TRADE FINANCE & FOREIGN EXCHANGE

 TRADE FINANCE & FOREIGN EXCHANGE

 Bangla short Preparations according to IBB Reading Materials  

বাণিজ্যে অর্থায়ন ও বৈদেশিক বিনিময় 


গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নসমূহ

আন্তর্জাতিক বাণিজ্য:
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য হলো দুটি দেশের মধ্যে বাণিজ্য, যেখানে ব্যবসায়ীরা তাদের নিজ নিজ দেশের প্রতিনিধিত্ব করে। এটি এমন একটি ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে দেশগুলো তাদের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে, স্থানীয়ভাবে অনুপলব্ধ সম্পদ সংগ্রহ করতে বা বাজার সম্প্রসারণের জন্য পণ্য বা পরিষেবা বিনিময় করে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংগঠিত হয় কারণ কোনো নির্দিষ্ট দেশে উৎপাদিত পণ্য বা পরিষেবা অন্য দেশের ব্যক্তি, ব্যবসা বা সরকার কিনতে চায়। বাণিজ্য মানুষকে প্রায়শই দেশের তুলনায় কম খরচে বিভিন্ন ধরনের পণ্য ও পরিষেবা বেছে নেওয়ার সুযোগ দেয়। দেশগুলো এমন পণ্য বা পরিষেবা পেতে একে অপরের সাথে বাণিজ্য করে, যা উচ্চ মানের, কম দামের বা দেশে উৎপাদিত পণ্যের তুলনায় ভিন্ন। যে পণ্য ও পরিষেবা একটি দেশ অন্য দেশ থেকে কেনে, তাকে আমদানি বলে, আর যেগুলো অন্য দেশে বিক্রি করে, তাকে রপ্তানি বলে। আমদানিকারক এবং রপ্তানিকারক আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মূল পক্ষ। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে রপ্তানিকারকের (বিক্রেতা) দায়িত্ব হলো পণ্য পাঠানো বা সরবরাহ করা, আর আমদানিকারকের দায়িত্ব হলো অর্থ প্রদান করা।

আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মূল পক্ষ (Core Parties in International Trade):
১. রপ্তানিকারক:     ২. আমদানিকারক:     ৩. সরকার:     ৪. মালবাহী ফরওয়ার্ডার/লজিস্টিক প্রদানকারী:                 ৫. ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান:     ৬. শুল্ক কর্তৃপক্ষ: এই পক্ষগুলো বিশ্ববাজারে পণ্য, পরিষেবা এবং অর্থপ্রদানের মসৃণ প্রবাহ নিশ্চিত করতে একত্রে কাজ করে।

আমদানি রপ্তানি কার্যক্রমে লেনদেন নিষ্পত্তির বিভিন্ন পদ্ধতি:
১. ঋণপত্র (Letter of Credit - LC):
ঋণপত্র একটি আর্থিক দলিল বা ব্যাংকের নিশ্চয়তা পদ্ধতি, যেখানে আমদানিকারকের ব্যাংক রপ্তানিকারককে নির্দিষ্ট শর্ত পূরণের পর পেমেন্টের নিশ্চয়তা দেয়। ঋণপত্রে পণ্যের গুণগত মান, পরিমাণ, শিপিং সময়সীমা ইত্যাদি শর্ত উল্লেখ থাকে। রপ্তানিকারক নথিপত্র (যেমন বিল অব লেডিং, ইনভয়েস) জমা দিলে ব্যাংক পেমেন্ট করে।আমদানিকারকের ব্যাংক রপ্তানিকারকের পক্ষে ঋণপত্র ইস্যু করে। এতে উল্লেখ থাকে যে, রপ্তানিকারক নির্দিষ্ট দলিল যেমন বিল অব লেডিং, ইনভয়েস, প্যাকিং লিস্ট ইত্যাদি সরবরাহ করলে ব্যাংক অর্থ প্রদান করবে। এই পদ্ধতিতে ব্যাংকগুলো মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করে এবং অর্থ পরিশোধ নিশ্চিত করে।
প্রক্রিয়া: 1. আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকের মধ্যে চুক্তি হয়।
2. আমদানিকারক তার ব্যাংকে গিয়ে LC ইস্যু করে।
3. সেই LC রপ্তানিকারকের ব্যাংকে পাঠানো হয়।
4. রপ্তানিকারক পণ্য রপ্তানি করে এবং প্রয়োজনীয় দলিল প্রস্তুত করে ব্যাংকে জমা দেয়।
5. ব্যাংক দলিল যাচাই করে এবং অর্থ প্রদান করে।

২. খোলা হিসাব বা বিক্রয় চুক্তি (Open Account / Sales Contract)

এই পদ্ধতিতে পণ্য সরবরাহ ও অর্থ পরিশোধ একটি পূর্ব-নির্ধারিত চুক্তির ভিত্তিতে সম্পন্ন হয়। এখানে ব্যাংকের সক্রিয় ভূমিকা থাকে না। রপ্তানিকারক নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পণ্য সরবরাহ করে এবং আমদানিকারক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মূল্য পরিশোধ করে।
প্রক্রিয়া: 1. দুই পক্ষের মধ্যে বিক্রয়চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
2. রপ্তানিকারক নির্ধারিত পণ্য সরবরাহ করে।
3. চুক্তি অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের (যেমন: ৩০, ৬০ বা ৯০ দিন) মধ্যে আমদানিকারক অর্থ প্রদান করে।

৩. অগ্রিম পরিশোধ (Advance Payment)
এই পদ্ধতিতে আমদানিকারক চুক্তির আগে বা পণ্য প্রাপ্তির আগেই রপ্তানিকারককে সম্পূর্ণ বা আংশিক অর্থ পরিশোধ করে। অর্থ প্রাপ্তির পর রপ্তানিকারক পণ্য প্রেরণ করে।
প্রক্রিয়া:
1. আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকের মধ্যে চুক্তি হয়।
2. আমদানিকারক পূর্বে নির্ধারিত অর্থ রপ্তানিকারকের ব্যাংক হিসাবে প্রেরণ করে।
3. অর্থ পাওয়ার পর রপ্তানিকারক পণ্য রপ্তানি করে।
এই তিনটি পদ্ধতির মধ্যে পার্থক্য মূলত টাকার লেনদেনের সময় এবং মাধ্যম (ব্যাংক বা সরাসরি) নির্ভর করে। এগুলো আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সাধারণত অনুসৃত এবং স্বীকৃত পদ্ধতি। 

 

 

 

---------------------------------------------

ক্রয়/বিক্রয় চুক্তির মূল উপাদান (Main Components of a Purchase/Sale Contracts):

ক্রয়/বিক্রয় চুক্তি হলো রপ্তানিকারক ও আমদানিকারকের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি। যদিও কিছু সাধারণ বিষয়বস্তু একটি ক্রয়/বিক্রয় চুক্তিতে প্রত্যাশিত থাকে, তবুও এতে কোনো সন্দেহ নেই যে ক্রয়/বিক্রয় চুক্তির শর্তাবলি বিভিন্ন পণ্য, পরিশোধ পদ্ধতি কিংবা আমদানির উৎসভেদে পরিবর্তিত হতে পারে। নগদ অগ্রিম (Cash in Advance), উন্মুক্ত হিসাব (Open Account) এবং ডকুমেন্টারি কালেকশন (Documentary Collection) — এই তিন ধরনের পরিশোধ পদ্ধতির ক্ষেত্রে ক্রয়/বিক্রয় চুক্তি হলো দিকনির্দেশক দলিল।

ক্রয়/বিক্রয় চুক্তির প্রধান উপাদানসমূহ:

  • বিক্রেতা ও ক্রেতার এজেন্টদের নাম ও ঠিকানা

  • সরবরাহের শর্তাবলি (Incoterms)

  • ব্যাংকের ঠিকানা ও SWIFT কোডসহ তথ্য

  • চুক্তিমূল্য (মুদ্রা)

  • বিরোধ নিষ্পত্তি (Arbitration or Litigation)

  • পণ্যের বিবরণ

  • অর্থপ্রদানের পদ্ধতি

  • পণ্যের অসঙ্গতির দায়

  • প্রয়োজনীয় নথিপত্র

  • প্রযোজ্য আইন (জাতীয় আইন বা CISG)

  • বিলম্বজনিত দায়

৳ আন্তর্জাতিক ব্যাংক গ্যারান্টির প্রয়োজনীয়তা (Uses of International Bank Guarantee)

১. আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সহজতর করা:    ২. চুক্তি সম্পাদন:

৩. দরপত্রের নিরাপত্তা:                ৪. অগ্রিম পেমেন্ট সুরক্ষা:

৫. ঋণপ্রাপ্তির যোগ্যতা বৃদ্ধি:        ৬. শুল্ক ও কর সংক্রান্ত সম্মতি:

৭. ঝুঁকি হ্রাস:                            ৮. প্রকল্প অর্থায়ন সমর্ঠন:

৳ প্রত্যক্ষ ব্যাংক গ্যারান্টি এবং পরোক্ষ ব্যাংক গ্যারান্টির মধ্যে পার্থক্য (Direct Bank Guarantee vs. Indirect Bank Guarantee.)

বিষয়

প্রত্যক্ষ ব্যাংক গ্যারান্টি

পরোক্ষ ব্যাংক গ্যারান্টি

সংজ্ঞা

আবেদনকারীর ব্যাংক সরাসরি সুবিধাভোগীর কাছে জারি করে।

আবেদনকারীর ব্যাংকের পক্ষে মধ্যস্থ ব্যাংক জারি করে।

সম্পৃক্ত পক্ষ

আবেদনকারী, জারিকারী ব্যাংক, সুবিধাভোগী।

আবেদনকারী, জারিকারী ব্যাংক, মধ্যস্থ ব্যাংক, সুবিধাভোগী।

প্রক্রিয়া

সরাসরি জারি, কোনো মধ্যস্থ নেই।

সুবিধাভোগীর দেশে দ্বিতীয় ব্যাংক জড়িত।

আস্থা ও এখতিয়ার

আবেদনকারীর ব্যাংকের সুনামের উপর নির্ভর করে।

সুবিধাভোগী স্থানীয় বা পরিচিত ব্যাংকের উপর ভরসা করে।

খরচ

কম ব্যাংক জড়িত থাকায় কম খরচ।

দুই ব্যাংকের ফির কারণে বেশি খরচ।

গতি

সরাসরি যোগাযোগের কারণে দ্রুত।

ব্যাংকগুলোর সমন্বয়ের কারণে ধীর।

ব্যবহারের ক্ষেত্র

দেশীয় বা বিশ্বস্ত আন্তর্জাতিক লেনদেনে সাধারণ।

অপরিচিত ব্যাংক বা এখতিয়ারে আন্তর্জাতিক লেনদেনে।

সুবিধাভোগীর ঝুঁকি

জারিকারী ব্যাংক কম সুনামধন্য হলে ঝুঁকি বেশি।

স্থানীয় ব্যাংক জড়িত থাকায় ঝুঁকি কম।

ফ্যাক্টরিং কী? ফ্যাক্টরিং এবং ফরফিটিংয়ের মধ্যে পার্থক্য (Factoring vs. Forfeiting)

ফ্যাক্টরিং হলো একটি আর্থিক লেনদেন যেখানে একটি ব্যবসায় তার প্রাপ্য হিসাব (ইনভয়েস) একটি তৃতীয় পক্ষের কাছে, যিনি ফ্যাক্টর নামে পরিচিত, ছাড়ে বিক্রি করে। ফ্যাক্টর ব্যবসায়কে তাৎক্ষণিক নগদ প্রদান করে, যা তার তারল্য উন্নত করে, এবং পরে ইনভয়েসের পূর্ণ পরিমাণ ঋণগ্রহীতা (ব্যবসায়ের গ্রাহক) থেকে সংগ্রহ করে যখন ইনভয়েসের মেয়াদ শেষ হয়।

ফরফেইটিং হলো বাণিজ্য অর্থায়নের একটি রূপ যেখানে একটি ব্যবসায় তার মধ্যম থেকে দীর্ঘমেয়াদী প্রাপ্য হিসাব, সাধারণত আন্তর্জাতিক বাণিজ্য থেকে উদ্ভূত, একটি ফরফেইটারের (একটি বিশেষায়িত আর্থিক প্রতিষ্ঠান) কাছে ছাড়ে বিক্রি করে। প্রাপ্য হিসাবগুলো সাধারণত বিল অফ এক্সচেঞ্জ বা প্রমিসরি নোটের মতো বিনিময়যোগ্য দলিল দ্বারা সমর্থিত হয় এবং লেনদেনটি সাধারণত নন-রিকোর্স হয়।

দিক

ফ্যাক্টরিং

ফরফিটিং

প্রাপ্য হিসাবের ধরন

স্বল্পমেয়াদী (৩০-৯০ দিন)

মধ্যম থেকে দীর্ঘমেয়াদী (৬ মাস-বছর)

রিকোর্স

রিকোর্স বা নন-রিকোর্স হতে পারে

সর্বদা নন-রিকোর্স

পরিধি

দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য

প্রাথমিকভাবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য

দলিল

ইনভয়েস

বিল অফ এক্সচেঞ্জ, প্রমিসরি নোট

ঝুঁকি

বিক্রেতা ঝুঁকি বহন করতে পারে (রিকোর্স ফ্যাক্টরিং)

ফরফেইটার সমস্ত ঝুঁকি গ্রহণ করে

মেয়াদ

স্বল্পমেয়াদী অর্থায়ন

মধ্যম থেকে দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়ন

উদ্দেশ্য

SMEs-এর জন্য নগদ প্রবাহ ব্যবস্থাপনা

বড় আন্তর্জাতিক বাণিজ্য লেনদেন অর্থায়ন

খরচ

সাধারণত কম ফি

দীর্ঘ মেয়াদ এবং ঝুঁকির কারণে বেশি খরচ

ঋণগ্রহীতা

একাধিক গ্রাহক, দেশীয় বা বিদেশী

সাধারণত একক বিদেশী ক্রেতা

গ্যারান্টি

সবসময় প্রয়োজন হয় না

প্রায়শই ব্যাংক বা সরকারি গ্যারান্টি দ্বারা সমর্থিত

 


0 Comments

Banking Pro Study ...