিত করা। 

- আচরণগত বায়োমেট্রিক্স যেমন- টাইপিং স্পিড, মাউস মুভমেন্ট বা ডিভাইজ ব্যবহারে অস্বাভাবিকতা শনাক্ত করে জালিয়াতি চিহ্নিত করা। 

 ৫. এআই ও মেশিন লার্নিং এর মাধ্যমে জালিয়াতি শনাক্তকরণ 

- রিয়েল-টাইম লেনদেন মনিটরিং- এআই অ্যালগরিদম অস্বাভাবিক ব্যয়ের প্যাটার্ন (যেমন হঠাৎ বড় ট্রান্সফার) শনাক্ত করে। 

- প্রেডিক্টিভ রিস্ক স্কোরিং- লেনদেনের জন্য রিস্ক স্কোর নির্ধারণ এবং উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ লেনদেন স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্লক করা। 

- এন্টি-ফিশিং ও এন্টি-ম্যালওয়্যার টুলস: ব্যাংকিং অ্যাপে জাল ওয়েবসাইট, ক্ষতিকারক লিংক এবং স্পাইওয়্যার স্ক্যান করা। 

 ৬. নিরাপদ অবকাঠামো ও সাইবার স্থায়ীত্ব: 

- জিরো-ট্রাস্ট সিকিউরিটি মডেল: নেটওয়ার্কের ভিতর থেকে আসা প্রতিটি অ্যাক্সেস রিকোয়েস্ট যাচাই করা। 

- ক্লাউড সিকিউরিটি ও DDoS প্রোটেকশন এর ফায়ারওয়াল ব্যবহার করে সাইবার আক্রমণ প্রতিরোধ করা। 

- নিয়মিত পেনিট্রেশন টেস্টিং: এথিক্যাল হ্যাকার নিয়োগ করে দুর্বলতা শনাক্ত ও ঠিক করা। 

 ৭. বৈশ্বিক ও স্থানীয় নিয়মকানুন মেনে চলা 

  - KYC (নো ইউর কাস্টমার) ও AML (এন্টি-মানি লন্ডারিং): 

  -ডিজিটাল আইডি ভেরিফিকেশন: ই-কেওয়াইসি, ফেসিয়াল রিকগনিশন এবং লিভেনেস ডিটেকশন ব্যবহার করে। লেনদেন মনিটরিং এর মাধ্যমে সন্দেহজনক ট্রান্সফার (যেমন-বড় নগদ জমা, ঘন ঘন পেমেন্ট) চিহ্নিত করা। 

- GDPR (ইইউ) / CCPA (মার্কিন) / PDPA (সিঙ্গাপুর): গ্রাহকের ডেটা গোপনীয়তা নিশ্চিত করতে নেওয়া। 

- PSD (ইইউ ওপেন ব্যাংকিং) সুরক্ষিত থার্ড-পার্টি API ইন্টিগ্রেশন সক্ষম করা। 

 ৮. নিয়মিত কমপ্লায়েন্স অডিট: আর্থিক আইন মেনে চলা নিশ্চিত করতে অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক অডিট করা। 

 ৯. সুরক্ষিত ও কমপ্লায়েন্ট রেকর্ড-রক্ষণের জন্য ব্লকচেইন 

- অপরিবর্তনীয় লেনদেন লগ: ডিস্ট্রিবিউটেড লেজার টেকনোলজি (DLT) ব্যবহার করে ডেটা টেম্পারিং প্রতিরোধ করা। 

- কমপ্লায়েন্সের জন্য স্মার্ট কন্ট্রাক্ট: লোন অ্যাপ্রুভাল, ফ্রড চেক এবং রিপোর্টিং স্বয়ংক্রিয় করা। 

 

১০. গ্রাহক-কেন্দ্রিক ঝুঁকি প্রশমন 

- ব্যবহারকারীদের জন্য সাইবার ইন্সুরেন্স চালু করে হ্যাকিং/স্ক্যামের শিকার গ্রাহকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া। 

- বাগ বাউন্টি প্রোগ্রাম: সাইবার অপরাধীদের আগে নিরাপত্তা ত্রুটি খুঁজে বের করতে এথিক্যাল হ্যাকারদের পুরস্কৃত করা 

১১. পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ 

- সরকারের সাথে সহযোগিতা: কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সাইবার নিরাপত্তা সংস্থার সাথে শিল্প মান নির্ধারণ করা। 

- গ্লোবাল সাইবারসিকিউরিটি জোট: FS-ISAC (ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস ইনফরমেশন শেয়ারিং অ্যান্ড অ্যানালিসিস সেন্টার) এর মতো ফোরামে যোগ দেওয়া। 

 

ভার্চুয়াল ব্যাংকিংয়ের ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করতে প্রতিষ্ঠানগুলিকে অবশ্যই নিরাপত্তা, কমপ্লায়েন্স এবং আস্থা-গঠনের উপর জোর দিতে হবে। এআই চালিত ফ্রড ডিটেকশন, বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশন, ব্লকচেইন এবং রেগুলেটরি স্যান্ডবক্সএর মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডিজিটাল ব্যাংকগুলি ঝুঁকি কমাতে পারে এবং গ্রাহকের আস্থা অর্জন করতে পারে। ব্যাংকিংয়ের ভবিষ্যৎ ডিজিটাল-ফার্স্ট, কিন্তু কেবল তারাই দীর্ঘমেয়াদে সফল হবে যারা উদ্ভাবন এবং নিরাপত্তার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে পারবে।

 

QR-ভিত্তিক পেমেন্ট :

কিউ আর পেমেন্ট হলো একটি কন্টাক্টলেস ডিজিটাল পেমেন্ট পদ্ধতি যেখানে Quick Response (QR) কোড ব্যবহার করে দুটি পক্ষের মধ্যে নিরাপদ ও তাৎক্ষণিক আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন হয়। এই সিস্টেমে, একজন মার্চেন্ট অর্থপ্রদানের তথ্য সম্বলিত একটি ইউনিক QR কোড তৈরি করেন, যা গ্রাহক তাদের স্মার্টফোন ক্যামেরা বা মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপ (যেমন- bKash, Nagad, UPI অ্যাপ) এর মাধ্যমে স্ক্যান করেন। QR কোডটি হতে পারে স্থায়ী, (পুনরাবৃত্তিমূলক পেমেন্টের জন্য) অথবা অভিনব  (সুনির্দিষ্ট লেনদেন, উন্নত নিরাপত্তার জন্য)। স্ক্যান করার পর, পেমেন্ট অ্যাপ স্বয়ংক্রিয়ভাবে মার্চেন্টের বিবরণ এবং লেনদেনের পরিমান পেয়ে যায়, এবং ব্যবহারকারীকে MPIN, বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন বা OTP এর মাধ্যমে পেমেন্ট যাচাই করতে বলে। অনুমোদিত হলে, তহবিল গ্রাহকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, মোবাইল ওয়ালেট বা সংযুক্ত পেমেন্ট সার্ভিস (যেমন ভারতের UPI) থেকে সরাসরি মার্চেন্টের অ্যাকাউন্টে রিয়েল-টাইমে স্থানান্তরিত হয়, কোনো স্পর্শযোগ্য নগদ, কার্ড বা POS মেশিন ছাড়াই।

এই প্রযুক্তিটি সুবিধাজনক (কার্ড-সোয়াইপ বা ম্যানুয়াল এন্ট্রির প্রয়োজন নেই), খরচ-সাশ্রয়ী (কম অবকাঠামোগত প্রয়োজনীয়তা) এবং নিরাপত্তা (এনক্রিপ্টেড কোড ও মাল্টি-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন) এর সমন্বয় করে, যা ছোট ব্যবসা, রাস্তার বিক্রেতা এবং উন্নয়নশীল অর্থনীতির ডিজিটাল পেমেন্ট প্ল্যাটফর্মগুলিতে বিশেষভাবে জনপ্রিয়। সরকারি উদ্যোগ যেমন নগদবিহীন লেনদেন এবং -ব্যাংকিং জনগোষ্ঠীর জন্য আর্থিক অন্তর্ভুক্তি প্রচার এই পদ্ধতির ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা আরও ত্বরান্বিত করেছে।

QR-ভিত্তিক পেমেন্টের সুবিধাসমূহ (Advantages of QR-Based Payments as a Digital Payment Option)

QR (Quick Response) কোড-ভিত্তিক পেমেন্ট সিস্টেম ডিজিটাল লেনদেনের একটি জনপ্রিয় ও নিরাপদ মাধ্যম। নিচে এর প্রধান সুবিধাগুলো আলোচনা করা হলো:

১. সহজ ও দ্রুত লেনদেন (Convenience & Speed)

·        কোনো ফিজিক্যাল কার্ড বা নগদ টাকার প্রয়োজন নেইশুধু মোবাইল ফোন দিয়ে স্ক্যান করে পেমেন্ট সম্পন্ন।

·        সেকেন্ডের মধ্যে লেনদেন – POS মেশিন বা কার্ড সোয়াইপ করার চেয়ে দ্রুত।

·        অফলাইনেও কাজ করেকিছু সিস্টেমে ইন্টারনেট ছাড়াই পেমেন্ট সম্ভব (যেমন UPI Lite)

২. উচ্চ নিরাপত্তা (Enhanced Security)

  • ডায়নামিক QR কোডপ্রতিটি লেনদেনে আলাদা কোড জেনারেট হয়, যা জালিয়াতি রোধ করে।
  • বায়োমেট্রিক/MPIN ভেরিফিকেশন – UPI বা মোবাইল অ্যাপে অতিরিক্ত সিকিউরিটি স্তর থাকে।
  • কার্ড ডিটেইল শেয়ার করতে হয় নাকার্ড নম্বর বা CVV লুকানো থাকে, ফলে ফিশিং/স্কিমিং ঝুঁকি কম।

৩. কম খরচে বাস্তবায়ন (Cost-Effective Solution)

  • মার্চেন্টদের জন্য সাশ্রয়ী – POS মেশিনের চেয়ে QR সিস্টেম সেটআপ ও রক্ষণাবেক্ষণে কম খরচ।
  • কোনো অতিরিক্ত হার্ডওয়্যার প্রয়োজন নেইশুধু একটি প্রিন্টেড QR কোড বা ডিজিটাল স্ক্রিন যথেষ্ট
  • লো-ট্রানজেকশন ফিব্যাংক বা পেমেন্ট গেটওয়ে চার্জ সাধারণত কার্ড পেমেন্টের চেয়ে কম।

৪. সর্বত্র গ্রহণযোগ্যতা (Wide Acceptance)

  • ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য আদর্শরাস্তার বিক্রেতা, রিকশাচালক থেকে শপিং মল পর্যন্ত ব্যবহারযোগ্য।
  • ইউনিভার্সাল পেমেন্ট অপশনবিভিন্ন অ্যাপ (bKash, Nagad, Rocket, UPI) একই QR কোড সমর্থন করে (যেমন MFS QR বা UPI QR)
  • কন্টাক্টলেস পেমেন্ট – COVID-১৯ পরবর্তী যুগে স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়িয়েছে।

৫. আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বৃদ্ধি (Financial Inclusion)

  • ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ছাড়াই ব্যবহারমোবাইল ফাইন্যান্স সার্ভিস (MFS) যেমন bKash, Nagad এর মাধ্যমে।
  • গ্রামীণ ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে প্রবেশযেখানে ব্যাংকিং সুবিধা সীমিত, সেখানে QR পেমেন্ট বিকল্প হিসেবে কাজ করে।
  • ডিজিটাল লেনদেনে অভ্যস্ততা তৈরিনতুন ব্যবহারকারীদের জন্য সহজ ডিজিটাল পেমেন্টের সাথে পরিচয় ঘটে

৬. স্বয়ংক্রিয় রেকর্ড ও বিশ্লেষণ (Automated Record-Keeping)

  • ডিজিটাল রিসিপ্টসব লেনদেন স্বয়ংক্রিয়ভাবে অ্যাপ বা ব্যাংক স্টেটমেন্টে সংরক্ষিত হয়।
  • ট্যাক্স ও অডিট ফ্রেন্ডলিক্যাশ লেনদেনের চেয়ে ট্র্যাক করা সহজ, যা কর ফাঁকি রোধে সাহায্য করে।
  • সেলস ট্রেন্ড অ্যানালিটিক্সমার্চেন্টরা পেমেন্ট ডেটা বিশ্লেষণ করে ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

৭. পরিবেশবান্ধব (Eco-Friendly)

  • কাগজের রিসিপ্ট বা ক্যাশ ম্যানেজমেন্টের প্রয়োজন কমডিজিটাল রেকর্ড পরিবেশ দূষণ হ্রাস করে।
  • কম ইলেকট্রনিক বর্জ্য – POS মেশিনের মতো ইলেকট্রনিক ডিভাইসের উপর নির্ভরশীলতা কম।

৮. সরকারি ও কর্পোরেট সমর্থন (Government & Corporate Backing)

  • বাংলাদেশে MFS QR এবং ভারতের UPI QR – কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সরকার দ্বারা প্রচারিত।
  • ক্যাশলেস ইকোনমি উৎসাহডিজিটাল বাংলাদেশ ভিশনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
  • প্রোমোশনাল অফার – Cashback, ডিসকাউন্ট বা রিওয়ার্ড পয়েন্টের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের আকর্ষণ।

  QR পেমেন্ট দ্রুত, নিরাপদ, সাশ্রয়ী এবং সহজলভ্য হওয়ায় এটি ডিজিটাল অর্থনীতির ভবিষ্যৎ। বাংলাদেশ ও বিশ্বজুড়ে UPI, WeChat Pay, Alipay, MFS QR- এর সাফল্য প্রমাণ করে যে এই প্রযুক্তি অর্থনীতির ডিজিটাল রূপান্তরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

PCI DSS এর ১২টি চাহিদা :-

PCI SSC কতৃক নির্ধারিত প্রয়োজনীয়তাগুলি পরিচালনাগত এবং প্রযুক্তিগত উভয়ই, এবং এই নিয়মগুলির মূল বিষয় হল সবসময় কার্ডধারীদের ডেটা সুরক্ষিত করা।

PCI DSS এর ১২ টি আবশ্যকীয় চাহিদা হল:

.    কার্ডহোল্ডার ডেটা সুরক্ষিত করার জন্য একটি ফায়ারওয়াল কনফিগারেশন ইনস্টল করা এবং বজায় রাখা

.    ভেন্ডর কতৃক সরবরাহকৃত সিস্টেম পাসওয়ার্ড এবং অন্যান্য ডিফল্ট সিকিউরিটি প্যারামিটার ব্যবহার না করা

.    সংরক্ষিত কার্ডহোল্ডার ডেটা সুরক্ষিত রাখা

.    উন্মুক্ত, পাবলিক নেটওয়ার্ক জুড়ে কার্ডধারকের ডেটা এনক্রিপ্ট করা

.    অ্যান্টি-ভাইরাস সফটওয়্যার বা প্রোগ্রাম ব্যবহার করা এবং নিয়মিত আপডেট করা

.    নিরাপদ সিস্টেম এবং অ্যাপ্লিকেশনগুলি উন্নয়ন এবং বজায় রাখা

.    সংস্থা কতৃক কার্ডধারীর ডেটাতে অ্যাক্সেস সীমাবদ্ধ করতে হবে

.   কম্পিউটার অ্যাক্সেস সহ প্রতিটি ব্যক্তির জন্য একটি অনন্য আইডি বরাদ্দকরন

9.    কার্ডধারীর ডেটাতে শারীরিক অ্যাক্সেস সীমাবদ্ধ করুন

১০.   নেটওয়ার্ক সরঞ্জাম এবং কার্ডহোল্ডার ডেটাতে সমস্ত অ্যাক্সেস ট্র্যাক এবং নজরদারি করুন

১১.   নিয়মিত সিস্টেম সিস্টেম ও প্রক্রিয়া পরীক্ষা

১২.   সমস্ত কর্মীদের কাছ থেকে তথ্যের সুরক্ষা বজায় রাখে এমন নীতিমালা চালু রাখা।

https://www.controlcase.com/what-are-the-১২-requirements-of-pci-dss-complianc

 


টীকাসমূহ:

নেটওয়ার্কিং- এ DMZ:

DMZ (Demilitarized Zone) নেটওয়ার্কিং-এ একটি ফিজিক্যাল বা লজিক্যাল সাবনেটওয়ার্ক, যা একটি সংস্থার অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্ক এবং বাইরের অবিশ্বস্ত নেটওয়ার্ক (যেমন ইন্টারনেট) এর মধ্যে একটি বাফার জোন হিসেবে কাজ করে। এটি পাবলিকলি অ্যাক্সেসযোগ্য সার্ভিস (যেমন ওয়েব সার্ভার, ইমেল সার্ভার, বা FTP সার্ভার) কে লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক (LAN) বা অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্ক থেকে আলাদা করে অতিরিক্ত নিরাপত্তা স্তর যোগ করতে ডিজাইন করা হয়েছে। DMZ-এ এই সার্ভিসগুলি স্থাপন করে, সংস্থাগুলি তাদের অভ্যন্তরীণ সিস্টেমে সরাসরি অ্যাক্সেস সীমিত করতে পারে, যা অননুমোদিত অ্যাক্সেস বা আক্রমণের ঝুঁকি কমায়।

 

DMZ সাধারণত ফায়ারওয়াল ব্যবহার করে বাস্তবায়ন করা হয়, যা ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ করে। বাহ্যিক ব্যবহারকারীরা DMZ-এর আওতাভুক্ত সার্ভিসে অ্যাক্সেস করতে পারে, কিন্তু অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্কে অ্যাক্সেস সীমিত থাকে। যদি কোনো আক্রমণকারী DMZ-এ থাকা কোনো সিস্টেম কম্প্রোমাইজ করে, তবুও অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্ক সুরক্ষিত থাকে। এই সেটআপ লেয়ার্ড সিকিউরিটি কৌশলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা স্পর্শকাতর ডেটা এবং রিসোর্স সুরক্ষিত করতে সাহায্য করে।

 

বাংলা কিউআর (QR) কোড

কিউআর এর পূর্ণ অর্থ কুইক রেসপন্স কোড। আমাদের দেশের বিভিন্ন ডিজিটাল পেমেন্ট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে নিজস্ব কিউআর কোড ব্যবহারের মাধ্যমে দ্রুত পেমেন্টের সুবিধা দিয়ে আসছে। প্রায় প্রতিটি ব্যাংক এমএফএস সেবা দোকানে বা আউটলেটে পেমেন্টের ক্ষেত্রে নিজস্ব কিউআর ব্যবহার করে। ক্রেতাদের সুবিধার লক্ষ্যে এই বিভিন্ন কিউআর কোডের ব্যবহারকে একটি সিস্টেমের মধ্যে নিয়ে এসেছে Bangla QR এতে করে ভিন্ন ভিন্ন ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেমের জন্য আলাদা কিউআর ব্যবহার না করে একটি মাত্র কিউআর কোড ব্যবহার করে সকল প্রকার লেনদেন করা যাবে।

বাংলা কিউআর একটি কিউআর কোড পেমেন্ট সিস্টেম। অর্থাৎ বাংলা কিউআর এর কিউআর কোড স্ক্যান করে ক্রেতা সহজেই পছন্দের ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা থেকে পেমেন্ট করে দিতে পারবেন। ফলে একটি মাত্র প্ল্যাটফর্মেই যে কেউ পেমেন্ট গ্রহণ বা প্রদান করতে পারবেন।

প্রযুক্তি নির্ভর অর্থ্যাৎ ডিজিটাল মাধ্যমে পেমেন্ট/লেনদেনের গতি ত্বরান্বিত হচ্ছে। নগদ লেনদেনের ব্যবহার হ্রাস পাচ্ছে এবং ক্যাশলেস লেনদেন সম্প্রারিত হচ্ছে, কেননা এটি  নিরাপদ আর সময় সাশ্রয়ী। নগদ  লেনদেন নিরুৎসাহিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগে চালু হয়েছে নতুন পেমেন্ট সিস্টেমবাংলা কিউআর' বা Bangla QR প্রযুক্তি।

বাংলা কিউআর কোড Based লেনদেনের সুবিধা:

·        দ্রুত ও সহজে স্মার্টফোন ব্যবহার করে পছন্দ মত প্ল্যাটফর্ম (যেমনঃ Sonali e-wallet, Bkash, Rocket, Cell- Fin ইত্যাদি) হতে ডিজিটাল পেমেন্ট করা যাবে;

·        নিরাপদ পেমেন্ট;

·        নগদ টাকা ছাড়াই লেনদেন;

·        গ্রাহককে বাড়তি কোন চার্জ বা খরচ বহন করতে হবে না;

·        যে কোন পরিমাণের পেমেন্ট করা সম্ভব হবে।

সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং:

সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং হল একটি মনস্তাত্ত্বিক কৌশল যার মাধ্যমে ব্যক্তিদের প্রতারণা করে গোপন তথ্য প্রকাশ করতে, অননুমোদিত অ্যাক্সেস দিতে বা নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে এমন কাজ করতে বাধ্য করা হয়। প্রযুক্তিগত হ্যাকিংয়ের বিপরীতে, সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং মানুষের মনস্তত্ত্ব এবং বিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে আক্রমণ করে। এটি সাইবার অপরাধীদের জন্য সংবেদনশীল তথ্য, সিস্টেম বা শারীরিক অ্যাক্সেস পাওয়ার একটি অত্যন্ত কার্যকর পদ্ধতি।

 সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং যেভাবে কাজ করে:

. আক্রমণকারী লক্ষ্য সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে (যেমন সোশ্যাল মিডিয়া, পাবলিক রেকর্ড বা ফিশিং ইমেইলের মাধ্যমে)।

. আক্রমণকারী লক্ষ্যবস্তুকে বিভ্রান্ত করার জন্য তার সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে বা জরুরি অবস্থার ভান করে করে।

. আক্রমণকারী লক্ষ্যবস্তুর উপর কৌশল খাটিয়ে সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ করতে বা একটি নির্দিষ্ট কাজ করতে বাধ্য করে।

. আক্রমণকারী প্রাপ্ত তথ্য বা অ্যাক্সেস ক্ষতিকর উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে, যেমন ডেটা চুরি, টাকা হাতানো বা সিস্টেমে অনুপ্রবেশ করা।

সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং আক্রমণের কয়েকটি সাধারণ ধরন হল ফিশিং, ব্যক্তির বিশ্বস্ত ও আস্থাভাজন সেজে তথ্য হাতিয়ে নেয়া, অনুমোদিত ব্যক্তি সেজে সংরক্ষিত স্থানে প্রবেশ, বাজি ও আকর্ষণীয় পুরষ্কার অফার করা: পরিচিত ব্যক্তি সেজে টার্গেট ব্যক্তিকে দিয়ে আর্থিক লেনদেন করানো।

সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং মানুষের প্রকৃতি যেমন- ভয়,  কৌতূহল, বিশ্বাস বা লোভের মতো আবেগকে কাজে লাগায়; এটির জন্য উন্নত হ্যাকিং দক্ষতার প্রয়োজন হয় না, শুধু মনস্তাত্ত্বিক কৌশল প্রয়োজন। প্রযুক্তিগত বাধা কম থাকে এবং এতে সাফল্যের হার উচ্চ হওয়ায় এটি বেশি কার্যকর

সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং একটি শক্তিশালী এবং বিপজ্জনক কৌশল কারণ এটি প্রযুক্তিগত দুর্বলতার পরিবর্তে মানুষের মনস্তত্ত্বকে কাজে লাগায়। সচেতন, সতর্ক এবং সক্রিয় থাকার মাধ্যমে ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান এই প্রতারণামূলক স্কিমের শিকার হওয়ার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে পারে। সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং আক্রমণ থেকে সুরক্ষার জন্য সচেতনতা এবং শিক্ষাই হল সবচেয়ে ভালো প্রতিরক্ষা।

API :

API হল 'অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেস'সহজ ভাষায়, এক অ্যাপ্লিকেশন আরেক অ্যাপ্লিকেশন বা সফ্টওয়্যারের সাথে যোগাযোগ করার জন‍্য কিছু সুনির্দিষ্ট নিয়মনীতি। এই নিয়মনীতির মধ‍্য পড়ে একটি নির্দিষ্ট প্রোটোকল মেনে চলা, কিছু নির্দিষ্ট রুটিন ব‍্যবহার করা ইত‍্যাদি। এই সমন্বিত রুলস, প্রোটোকল এবং টুলস বিভিন্ন সফটওয়্যার অ্যাপ্লিকেশনকে একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে এক্সেস দেয়।

·        প্রোটোকল হল যোগাযোগের নিয়মকানুন। যেমন: HTTP প্রোটোকল

·        রুটিন হল সেই প্রোটোকলে কোন কোন মেথড বা ফাংশন ব‍্যবহার করা যাবে। যেমন: GET, POST ইত‍্যাদি

এই নিয়মনীতিগুলো ঠিক থাকলে কোন সফটওয়‍্যার অভ‍্যন্তরীনভাবে কিভাবে কাজ করে সেটা না জেনেই এক সফ্টওয়্যার আরেক সফ্টওয়্যারের সাথে সহজেই যোগাযোগ করতে পারে। যেমন ধরা যাক একটা ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন হয়তো PHP তে লিখা, কিন্তু সেটা একটা মোবাইল অ‍্যাপ যেটা কিনা Java তে লিখা তার সাথে যোগাযোগ করতে পারে

এপিআই মূলত একটি টুলস যেখানে প্রোগ্রামিং এবং কম্যান্ড ব্যাবহারের মাধ্যমে এক অ্যাপ্লিকেশন আরেকটি অ্যাপ্লিকেশনের সাথে যুক্ত হতে পারে এবং নিজেদের ফিচার একে অপরের সাথে ভাগাভাগি করে নিতে পারে। কম্পিউটার সফটওয়্যার, অ্যাপ্লিকেশন, ওয়েবসাইট, ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন, সার্ভার, ডাটাবেজ ইত্যাদি এপিআইএর মাধ্যমে কানেক্টেড থাকতে পারে। এই কানেকশনের মাধ্যমে সার্ভিসকে আরো উন্নত করা হয় এবং এক জায়গা থেকেই সবকিছু নিয়ন্ত্রন এবং সকল ফিচার প্রদান করতে সাহায্য করে।

IVR:

 IVR (ইন্টারঅ্যাক্টিভ ভয়েস রেসপন্স) হল একটি প্রযুক্তি যা কম্পিউটার সিস্টেমকে মানুষের সাথে ভয়েস বা টাচ-টোন ইনপুটের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে যোগাযোগ করতে সক্ষম করে। সাধারণত কল সেন্টার এবং কাস্টমার সার্ভিসে ব্যবহৃত হয়, IVR সিস্টেম কলারদের প্রি-রেকর্ডেড ভয়েস মেনু দিয়ে স্বাগত জানায় এবং তাদের কথা বলতে বা ফোনের কীপ্যাড ব্যবহার করে প্রতিক্রিয়া জানাতে প্রম্পট করে। ইনপুটের ভিত্তিতে, সিস্টেম তথ্য প্রদান, কল সঠিক বিভাগে রুট করা, বা বিল পেমেন্ট বা অ্যাপয়েন্টমেন্ট শিডিউলের মতো কাজগুলি মানুষের হস্তক্ষেপ ছাড়াই সম্পন্ন করতে পারে। IVR উচ্চ কল ভলিউম পরিচালনা করে, অপেক্ষার সময় কমায় এবং ২৪/৭ পরিষেবা প্রদান করে দক্ষতা উন্নত করে। তবে, জটিল মেনু বা ভয়েস কমান্ডের বোঝার সীমাবদ্ধতার কারণে ব্যবহারকারীদের হতাশ হতে পারে।এ ধরণের সমস্যা এড়াতে এটি সাবধানে ডিজাইন করা আবশ্যক। কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা হলে, IVR ব্যবসায়ের জন্য পরিচালন খরচ কমাতে এবং গ্রাহক অভিজ্ঞতা উন্নত করতে সাহায্য করে।

 

ISO ২৭00 Certification:

ISO ২৭00সার্টিফিকেশন হল ইনফরমেশন সিকিউরিটি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ISMS)-এর জন্য একটি বৈশ্বিকভাবে স্বীকৃত মানদণ্ড, যা ব্যাংকগুলির জন্য সংবেদনশীল গ্রাহক ডেটা, আর্থিক তথ্য এবং অপারেশনাল সিস্টেম সুরক্ষিত করতে অপরিহার্য। এটি সুরক্ষা ঝুঁকি চিহ্নিত করা, মূল্যায়ন করা এবং প্রশমিত করার জন্য একটি কাঠামো প্রদান করে, যা গুরুত্বপূর্ণ ডেটার গোপনীয়তা, অখণ্ডতা এবং প্রাপ্যতা নিশ্চিত করে। ব্যাংকগুলির জন্য ISO ২৭00সার্টিফিকেশন অর্জন করা শক্তিশালী সাইবার নিরাপত্তা অনুশীলন, নিয়ন্ত্রক সম্মতি এবং গ্রাহক আস্থা গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করে। সার্টিফিকেশন প্রক্রিয়ায় কঠোর সুরক্ষা নিয়ন্ত্রণ বাস্তবায়ন, ঝুঁকি মূল্যায়ন, কর্মীদের প্রশিক্ষণ এবং কঠোর অডিট অন্তর্ভুক্ত থাকে। ISO ২৭00গ্রহণের মাধ্যমে, ব্যাংকগুলি তাদের নিরাপত্তা অবস্থান উন্নত করতে, ডেটা ফাঁস হওয়ার ঝুঁকি কমাতে এবং আর্থিক শিল্পে প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা বজায় রাখতে পারে।

 

SWIFT

ব্যাংকিং ক্ষেত্রে, SWIFT (সোসাইটি ফর ওয়ার্ল্ডওয়াইড ইন্টারব্যাঙ্ক ফাইন্যানশিয়াল টেলিকমিউনিকেশন) হল একটি গ্লোবাল মেসেজিং নেটওয়ার্ক যা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে নিরাপদে তথ্য প্রেরণ এবং গ্রহণ করতে সক্ষম করে, যেমন- cross-border পেমেন্ট নির্দেশনা ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত, SWIFT আন্তর্জাতিকভাবে অর্থ স্থানান্তরের জন্য একটি মানসম্মত সিস্টেম সরবরাহ করে, যেখানে ব্যাংকগুলিকে সনাক্ত করতে এবং লেনদেনের সঠিক রাউটিং নিশ্চিত করতে SWIFT কোড বা BIC কোড ব্যবহার করা হয় এটি প্রকৃত অর্থ স্থানান্তর করে না, তবে ব্যাংকগুলির মধ্যে যোগাযোগ সুগম করে, যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, রেমিট্যান্স এবং অন্যান্য আন্তঃসীমান্ত আর্থিক কার্যক্রমের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ SWIFT বিশ্বব্যাপী হাজার হাজার ব্যাংকের কাছে এর নির্ভরযোগ্যতা, নিরাপত্তা এবং দক্ষতার জন্য বিশ্বস্ত, যেখানে এটি প্রতিদিন লক্ষাধিক লেনদেন প্রক্রিয়া করে

 

DNS (Domain Name System)

DNS (Domain Name System) হল একটি সিস্টেম যা মানুষের পাঠযোগ্য ডোমেইন নাম (যেমন www.example.com) কে মেশিন-পাঠযোগ্য আইপি ঠিকানায় (যেমন- ১৯২.0..) রূপান্তর করে। এটি ইন্টারনেটের একটি মৌলিক অংশ, যা ব্যবহারকারীদের ওয়েবসাইট বা অন্যান্য নেটওয়ার্ক পরিষেবা অ্যাক্সেস করতে সাহায্য করেDNS সার্ভারগুলি ডোমেইন নামের অনুরোধগুলি গ্রহণ করে এবং সংশ্লিষ্ট আইপি ঠিকানা সনাক্ত করে, যাতে ব্রাউজার বা অন্যান্য অ্যাপ্লিকেশনগুলি সঠিক সার্ভারের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে পারে।

 

DNS একটি বিতরণকৃত ডাটাবেস সিস্টেম হিসাবে কাজ করে, যেখানে ডোমেইন নামগুলি একটি শ্রেণিবদ্ধ এবং সংগঠিত উপায়ে পরিচালিত হয়। এটি ব্যবহারকারীদের জটিল আইপি ঠিকানা মনে রাখার প্রয়োজনীয়তা দূর করে এবং ওয়েব ব্রাউজিংকে সহজ এবং আরও ব্যবহারকারী-বান্ধব করে তোলে। DNS ছাড়া, ইন্টারনেট ব্যবহার করা অনেক বেশি জটিল এবং অকার্যকর হতো।

 ISMS (ISMS):

ISMS হল Information Security Management System বা তথ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি ISMS একটি সংগঠনের সংবেদনশীল তথ্য সুরক্ষিত রাখা এবং পরিচালনা করার জন্য একটি কাঠামোগত পদ্ধতি, যা মানুষ, প্রক্রিয়া এবং প্রযুক্তিকে সমন্বিত করে। এটি তথ্য সুরক্ষা নীতি, পদ্ধতি এবং নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা, বাস্তবায়ন, রক্ষণাবেক্ষণ এবং ক্রমাগত উন্নত করার মাধ্যমে তথ্যের গোপনীয়তা, অখণ্ডতা এবং প্রাপ্যতা নিশ্চিত করে। ISMS প্রায়শই ISO/IEC ২৭00১ এর মতো আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যা তথ্য সুরক্ষা ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং আইনি, নিয়ন্ত্রক এবং চুক্তিবদ্ধ শর্তসমূহ পূরণের জন্য একটি পদ্ধতিগত কৌশল প্রদান করে। ISMS গ্রহণের মাধ্যমে, সংস্থাগুলি সুরক্ষা সচেতনতা এবং স্থিতিস্থাপকতা গড়ে তুলতে ঝুঁকি সনাক্তকরণ, মূল্যায়ন এবং প্রশমনের জন্য একটি পদ্ধতিগত পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারে।

 ডেটা ওয়্যারহাউস (Data Warehouse)

ডেটা ওয়্যারহাউস হলো ডেটা রিপোর্টিং এবং ডেটা বিশ্লেষণ ব্যবস্থা, যা ব্যবসায়িক বুদ্ধিমত্তার (Business Intelligence) একটি মৌলিক উপাদান হিসেবে বিবেচিত। এটি এক বা একাধিক উৎস থেকে সমন্বিত ডেটার একটি কেন্দ্রীয় ভান্ডার হিসেবে কাজ করে। উদাহরণস্বরূপ, একটি ব্যাংকের বিভিন্ন রকম ডেটাবেস থাকতে পারে যেমন- কোর ব্যাংকিং ডেটা, রিটেইল লোন ডেটা, এসএমই ঋণের ডেটা, ক্রেডিট কার্ড ডেটা, এমএফএস ডেটা, ই-কমার্স ডেটা এবং এজেন্ট ব্যাংকিং ডেটা। একটি ডেটা ওয়্যারহাউস এই সমস্ত ডেটাকে একত্রিত করে এবং গ্রাহক নম্বর, মোবাইল নম্বর বা এনআইডি নম্বরের মতো কিছু শনাক্তকারী কী ব্যবহার করে সেগুলো সাজিয়ে রাখে।  

info and Communication Tech. part-1
 Info & Comm. Techno- আরো পড়ুন
 এই সিস্টেমের মাধ্যমে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং ব্যাংক কর্মকর্তাদের কাছে রিপোর্ট আকারে জমা দেওয়া হয়। বিশ্লেষণ বা রিপোর্টের সাহায্যে ব্যাংকগুলি তাদের গ্রাহকদের ভাগ করতে পারে, যা লাভজনকতা বাড়াতে এবং নতুন গ্রাহক আকর্ষণে সফল হতে সহায়তা করে। ব্যাংকগুলির জন্য, ডেটা ওয়্যারহাউস পরিষেবাগুলি অনেক প্রশ্নের উত্তর দেয়।

সুতরাং সংক্ষেপে বলতে গেলে ডেটা ওয়্যারহাউস হলো এমন একটি সরঞ্জাম যা ব্যাংকগুলি তাদের গ্রাহকদের চাহিদা ভালোভাবে বোঝার এবং তা আরও গভীরভাবে বিশ্লেষণ করার জন্য ব্যবহার করে।


0 Comments

Banking Pro Study ...